ঋণ নিয়ে ওরা আজ ফেরারী
লিখেছেন: ' মুসাফির' @ মঙ্গলবার, মার্চ ৮, ২০১১ (১২:০৩ অপরাহ্ণ)
শিরোনামটি বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত একটি দৈনিক পত্রিকা “বাংলাদেশ প্রতিদিন” এর ৮,৩,২০১১ এর শিরোনাম। নোবেল জয়ী ড: ইউনুসের সূদের কারবার বাংলাদেশের দরিদ্র জনগণকে কি অবস্থায় ফেলেছে তার সামান্য চিত্র প্রতিবেদকের প্রতিবেদনে ফুটে উঠেছে। উক্ত প্রতিবেদনে যদিও মাত্র কিছু সংখক মানুষের কথা উল্লেখ করা হয়েছে নির্দিষ্ট একটি এলাকার। বাস্তব কথা হল ড: ইউনুছের গ্রামীণ ব্যাংক সারা বাংলাদেশেই দরিদ্র জনগণকে শোষণ করেছে। যা আমরা বিভিন্ন গণমাধ্যম ও নিজেদের বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে জানতে পেরেছি। একবার আমার এক সিনিয়র ভাই গ্রামীণ ব্যাংক এর সূদ সম্পর্কে বলেছিলেন “তারা দরিদ্র জনগণের নিকট থেকে কত% সূদ নেয় নিজেরাও জানেনা” তখন আমি কথাটা ভালকরে বুঝিনি কিন্ত এখন কিছুটা.. বুঝতে পারছি। গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণ দেয়ার পদ্ধতি হল একজন গ্রাহককে ঋণ দেয়ার পর পরবর্তী সপ্তাহ থেকে তার নিকট খেকে কিস্তি হিসেবে ঋণ পরিশোধ করা শুরু করে। যেমন একজন গ্রাহককে ১০০০০ (দশ হাজার) টাকা ঋণ দেয়া হল পরের সপ্তাহে তার কাছ থেকে ২০০ (দুই শত) টাকা কিস্তি হিসেবে নিল। এক্ষেত্রে যদি ঐ মহল্লায় তাদের ৫০ জন গ্রাহক হয় তাহলে পরের সপ্তাহে গ্রাহকদের থেকে ১০০০০ (দশ হাজার) টাকা কিস্তি নিয়ে নতুন আর একজন গ্রাহককে ঋণ দিতে পারবে। এই হিসেবে সারা বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম চলে আসছে। পাঠক বৃন্দ তাহলে আপনাদের বুঝার বাকি থাকার কথা নয় যে গ্রামীণ ব্যাংক বাংলাদেশের দরিদ্র জনগণের নিকট থেকে কত% সূদ নিচ্ছে।
নিম্নে পত্রিকার প্রতিবেদনটি তুলে ধরা হল।
স্বপ্নগুলো এখন দুঃস্বপ্ন হয়ে তাড়া করে ফেরে ওদের। ভিটেমাটি, সহায়-সম্বল হারিয়ে ওরা এখন যাযাবর। ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে বছরের পর বছর পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। ছেলেমেয়েদের দেখতে পারছেন না চোখের দেখাটাও। ঋণ নিয়ে তারা আজ ‘ফেরারি’। সংখ্যায় এরা এক-দুজন নন, অনেক। এ তো একটি শ্রেণীর কথা। আবার, কথা ছিল ঋণগ্রহীতারাও পাবেন লাভের অংশ। লাভ তো দূরের কথা, আজও কারও ভাগ্যে জোটেনি শেয়ার কেনার আসল টাকা। এভাবেই তাদের শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে ব্যবসা চালানো হয়েছে দিনের পর দিন। এখানেই শেষ নয়, ‘সঞ্চয় প্রকল্পের’ আয়ের টাকা দিয়ে ব্যাংকের তহবিল বাড়ানো হলেও, যারা খেয়ে না খেয়ে সঞ্চয় করেছিলেন, তাদের অধিকাংশই পাননি সঞ্চয়ের কানাকড়ি। উলি্লখিত সবগুলো ঘটনাই গ্রামীণ ব্যাংককে ঘিরে।
গ্রামীণ ব্যাংকের শুরুর দিকের সদস্য ফতেপুর গ্রামের ছকিনা খাতুন। স্বামী মারা যাওয়ায় পর স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য ব্যাংকের জোবরা কেন্দ থেকে ঋণ নেন। ঋণের টাকা দিয়ে ছেলেকে কিনে দেন রিকশা। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে ঋণের পরিধি। বাড়তে থাকে সাপ্তাহিক কিস্তির পরিমাণ। ঋণ শোধ করতে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে দাদনে টাকা নেন। দাদনের টাকা শোধ করতে জড়িয়ে পড়েন আরও ঋণের বেড়াজালে। গ্রামীণ ব্যাংক ও অন্যান্য ঋণ শোধ করতে না পারায় এক বছর ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি।
একই এলাকার আরেক সদস্য রহিমা খাতুন সাপ্তাহিক ঋণ পরিশোধ করতে না পেরে চার বছর ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। পালিয়ে যাওয়ার পর গ্রামীণ ব্যাংকের পর্যায়ের কর্মীরা তার ঘরের তালা ভেঙে হাঁড়ি-পাতিল থেকে সবকিছুই নিয়ে যান। শুধু ছকিনা আর রহিমা নন, একই পরিণতি বরণ করতে হয়েছে জুলেখা, হাসিনা, শানু বেগমসহ অনেকের।
ঋণগ্রহীতাদের টাকায় ব্যবসা : দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে ঋণগ্রহীতাদের শেয়ারের কয়েক শ কোটি টাকা নয়-ছয় করে ব্যবসা চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে গ্রামীণ ব্যাংকের বিরুদ্ধে। ঋণগ্রহীতারাও লভ্যাংশ পাবেন, এমন কথা থাকলেও লাভ তো দূরের কথা, আজও কেউ ফেরত পাননি শেয়ার কেনার আসল টাকা। এভাবেই গ্রাহকের শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে ব্যবসা চালিয়ে আসছে গ্রামীণ ব্যাংক। ব্যাংকটির প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহম্মদ ইউনূস নরওয়ের রাজধানী অসলোতে নোবেল পুরস্কার গ্রহণের সময় উপস্থাপিত বক্তব্যে বলেছিলেন, ‘ঋণগ্রহীতারা নিজের টাকা দিয়ে গ্রামীণ ব্যাংকের শেয়ার কিনেছেন। শেয়ার কিনে এখন সুফল ভোগ করছেন গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্যরা।’ কিন্তু একাধিক ঋণগ্রহীতার সঙ্গে কথা বললে বেরিয়ে আসে ‘সুফল’ পাওয়ার করুণ কাহিনী। ব্যাংকটির কার্যক্রম শুরুর এক-দেড় বছর পর জোবরার প্রথম মহিলা কেন্দ্রে ঋণগ্রহীতা ছিলেন ৪০ জন। তখন ঋণগ্রহীতাদের গ্রামীণ ব্যাংকের শেয়ার কেনার অফার দেওয়া হয়। শেয়ার কী তা ঋণগ্রহীতারা বুঝতে পারেন না। মাঠকর্মী বুঝিয়ে বললেন, ১০০ টাকা দিয়ে শেয়ার কিনলে তারাও হবেন গ্রামীণ ব্যাংকের মালিকানার অংশ। শেয়ারের ওই টাকা দিয়ে ব্যাংক ব্যবসা করে যে লাভ করবে, তারাও পাবেন এর অংশ। গ্রামীণ ব্যাংকের এই প্রলোভনে জোবরা কেন্দে র প্রত্যেক সদস্যই কিনে নিলেন শেয়ার। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, দীর্ঘ ২৮ বছর পরও কেউ পাননি শেয়ারের আসল বা লাভের কানাকড়ি।
এমনই এক গ্রাহক লায়লা খাতুন বললেন, ‘অনেক স্বপ্ন দেখিয়ে শেয়ার কিনতে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন গ্রামীণ ব্যাংকের মাঠকর্মী ও কর্মকর্তারা। দেখিয়েছিলেন ভাগ্য বদলের আকাশছোঁয়া স্বপ্ন। ভাগ্য বদল হয়েছে ঠিকই। তবে আমাদের না_ব্যাংকের।’
প্রাথমিক পর্যায়ের আরেক সদস্য লায়লা খাতুন বলেন, ‘আমি টানা বাইশ বছর গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্য ছিলাম। অনেক কষ্ট করে এক টাকা, দু্ই টাকা, পাঁচ টাকা করে প্রতি সপ্তাহে সঞ্চয় করেছি। কিন্তু ঋণ নেওয়া বন্ধ করে দেওয়ার পর ব্যাংক ১২ বছরের সঞ্চয়ের টাকা ফেরত দেয়নি।
ভুক্তভোগী মহল মনে করে, গ্রামীণ ব্যাংক বিষয়ে সরকার আরও আগে সচেতন হলে এই হাজার হাজার দরিদ্র মানুষের এমন দশা হতো না। আর এখন যেহেতু থলের বেড়াল বেরিয়ে আসছে, তাই সবকিছুরই তদন্ত হওয়া উচিত।
সূদকে মহান আল্লাহ হারাম করেছেন। এই হারাম কাজের মাধ্যমে কিভাবে দরিদ্র জনগোষ্ঠিকে শান্তি দেয়া সম্ভব? যে হীন প্রচেষ্টাটি ড. ইউনুছের সপ্ন
@humaid, সহমত ।
@এম এম নুর হোসেন, আপনাদেরকে ধন্যবাদ।
ড, ইউনিসের গ্রামীন ব্যাংকসহ সকল সূদভিত্তিক ব্যাবস্থাকেই চার্চ করা উচিত। শুধু গ্রামীন ব্যাংকই যে সূদি কারবার করছে তা নয়, কিন্তু তারা গ্রামীন পর্যায়ে করার কারনে সমাজের একেবারেই দূর্বল মানুষগুলোর উপর এই স্টীম ঠেকেছে।
আল্লাহর ইরশাদ হচ্ছে و ذرو ما بقي من الربو সূদের বাকী অংশটি তোমরা মওকুফ করো। এইলোকটা হয়তো গ্রামীন ব্যাংক থেকে সড়ে যাবে কিন্তু বিশাল সূদের চক্রহার থেকে কি এদেশের লোকেরা মুক্তি পাবে?
@আল মুরতাহিল, এইলোকটা হয়তো গ্রামীন ব্যাংক থেকে সড়ে যাবে কিন্তু বিশাল সূদের চক্রহার থেকে কি এদেশের লোকেরা মুক্তি পাবে? সহমত। আপনাকে ধন্যবাদ।
@আল মুরতাহিল,