আল্লাহ্ সংক্রান্ত সঠিক বিশ্বাস (বা আক্বীদাহ্)-২
লিখেছেন: ' মুসলিম৫৫' @ শনিবার, নভেম্বর ৭, ২০০৯ (১১:২২ অপরাহ্ণ)
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ
السلام عليكم ورحمة الله و بركاته
এর আগের লেখায় আমরা ইমাম তাহাভীর (রহ.) “আল আক্বীদাহ্ আল তাহাভীয়াহ্” থেকে প্রথম ১৩টি পয়েন্ট তুলে দিয়েছিলাম। আপনাদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি যে, “আল আক্বীদাহ্ আল তাহাভীয়াহ্” নামক কাজে, ১০৫ টি পয়েন্টের আকারে, আহলে সুন্নাহ্ ওয়া আল জামা’আহর আক্বীদাহ্ বা ধর্মবিশ্বাস সমূহ লিপিবদ্ধ করা হয়েছে – যার ভিতর প্রথম ২৮টি হচ্ছে purely আল্লাহকে নিয়ে। এর পরেরগুলোতেও আল্লাহর বিভিন্ন গুণাগুণের কথা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে, তাই সেগুলো পড়া/জানাও জরুরী। তবে প্রথমে আমরা এই ২৮টি সম্বন্ধে আপনাদের অবহিত করবো ইনশা’আল্লাহ্। ২৮টির বাকী পয়েন্টগুলো হচ্ছে:
১৪)শুধুমাত্র সৃষ্টি করার পরই যে তাঁকে “সৃষ্টিকর্তা” বলা যাবে তা নয়, বা এটাও নয় যে, তিনি সবকিছুর সূচনা করেন বলে তাঁকে সূচনাকারী বলা হয়।
১৫)যখন কোন কিছুর রব হওয়ার ছিল না তখনও তিনি রব ছিলেন, আর যখন কোন সৃষ্টি ছিল না তখনও তিনি সৃষ্টিকর্তা ছিলেন।
১৬)একইভাবে তিনি “মৃতকে জীবনদানকারী” – প্রথম তাদের জীবন দানের পর এবং তাদেরকে জীবনদানের পূর্বেও [তিনি তাই ছিলেন]। তাই সৃষ্টির পূর্বেও তিনি “সৃষ্টিকর্তা” নামের অধিকারী।
১৭)এটা এজন্য যে তাঁর সবকিছু করার ক্ষমতা আছে, প্রতিটি জিনিস তাঁর উপর নির্ভরশীল; সবকিছু তাঁর জন্য করা সহজ, এবং তাঁর কোন কিছুর প্রয়োজন নেই, “তাঁর মত কিছুই নেই এবং তিনি সবকিছু শোনেন সবকিছু দেখেন।” (সূরা শুরা, ৪২:১১)
১৮)তিনি তাঁর জ্ঞানের দ্বারা সৃষ্টি করেছেন।
১৯)তিনি সৃষ্টবস্তুর ভাগ্য নির্ধারণ করেছেন।
২০)তিনি তাদেরকে নির্দিষ্ট জীবনকাল দিয়েছেন।
২১)তাদেরকে সৃষ্টির পূর্বে কিছুই তাঁর কাছে গোপন ছিলনা, এবং সৃষ্টির পূর্বেই তিনি জানতেন তারা কি করবে।
২২)তিনি তাদেরকে আদেশ করেছেন তাঁকে মেনে চলতে এবং নিষেধ করেছেন তাঁকে অমান্য করতে।
২৩)তাঁর হুকুম ও ইচ্ছা অনুসারে সবকিছু হয়, এবং তাঁর ইচ্ছাই পালিত হয়। মানুষের সেই ইচ্ছাই হয়ে থাকে যা তিনি তাদের জন্য ইচ্ছা করেন। তিনি তাদের জন্য যা চান তাই ঘটে এবং যা তিনি চান না তা ঘটে না।
২৪)তাঁর বদান্যতা দ্বারা তিনি যাকে ইচ্ছা হিদায়াত দেন, এবং হেফাজত করেন, এবং ক্ষতি থেকে নিরাপদ রাখেন; এবং তাঁর ন্যায় বিচার থেকে তিনি যাকে খুশী বিপথগামী করেন, এবং তাদেরকে লাঞ্ছিত করেন, এবং কষ্ট দেন।
২৫)প্রত্যেকেই তাঁর ইচ্ছার বশবর্তী/অধীন – হয় তাঁর বদান্যতার অথবা তাঁর ন্যয় বিচারের।
২৬)এ থেকে তিনি মুক্ত যে, কেউ তাঁর বিপরীত লিঙ্গ অথবা সমান হবে।
২৭)কেউ তাঁর সিদ্ধান্ত টলাতে পারে না, বা তাঁর আদেশের অন্যথা করতে পারে না বা তাঁর ক্ষমতার উপর বিজয়ী হতে পারে না।
২৮)আমরা এ সমস্তই বিশ্বাস করি এবং নিশ্চিত যে সবকিছুই তাঁর কাছ থেকে আসে।
আপনাদের কারো কারো মনে হতেই পারে যে, লোকটা কি সব শুকনো জিনিস আমাদের গিলাতে চাচ্ছে – কিন্তু আমি দু’টো কারণে এতসব আপনাদের জানাতে চেষ্টা করলাম:
ক) আমি যে আরেকদিন বেঁচে থাকবো এবং সেই “আরেকদিন” মুসলিম জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারগুলো আপনাদের জানাতে পারবো সে সম্বন্ধে আমি নিশ্চিত নই। সুতরাং যখনই সুযোগ পাওয়া যায়, তখনই একজন মুসলিমের উচিত অপর জনকে জরুরী বিষয়গুলো জানান দেয়া।
খ)এই ব্যাপারগুলো আমিও একদিন প্রথম হয়তো হাই তুলতে তুলতেই শুনেছিলাম, অথচ, এই জ্ঞানই আমার জীবনে অগ্রাধিকার ঠিক করার ব্যাপরে একটা বিশাল পরির্তন নিয়ে আসে- আলহামদুলিল্লাহ্! আমি আশা করবো এভাবেই হয়তো যারা এই লেখায় চোখ বুলাবেন, তাদের জীবনেও কখনো একটা পরিবর্তন আসবে ইনশা’আল্লাহ্! আমীন!!
ফি আমানিল্লাহ্।
আপনি নিশংকোচে আলাপ চালিয়ে যান , আমার কাছে অন্তত প্রয়োজনীয় মনে হচ্ছে ।
ক) আমি যে আরেকদিন বেঁচে থাকবো এবং সেই “আরেকদিন” মুসলিম জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারগুলো আপনাদের জানাতে পারবো সে সম্বন্ধে আমি নিশ্চিত নই। সুতরাং যখনই সুযোগ পাওয়া যায়, তখনই একজন মুসলিমের উচিত অপর জনকে জরুরী বিষয়গুলো জানান দেয়া।
সহমত ।