বিশ্বের শ্রেষ্ঠতম বক্তৃতার একটি
লিখেছেন: ' মুসলিম৫৫' @ মঙ্গলবার, জুলাই ৪, ২০১৭ (৯:৪৫ অপরাহ্ণ)
ব্লগিং প্রায় ছেড়েই দিয়েছি অনেকদিন। কেন? এই প্রশ্নের সবচেয়ে সৎ ও সংক্ষিপ্ত উত্তর হবে: “ভালো লাগে না!”। তবু, সময় পেলে কখনো সখনো আগে যে ব্লগগুলোতে লিখতাম, সেগুলোতে একটা “চক্কর” দিয়ে যাই। আজ সেভাবেই একটা ব্লগে “চক্কর” দিতে গিয়ে একটা লেখা চোখে পড়লো: Best Speech Ever । লেখক যা বলতে চেয়েছেন, তা তার একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু এরকম একটা শিরোনাম দেখলে অনেকেই হয়তো আশা করবেন যে, ইতিহাসের পাতার শীর্ষে যাঁরা স্থান করে নিয়েছেন, তাদের কারো কোন বক্তৃতা হয়তো থাকবে ঐ লেখায়। তবে পড়তে গিয়ে দেখা যাবে একটা “চুটকি” বা “জোক” রয়েছে সেখানে। আবারও,.. লেখকের ব্যক্তিগত পছন্দ নিয়ে আমার কোন মন্তব্য নেই। তবে শিরোনামের শুরুতে একটা “The” বসতে পারতো – তাতে হয়তো শিরোনামটা আরো সুন্দর হতো – ব্যস এটুকুই বলার ছিল/আছে।
আমি বিশ্বাসী মুসলিম। মুসলিম হিসাবে আমি বিশ্বাস করি – নিরঙ্কুশভাবে The Best Speech Ever হচ্ছে আল্লাহর Speech বা কথা – যা কিনা আমাদের কাছে এসেছে কুর’আন হিসাবে। যে জন্য, মুসলিমরা যে কোন সভা সমিতি বা বক্তৃতা শুরু করার সময় (আরবীতে) যে কথাগুলো দিয়ে শুরু করে – সেই “খুতবাতুল হাজাহ্”র মাঝে একটা লাইনে বলা হয়: “ফা ইন্না খাইরাল কালামি, কালামুল্লাহ্” বা “ফা ইন্না খাইরাল হাদীসি কিতাবুল্লাহ্” – অর্থাৎ সবচেয়ে উত্তম কথা/বাণী হচ্ছে আল্লাহর কথা বা তাঁর কিতাব – অর্থাৎ, কুর’আন! বিশ্বাসী হিসেবে এ নিয়ে আমার কোন সংশয় নেই।
যাহোক, আল্লাহর বাণী, কথা বা Speech-এর প্রসঙ্গ ছেড়ে দিয়ে এবার যদি সৃষ্টিকুলের কাছে ফিরে আসি, আমি জানি আপনারা আব্রাহাম লিংকন, বাট্র্যান্ড রাসেল, নেইল কিনক, জন এফ কেনেডী বা বেঞ্জামীন ফ্র্যাঙ্কলিনের মত অনেক বড় বড় মানুষের কথা বলবেন – যাদের বক্তৃতাকে অভাবনীয় মনে করা হয়। কিন্তু ৮৭% মুসলিমের দেশের একটা random selection-এ আমাদের যা জানা উচিত ছিল: সেরকম একটা অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাণী, বক্তৃতা বা বা Speech – যেটাকে আমরা One of the best speeches ever বলতে পারতাম, সে সম্বন্ধে আমাদের প্রায় কারোই যে জানা নেই, তা একপ্রকার নিশ্চিত। অথচ দেখুন, একজন বিধর্মী এ সম্বন্ধে কি বলছেন:
It should be engraved in stone on the gates of every presidential palace and public reception hall of every Muslim monarch. It should be stamped on the front of every identity card and passport so that the police and the security forces of the Muslim world are daily reminded of this great and noble contact between the governed and the governor: .. (page#213, Prophet Muhammad – A Biography)
হ্যাঁ, রাসূল(সা.)-এঁর মৃত্যুর পরে খলিফা নির্বাচিত হবার পর, তাঁর জনগণের উদ্দেশ্যে আবু বকর (রা.) যে বক্তৃতা দিয়েছিলেন, সে সম্বন্ধে বলতে গিয়ে The Prophet Muhammad – A Biography (ISBN 1-58768-029-7) বইয়ের বৃটিশ লেখক Barnaby Rogerson ঠিক এই ভাষায় তার মুগ্ধতা প্রকাশ করেছেন। সীরাহর (রাসূলের জীবনীর) আন্যান্য লেখকেরা বা ইতিহাসবিদেরা, কোন শাসকের পক্ষ থেকে প্রজা সাধারণের উদ্দেশ্য দেয়া ইতিহাসের সবচেয়ে স্বল্পদৈর্ঘ অথচ সারগর্ভ বক্তৃতা বলে উল্লেখ করেছেন ঐ বক্তৃতাকে। কেউ কেউ অনুমান করেছেন যে ঐ বক্তৃতা বড়জেfর ৬০ সেকেন্ড স্থায়ী হবার কথা। আসুন দেখি কি ছিল ঐ বক্তৃতায় দেখা যাক:
I have been given the authority over you and I am not the best of you. If I do well, help me; and if I do wrong, set me right. Sincere regard for truth is loyalty and disregard for truth is treachery. The weak amongst you shall be strong with me until I have secured his rights, if God will; and the strong amongst you shall be weak with me until I have wrested from him the rights of others, if God will. Obey me for so long I obey God and His Messenger. But if I disobey God and his Messenger, you owe me no obedience. Arise for your prayer, God have mercy upon you. (page#214, Prophet Muhammad – A Biography)
হ্যাঁ, তখনও আমরা বক্তৃতা আর প্রতিশ্রুতি খেয়ে পেট ভরতে শিখি নি, তাই বক্তৃতাগুলো কত ছোট ছিল অথচ কি meaningful ছিল। আবু বকর(রা.) শাসক হিসবে কেমন ছিলেন, আর ঐ ৬০ সেকেন্ডে বলা কথাগুলোকে কিভাবে বাস্তবায়ন করেছিলেন, তা সামান্য পড়ালেখা করা মুসলিম মাত্রেরই জানার কথা। আর না জানা থাকলে Barnaby Rogerson-এর মত মানুষদের কাছে জেনে নিন – আর ভেবে দেখুন কেন তিনি আজকের মুসলিম শাসকদের প্রাসাদে ঐ কথাগুলো খোদাই করে রাখতে বলেছেন…..