জিহ্বার রক্ষণাবেক্ষণ – শেষ পর্ব
লিখেছেন: ' মুসলিম৫৫' @ শনিবার, মে ১৫, ২০১০ (১২:৫০ অপরাহ্ণ)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আস সালামু আলাইকুম!
মূল: ইমাম নববী
[আগের লেখার ধারাবাহিকতায়, যেগুলো এখানে রয়েছে:
www.peaceinislam.com/muslim55/4733/
www.peaceinislam.com/muslim55/4942/
www.peaceinislam.com/muslim55/5043/
www.peaceinislam.com/muslim55/5060/
www.peaceinislam.com/muslim55/5072/
www.peaceinislam.com/muslim55/5371/
www.peaceinislam.com/muslim55/6144/ ]
পরচর্চা সম্পর্কে
আমরা ইতোমধ্যে পরচর্চা নিষিদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে প্রমাণ উল্লেখ করেছি এবং এর শাস্তি সম্পর্কেও উল্লেখ করেছি ৷ আমরা এর সংজ্ঞাও উপস্থাপন করেছি, যদিও সংক্ষিপ্তাকারে ৷
ইমাম আবু হামিদ আল গাজ্জালী (রহ.) বলেছেন:
“পরচর্চা তাকেই বলে যখন একজন ব্যক্তি একজনের কথাকে অন্য আর এক ব্যক্তির কাছে বর্ণনা করে ৷ এর একটি উদাহরণ হচ্ছে যখন কেউ বলে: ‘ঐ ব্যক্তিটি তোমার সম্পর্কে এই এই বলেছে ৷’ যাহোক, পরচর্চা কেবলমাত্র এ উদাহরণে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এর পরিসর হচ্ছে এমন কিছু প্রকাশ করা, যা প্রকাশিত হলে একজন ঘৃণা করে – তা এমনও যদি হয় যে, সেই ব্যক্তি যার নিকট হতে বর্ণনা করছে বা যার নিকট বর্ণনা করছে বা অন্য কোন ব্যক্তি সেটা ঘৃণা করে ৷ তা বক্তব্যের মাধ্যমে করা হোক, লেখনীর মাধ্যমে বা অঙ্গভঙ্গী ইত্যাদির মাধ্যমে যেভাবেই করা হয়ে থাক না কেন – তা সর্বক্ষেত্রেই এক এবং যেটা বর্ণনা করা হচ্ছে তা একজনের বক্তব্য বা কাজ সম্পর্কেই হোক বা একজনের দোষত্রুটি বা অন্যকিছু হোক ৷ সুতরাং, পরচর্চার ধরনই হচেছ: যা গোপন রাখা দরকার তা প্রকাশ করা, এর গোপনীয়তাকে ধবংস করা যা ঐ ব্যক্তি প্রকাশিত হলে অপছন্দ করে ৷
একজন ব্যক্তি কোন লোকের অবস্থা সম্পর্কে দেখলে বা শুনলে চুপ করে থাকবে, যদি না তা প্রকাশ করার মধ্যে কোন মুসলিমের কোন মঙ্গল থাকে বা তা একটি গুনাহ সংঘটিত হওয়া থেকে বিরত রাখে ৷”
এবং তিনি বলেছেন :
“যার নিকট পরচর্চা করা (namemah) এবং বলা হয়: ‘অমুক অমুক ব্যক্তি আপনার সম্পর্কে এই বলেছে ৷’ তখন তার জন্য ছয়টি বিষয় জরুরী:
১.তিনি অবশ্যই ঐ ব্যক্তিকে বিশ্বাস করবেন না, কেননা যে সংবাদটি দিচ্ছে সে একজন পরচর্চাকারী (namah), এবং পরচর্চাকারী হচেছ একজন দুষ্ট লোক (ফাসিক), সুতরাং তার সংবাদসমূহ প্রত্যাখ্যাত ৷
২.তিনি তাকে এ ধরনের কাজ করতে নিষেধ করবেন, উপদেশ দিবেন এবং তার কাজের ঘৃণ্য দিকটা প্রকাশ করবেন ৷
৩.তিনি অবশ্যই তাকে আল্লাহর জন্য ঘৃণা করবেন, কেননা সে আল্লাহর নিকট ঘৃণ্য এবং আল্লাহর জন্য ঘৃণা করা ফরয ৷
৪.যার বক্তব্য লোকটি বর্ণনা করছে তার সম্পর্কে তিনি অবশ্যই কোন খারাপ ধারণা পোষণ করবেন না, কেননা আল্লাহ বলেন:
“তোমরা অনুমান থেকে বেঁচে থাকো ৷”(সূরা হুজুরাত,৪৯:১২)
৫.আপনার কাছে (একজন সম্পর্কে) কিছু বলা হলে তা যেন আপনাকে বিষয়টি সম্পর্কে গুপ্তচরবৃত্তি করতে বা আরো তদন্ত করতে প্ররোচিত না করে, কেননা আল্লাহ বলেন:
“এবং একে অপরের পশ্চাতে নিন্দা করনা ৷”(সূরা হুজুরাত, ৪৯:১২)
৬.তিনি পরচর্চাকারীকে যে কাজ করতে মানা করেছেন, তিনি নিজের এ কাজে যেন সন্তুষ্ট না হয়ে যান ৷ এরূপে তিনিও অন্যকে গুজবের ব্যাপারটি জানাবেন না এ বলে যে, ‘অমুক অমুক লোকে আমাকে এ কথা বলেছে’ – কেননা তখন তিনি নিজে একজন পরচর্চাকারী হয়ে যাবেন এবং তিনি তা-ই তিনি নিজে মানা করেছেন ৷”
এটি বর্ণিত আছে যে, একজন লোক উমার ইবন আব্দুল আজিজ (রহ.) কাছে গেল এবং তাকে অন্য ব্যক্তি সম্পর্কে কিছু বলল, উমার (রহ.) তাকে বললেন, “তুমি যদি চাও তাহলে আমরা তোমার বিষয়টি তদন্ত করে দেখব ৷ আর যদি তোমার কথা অসত্য হয়, তবে তুমি ঐ আয়াতের শ্রেণীভুক্ত যাদের সম্পর্কে এ আয়াত বর্ণিত হয়েছে: ‘যদি কোন ফাসিক লোক তোমাদের নিকট কোন বার্তা আনয়ন করে, তোমরা তা পরীক্ষা করে দেখবে ৷’ ” (সূরা হুজুরাত, ৪৯:৩)
এবং তোমার বক্তব্য যদি সত্য হয়, তবে তুমি এ আয়াতের শ্রেণীভুক্ত :
‘পিছনে নিন্দাকারী, যে একের কথা অপরের নিকট লাগিয়ে বেড়ায় ৷’ (সূরা কলম, ৬৮:১১)
আর যদি তুমি চাও আমরা ব্যাপারটি উপেক্ষা করতে পারি ৷” তখন লোকটি বলল, “দয়া করে ব্যাপারটি উপেক্ষা করুন, ঈমানদার সেনাপতি! আমি আর এর উল্লেখ করবো না ৷”
সুন্দর বলেছেন , লেখার জন্য ধন্যবাদ ।
@হাফিজ, ধন্যবাদ আপনাকেও!
লেখাটি ভালো লাগলো।
@Sadia, ধন্যবাদ!