রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় মুসলিমদের সম্পৃক্ততা – ১
লিখেছেন: ' মুসলিম৫৫' @ শুক্রবার, মে ২১, ২০১০ (১২:২০ পূর্বাহ্ণ)
মূল: সেলিম মরগ্যান
(যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার একটি মসজিদের ইমামের খুতবা থেকে রূপান্তরিত এই লেখাটি আদতে আমেরিকায় বসবাসরত মুসলিমদের জন্য হলেও, এখনকার পৃথিবীর প্রায় সকল দেশের বেলায়ই প্রযোজ্য)
আমার মনে হয় আজ আপনারা যা শুনতে এসেছেন তা হচ্ছে “ওদের” রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় আমরা কতটুকু জড়িত হবো সে নিয়ে আলোচনা। এখানে হয়তো “ওদের” শব্দটা বাদ পড়ে গেছে। এভাবে বললে আপনা আপনিই কিছু প্রশ্ন উত্থাপিত হয়: ওদের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় আমাদের অংশগ্রহণ কতটুকু হবে? এ নিয়ে ভাবতে গেলে প্রথমেই যে কথাটা মনে আসে তা হচ্ছে নির্বাচন। এবং আপনারা দেখবেন কিছু মুসলিম এই বলে ছুটাছুটি করে যাচ্ছেন যে, আমাদের কাজ করে যাওয়া উচিত যতক্ষণ না আমরা [আমেরিকার] একজন মুসলিম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করতে পারছি এবং আপনারা জানেন তারপর কি হবে বলে তারা মনে করেন। কাউকে তার অফিসে নির্বাচিত করা [তা প্রেসিডেন্ট, গভর্ণর, মেয়র, ইত্যাদি না না ধরনের অফিস হতে পারে], বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই [এবং STATE-এর বিভিন্ন পর্যায়ের পদগুলোর জন্যও যা প্রযোজ্য] – একটা অনুমোদিত বা জায়েজ ব্যাপার হবে না। কারণ, সরকারের বিভিন্ন স্তরে একজন নির্বাচিত কমকর্তা হতে হলে আপনাকে তাদের দ্বীনে বিশ্বাস করতে হবে এবং আপনাকে তাদের “পবিত্র নথিপত্রের” প্রতি অনুগত হতে হবে, [ইসলামে বা মুসলিমদের জন্যে] যার অনুমতি দেয়া হয় না । তবে কোন কোন স্তরে কোন গঠনমূলক ব্যাপারে বিশেষ ক্ষেত্রে এটা অনুমোদন যোগ্য হতেও পারে। উদাহরণ স্বরূপ একজন মুসলিম ছেলে কোন স্কুলে যায় এবং সবাই যদি তাকে ক্লাসের প্রেসিডেন্ট [মনিটর] বানাতে চায়। এখানে উল্লেখযোগ্য যে, একজন মুসলিম ছাত্রকে সবার ক্লাসের নেতা বানানোর ইচ্ছা হবারই কথা – যদি তা না হয় তবে বুঝতে হবে, কোথাও কোন সমস্যা রয়েছে। কিন্তু এখানে কোন পবিত্র নথির প্রতি আনুগত্য বা শপথের ব্যাপার নেই। বরং এক ধরনের জীবন যাত্রার উপর আরেক ধরনের জীবনযাত্রার শ্রেষ্ঠত্ব থেকেই এই নির্বাচিত করার ব্যাপারটা আসবে [অর্থাৎ ছেলেটার চরিত্রের মাঝে ইসলামলব্ধ গুণগুলো ফুটে উঠবে এবং তা থেকেই সাবই তাকে নেতা বানাতে চাইবে]। এটা একটা স্বাভাবিক ব্যাপার এবং এ থেকে আমার জানামতে কোন নেতিবাচক পরিণতির সম্ভাবনা নেই। মিউনিসিপ্যালিটি অথবা অন্যান্য ছোট খাটো স্থানীয় ব্যাপারগুলোতেও হয়তো বিষয়টা একই ধরনের হতে পারে। এবং সেক্ষেত্রে বিচার্য বিষয় হবে, তাতে মুসলিমদের কোন লাভ হবে কিনা। অর্থাৎ, এই ঘটনা [নির্বাচন] থেকে মুসলিমদের কোন লাভ হবে কিনা। সেই লাভ কেবল দাওয়া [বা ইসলামের পথে মানুষকে ডাকা] থেকে শুরু করে অনেক কিছুই হতে পারে। যেমন একটু আগের উদাহরণের মুসলিম ছেলেটির উন্নত চরিত্র এবং তার বদৌলতে তার ক্লাস প্রেসিডেন্ট হওয়াটা – এক ধরনের জীবন ব্যবস্থার উপর আরেক শ্রেণীর জীবন ব্যবস্থার শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ। এটা সম্ভবত একটা ইতিবাচক ঘটনা এবং দাওয়ার ব্যাপারে সহায়ক একটা ঘটনা। এরকম ক্ষেত্রে যদি সত্যিই কোন “লাভ” সনাক্ত করা যায়, তবে সেই “লাভ” অর্জন করতে সময় ব্যয় করা হয়তো উচিত।
এরপরের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হচ্ছে ভোট দেয়ার ইস্যু। অক্টোবর/নভেম্বরের দিকে অনেক মসজিদে বা ইসলামিক সেন্টারে গেলে আপনি পেছনের দিকে একটা বিরাট ব্যানার দেখতে পাবেন – যাতে লেখা রয়েছে যে, “ভোট প্রয়োগ করতে ভুলবেন না যেন”। আমরা যারা এর ভিতর পতিত হয়েছি – জন্মসূত্রে অথবা অন্যভাবে – এবং যাদের কাছে সেই কাগজের টুকরাখানা রয়েছে [CITIZENSHIP], আমাদের নিজেদের দুটো প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা উচিত :
১) ঐ ভোট প্রয়োগ করার কোন ইসলামী কারণ রয়েছে কিনা এবং এমন অবস্থা থাকতে পারে, যেখানে সেরকম কারণ রয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ, কেউ যদি এই প্রস্তাব সহ ভোট চায় যে, সে “স্কুল ভাউচারের” ব্যবস্থা করবে – যখন যে কোন বাবা-মায়ের অধিকার থাকবে কোন পাবলিক স্কুল থেকে সন্তানদের সরিয়ে নিয়ে এসে কোন প্রাইভেট (ইসলামী) স্কুলে ভর্তি করার এবং সেই প্রাইভেট স্কুলের খরচের অংশবিশেষ সে ঐ ভাউচার দিয়ে পরিশোধ করতে পারবে। এই ব্যাপারটা বেশীর ভাগ স্টেটেই, এমন কি ধর্মীয় স্কুলের বেলায়ও, সম্ভব – যদি না ওরা এখন নতুনভাবে সচেতন হয়ে নিষেধাজ্ঞা জারী করে। এরকম একটা ব্যাপার যে মুসলিম কমিউনিটির জন্য কল্যাণকর – এটা বুঝতে জিনিয়াস হবার প্রয়োজন হয় না। তাই একজন মুসলিম যদি এ কাগজের টুকরাখানার অধিকারী হন এবং ব্যালটে এ ধরনের একটা ইস্যু উপস্থিত হয় – তাহলে একজন মুসলিমের উপর ওয়াজিব হবে ঐ বুথে যাওয়া এবং ভোট প্রদান করা। কারণ এখানে মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য পরিষ্কার ভাবে সনাক্ত করা যায়, এমন একটা লাভজনক ব্যাপার রয়েছে।
২) দ্বিতীয় ব্যাপার হচ্ছে মুসলিমদের অবস্থানটা একতাবদ্ধ হতে হবে। সুতরাং আমরা মাত্র যে উদাহরণ দিলাম, সেই উদাহরণের মত একই পরিস্থিতিতেও, সিদ্ধান্তটা কেউ ব্যক্তিগত পর্যায়ে কি মনে করলেন তার উপর ভিত্তি করে নেয়া হবে না। বরং শরীয়াহর দৃষ্টিকোণ থেকে মুসলিমদের জন্য ব্যাপারটা কেমন হবে এবং আমাদের ভিতর যারা স্কলার রয়েছেন, তাদের চিন্তা-ভাবনা ও জ্ঞানের আলোকে কোন নির্দিষ্ট বিষয়ে সবার কি করণীয় তা ঠিক করতে হবে। এবং তার ভিত্তিতে আমাদের জন্য ভোট প্রয়োগ করাটা যদি যথাযথ বলে সাব্যস্ত হয়, তবে ভোটের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমি যে জন্য এ বিষয়টার উপর গুরুত্ব দিচ্ছি তা হচ্ছে এই যে, এসব পরিস্থিতিতে আপনাদের যেন একটা বিভক্ত বা divided অবস্থান না থাকে। কেননা একটা বিভক্ত মুসলিম ভোট প্রয়োগের ফল কপাল ভালো হলে হয়তো শুধু এটুকুই হবে যে, ভোটগুলো বিফলে গেলো, কোন কাজে আসলো না – আর খুব খারাপ যেটা হতে পারে, সেটা হলো এই যে, কুফফার বুঝতে পারবে যে, আমরা বিভক্ত ও দুর্বল। এবং এ থেকে শেষ পর্যন্ত ওরা আমাদের নিয়ে যে খেলায় মেতে উঠবে, সেটা হচ্ছে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানরা নিজেদের দলে কতজন মুসলিমকে টানতে পারলো, সেই সনাতন খেলা। সুতরাং এমনকি যখন কোন সত্যিকার ইস্যু থাকবে – মুসলিমদের জন্য ভোট দেয়ার সত্যিই যখন একটা কারণ দেখা দেবে – তখনও এই অস্ত্রকে অত্যন্ত সাবধানতার সাথে প্রয়োগ করতে হবে; কেবল গোটা মুসলিম সম্প্রদায়ের কল্যাণের কথা চিন্তা করে এক একতাবদ্ধ সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে [যেটাকে Block Voting বলা হয়, অর্থাৎ সম্প্রদায়ের সবাই একদিকে ভোট দেবে ]।
এব্যাপারে এক্ষেত্রে শেষ ইস্যু যেটা আসবে, সেটা হচ্ছে আমেরিকায় নাগরিকত্বের ইস্যু। আমি যেমন বলেছি: যারা এর ভিতর পতিত হয়েছেন – আমি জানিনা তাদের উপর এক্ষুণি সেটাকে ত্যাগ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে কিনা – তবে আজ যদি কোথাও “দারুল ইসলাম” অস্তিত্ব লাভ করে, তবে মানুষের উপর সেখানে চলে যাবার এবং সেটাকে সমর্থন করার বাধ্যবাধকতা প্রযোজ্য হবে। যাহোক, যারা এর ভিতর জন্মগ্রহণ করেননি অথবা দুর্ঘটনাবশত তা [নাগরিকত্ব] লাভ করেন নি – তাদের উচিত তা গ্রহণ না করা – যদি না তাদের কোন আইনি অপারগতা বা জরুরত থাকে। কারণ নাগরিকত্ব গ্রহণ করতে হলে ইসলাম ছাড়া অন্য একটা দ্বীনের প্রতি আনুগত্যের ঘোষণা দিতে হয়। এর জন্য এমন কিছু ব্যাপারকে সমর্থন করার শপথ গ্রহণ করতে হয়, যার শপথ করা একজন মুসলিমের জন্য অনুমোদিত নয়। মুসলিমদের সার্বিকভাবে বুঝতে হবে যে, আমেরিকার বা এধরনের অন্যান্য দেশগুলোতে নাগরিকত্ব গ্রহণ করাটা তাদের জন্য জায়েজ নয় – যদি না তাদের কোন অপারগতা থাকে বা জরুরত থাকে – এমন জরুরত যেটাকে স্কলারদের দ্বারা শরীয়াহতে “জরুরত” হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে [নিজের মনগড়া better living-এর জরুরত তো নয়ই] । আজকের বিষয়টা সম্ভবত যা ছিল, তা নিয়ে আমার এটুকুই বলার রয়েছে। কিন্তু মুদ্রিত বিষয়টা যেহেতু “রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় মুসলিমদের সম্পৃক্ততা” ছিল, সেহেতু আমি এখন “রাজনৈতিক প্রক্রিয়া” বা The Political System-এর কথায় যাবো। অর্থাৎ ঐ Political System-এর কথায় যা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’লা আমাদের জন্য নির্ধারণ করেছেন এবং যেটা নবী (সা.) এবং তাঁর সাহাবীদের দ্বারা বাস্তবায়িত করা হয়েছে।
ইসলামের রাজনৈতিক প্রক্রিয়া “ইমামার” [বা ইমামতের] ধারণাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয় – মুসলিম উম্মার উপরে একজন একক ইমামের ধারণা। ঐ ইমামের ব্যাপারে এই The Imam বা একক ইমামের সংজ্ঞার প্রশ্ন আসবে, যিনি গোটা মুসলিম উম্মাহর ব্যাপারে দায়িত্বশীল এবং তিনি তাদের সকল আইনি বিষয়ের সাথে সম্পৃক্ত – তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের ব্যাপার উভয়ের সাথে। তাঁর দায়িত্ব হচ্ছে সকল প্রকারের জুলুম প্রতিরোধ করা, যাদের উপর জুলুম করা হয় তাদের সাহায্যে এগিয়ে যাওয়া এবং এটা নিশ্চিত করা যে, যার যা প্রাপ্য তা যেন সে পায়। মুসলিম উম্মাহর জনগণের সম্পদের রক্ষণাবেক্ষণ করা হচ্ছে তাঁর অন্যতম দায়িত্ব – এই ব্যাপারটা in itself একটা বিশাল subject যা নিয়ে [অর্থাৎ, ইসলামের Public Property নিয়ে] অনেক কিছু বলার ও জানার আছে। প্রতিটি মুসলিমের জানা উচিত যে, মুসলিম উম্মার Public Property গুলো কি কি? সেগুলো কোথা থেকে আসে, সেগুলোকে কি ভাবে treat করতে হবে এবং সেগুলো কোথায় ব্যয় করতে হবে। মুসলিম উম্মার সার্বিক [শুধু তাদের ছাড়া যাদের ভিন্নতাকে প্রত্যাখান করা হয়] ইজমার ভিত্তিতে এটা প্রতিষ্ঠিত যে, যখনই তা করা সম্ভব – তখনই ইমামত প্রতিষ্ঠা করাটা আমাদের জন্য ফরজ; যদি বিশেষ অপারগতা না থাকে তবে ইমামত প্রতিষ্ঠা করাটা উম্মার উপর একটা ফরজ।
আমরা সাহাবা (রা.) দের উদাহরণ দেখি। তাঁরা এ ব্যাপারটার গুরুত্ব বুঝতে পেরেছিলেন বলেই নবীর মরণোত্তর গোসল এবং দাফন বাদ রেখেই তাঁরা ইমাম নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় আত্মনিয়োগ করেছিলেন। তাঁরা বুঝেছিলেন যে, মুসলিম উম্মার এমন কি ২/১ ঘন্টার জন্যও ইমামবিহীন থাকা উচিত নয় বা একজন শাসকবিহীন থাকা উচিত নয়। এই ব্যাপারটাকে অবজ্ঞা করার কুফলও খুব গুরুতর। এ অবস্থায় সাধারণ মানুষকে একটা বিশৃঙ্খল অবস্থার দিকে ঠেলে দেয়া হয়, যখন তাদেরকে সত্য পথের উপর একতাবদ্ধ করার জন্য কেউ থাকে না। এখানে আমরা ইমামের কাজগুলো বা যোগ্যতা জানতে পারি – প্রথমত মুসলিমদের একতাবদ্ধ করা এবং রাখা – শুধু তাই নয়, তাদের সত্যের উপর একতাবদ্ধ রাখা। এ থেকে আমরা The Imam-এর যোগ্যতার কিছুটা আভাস পাই যে সম্বন্ধে আমরা একটু পরে বিস্তারিত আলোচনায় যাবো।
স্কলাররা অনেক আগে থেকেই এ ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করে আসছেন যে, মুসলিম উম্মাহ কাকে নিজেদের উপর ইমাম হিসেবে নিযুক্ত করবে [অথবা ক্ষেত্র বিশেষে কাকে ইমাম পদ থেকে অপসারিত করবে।] এটা হচ্ছে বিদ্যাশিক্ষার একটা ক্ষেত্র – যা আজকের দিনে অনেক অংশেই হয়তো হারিয়ে গেছে – যেমন এই বিষয়ের উপর লিখিত অনেক বইও হারিয়ে গেছে। কোন কোন ক্ষেত্রে ঐ সব বইয়ের reference থাকলেও, মূল বইগুলো হয়তো পাওয়া যায় না এবং এটা হচ্ছে এমন একটা বিষয় যা ইসলামের সমকালীন দাওয়া প্রোগ্রাম বা শিক্ষা প্রোগ্রামগুলোতে প্রাধান্য পায় না। যদিও মুসলিম উম্মাহ আজ যে সব প্রধান সমস্যাগুলোর সম্মুখীন – এটা তার অন্যতম।
যারা ইমাম নির্বাচন করবেন, তাঁরা কারা হবেন সে ব্যাপারে কিছু সন্দেহাতীত অনুসিদ্ধান্ত রয়েছে – যেগুলো স্কলারদের ইজমার উপর প্রতিষ্ঠিত। তবে আমাদের মনে রাখতে হবে যে, ইজমার যে কোন claim বা দাবী তদন্ত করে দেখতে হবে। যখন কেউ ইজমার দাবী করবে, তখন আমরা বেশ বড় সংখ্যক স্কলারদের ইজমা বুঝবো। যাহোক, নির্বাচনকারী কারা হবেন, সে ব্যাপারে প্রথম শর্ত হচ্ছে এই যে, তাঁরা পুরুষ হবেন। স্কলারগণ এ ব্যাপারে একমত যে, ইমাম নির্বাচনের ব্যাপারে মেয়েদের কোন সরাসরি ভূমিকা নেই। দ্বিতীয় যে বিষয়টাতে ইজমা রয়েছে, সেটা হচ্ছে এটা জন সাধারণের হাতে ছেড়ে দেয়ার কোন বিষয় নয়। এটা এমন একটা ব্যাপার নয় যার ব্যাপারে সিদ্ধান্তের দায়-দায়িত্ব বা ক্ষমতা জনসংখ্যাকে দেয়া হয়। বরং এর দায়িত্ব আমাদের ভিতর যারা উলেমা রয়েছেন, বা আরো নির্দিষ্টভাবে যারা “মুজতাহিদ” রয়েছেন, তাদের উপর বর্তায়। মুজতাহিদের কথা যখন আসবে, তখন দুই ধরনের মুজতাহিদের কথা আমরা ভাববো। কেউ কেউ থাকেন যারা সকল বিষয়ে ইজতিহাদের যোগ্যতা রাখেন। আবার কেউ কেউ হয়তো কোন নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে ইজতিহাদের যোগ্যতা রাখেন। এই ভিন্নতা একদম সাহাবীদের সময় থেকে চলে আসছে। যেমন অর্থনৈতিক ব্যাপারে মতামত জানতে হলে অন্যান্য সাহাবীরা ওমর বিন খাত্তাবের (রা.) কাছে যেতেন। অন্য কোন সাহাবী হয়তো ওয়ারিশের আইন কানুনের ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ ছিলেন। ইমাম নির্বাচনের ব্যাপারে যাদের ভূমিকা থাকবে তাঁরা হয় সব বিষয়ে মুজতাহিদ হবেন অথবা অন্তত রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ, এমন মুজতাহিদ হবেন [ রাজনৈতিক নেতৃত্ব বা কর্মকান্ডের ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ বা আইনজ্ঞ]। আবারো, আমরা নিশ্চিত হই যে, দুটো ব্যাপার এখানে পরিষ্কার: ১)কেবল পুরুষরাই এ ব্যাপারে সম্পৃক্ত হবেন এবং ২)আমাদের ভিতর যারা স্কলার, তাঁরা ইমাম নির্বাচন করবেন, এখানে গণভোটের কোন scope নেই। যে সব স্কলার রাজনৈতিক বিষয়ে অভিজ্ঞ – বিশেষভাবে তাঁরাই এতে অংশগ্রহণ করবেন।
[উপরোক্ত আলোচনাটি যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী ধর্মান্তরিত মুসলিম ইমাম সেলিম মরগ্যানের একটি বক্তৃতার অনুবাদ। সেলিম মরগ্যান ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানের বাসিন্দা। শিক্ষা ও পেশাগত জীবনে তিনি কম্পিউটার ইন্জিনিয়ার। রিয়াদের “জামিয়াতুল ইমাম”-এ ইসলামের উপর পড়াশোনা করেছেন, সেখানকার “কুলিয়াতুশ শারীয়াহ্” বা “স্কুল অফ শরীয়াহ্”-তে - তাঁর বিশেষ বিষয় ছিল অর্থনীতি। তিনি ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের Squaw Valley Islamic Settlement-এর প্রতিষ্ঠাতা এবং সেখানকার মসজিদের ইমাম। আরো জানতে দেখুন:
www.java-man.com/Pages/SVIS/index.html ]
[চলবে..............ইনশা'আল্লাহ্!]
অসাধারণ! শুকরান যাজাকাল্লাহ
@বাংলা মৌলভী,
ইমাম নির্বাচনের ব্যাপারে যাদের ভূমিকা থাকবে তাঁরা হয় সব বিষয়ে মুজতাহিদ হবেন অথবা অন্তত রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ, এমন মুজতাহিদ হবেন [ রাজনৈতিক নেতৃত্ব বা কর্মকান্ডের ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ বা আইনজ্ঞ]। আবারো, আমরা নিশ্চিত হই যে, দুটো ব্যাপার এখানে পরিষ্কার: ১)কেবল পুরুষরাই এ ব্যাপারে সম্পৃক্ত হবেন এবং ২)আমাদের ভিতর যারা স্কলার, তাঁরা ইমাম নির্বাচন করবেন, এখানে গণভোটের কোন scope নেই। যে সব স্কলার রাজনৈতিক বিষয়ে অভিজ্ঞ – বিশেষভাবে তাঁরাই এতে অংশগ্রহণ করবেন।
ইমাম সেলিম মরগ্যানের সাথে সহমত।
সে ব্যাপারে প্রথম শর্ত হচ্ছে এই যে, তাঁরা পুরুষ হবেন। স্কলারগণ এ ব্যাপারে একমত যে, ইমাম নির্বাচনের ব্যাপারে মেয়েদের কোন সরাসরি ভূমিকা নেই। দ্বিতীয় যে বিষয়টাতে ইজমা রয়েছে, সেটা হচ্ছে এটা জন সাধারণের হাতে ছেড়ে দেয়ার কোন বিষয় নয়। এটা এমন একটা ব্যাপার নয় যার ব্যাপারে সিদ্ধান্তের দায়-দায়িত্ব বা ক্ষমতা জনসংখ্যাকে দেয়া হয়। বরং এর দায়িত্ব আমাদের ভিতর যারা উলেমা রয়েছেন, বা আরো নির্দিষ্টভাবে যারা “মুজতাহিদ” রয়েছেন, তাদের উপর বর্তায়।
সহমত ।
@হাফিজ, ধন্যবাদ!