লগইন রেজিস্ট্রেশন

ইসলাম নিয়ে কথা বলা কি “ক্যাচাল”!

লিখেছেন: ' মুসলিম৫৫' @ শনিবার, সেপ্টেম্বর ১১, ২০১০ (১২:০২ পূর্বাহ্ণ)

বিসমিল্লাহির রাহমিনির রাহিম
আস সালামু আলাইকুম!

[ঘটনাটা "সামু"-র - কিন্তু আপনাদের সাথে শেয়ার করা প্রয়োজন মনে করছি!]

বেশ ক’বছর আগে, একসময় আমাকে পেশাগত প্রশিক্ষণের জন্য নারায়গঞ্জে যেতে হতো। নারায়গঞ্জে আমি যে জায়গাটায় তখন যেতাম, তার পথে একটা পুলিশ ফাঁড়ি ছিল। ঐ পুলিশ ফাঁড়ির সামনে একটা নিম গাছ ছিল – কখনো ভালো করে খেয়ালই করি নি ওটা কি গাছ। একদিন সকালে ঐ পথে যেতে যেতে দেখলাম, নিম গাছটির চারিদিকে বেশ কিছু মানুষের ভীড় আর অনেক কয়টা মোমবাতি জ্বলছে। জিজ্ঞেস করে জানলাম ঐ গাছটা থেকে নাকি সাদা রঙের এক ধরনের ব্যতিক্রমী রস বের হচ্ছে – আর গাছের ঐ “কেরামতের” জন্য গাছের পাদদেশে ভক্তকুলের ঐ অর্ঘ্য! আমাদের দেশের মুসলিমরা কিসের না পূজা করে বা আরাধনা করে? গাছ, সাপ, কবর, মাজার, তান্ত্রিক মা, ন্যাংটা বাবা, পাগলা বাবা … এমনকি জাগতিক প্রাপ্তির জন্য কালী পূজাও করে। অথচ, এসব মুসলিমদের ভীড়েই তো তারাবীর নামাজের আগে এশার নামাজে মসজিদে জায়গা পাওয়া কষ্টকর হয়, এরাই আজ ট্রেনের ছাদকে জনারণ্যে পরিণত করে বাড়ী ফিরছে ঈদ করতে। নিশ্চয়ই এরা আল্লাহয বিশ্বাসী! তাহলে কি করে মুসলিম হয়েও এধরনের শিরক করতে পারে? সহজ উত্তর: মুসলিম হিসাবে আমরা কি বিশ্বাস করবো আর কি করবো না, কার কাছে কিছু চাইতে হবে আর কাদের কাছে কিছুই চাওয়া যাবে না, কি বিশ্বাস পোষণ করলে ১৪ গুস্টি মুসলিম হলেও একজন ব্যক্তি চির জাহান্নামী হতে পারে – আমরা এসব কখনো শিখিনি অথবা জানি নি। অনেকের জীবনটা এসব যে জানার বিষয় – তা না জেনেই শেষ হয়ে যাবে। এই ধরুন আমিই যদি ১০ বছর আগে মরে যেতাম, তবে হয়তো জানতামই না যে, such things exist!

এই কথাটা চিন্তা করেই আমি এই ব্লগে, একটু একটু করে, মুসলিমদের মৌলিক ধর্ম-বিশ্বাসের একটা আর্কাইভ গড়ে তুলতে চেয়েছি এবং সেই উদ্দেশ্যে ১৩টা লেখা পোস্ট করেছি। আমার হিটের দরকার নেই এবং আমি জানি এগুলো সহজে কেউ দেখবে না – তবু রাত জেগে অন্তর্জালে “প্রভার শয্যা-দৃশ্য” খোঁজা তারুণ্যের যদি কখনো আল্লাহর কথা মনে পড়ে বা আল্লাহ সম্বন্ধে জানার ইচ্ছা হয় – তবে তার জন্য হাতের কাছে একটা তথ্য-ভান্ডার থাকলো। চলছিল একরকম – শান্তিপূর্ণভাবেই – কারো সময় যেন অহেতুক নষ্ট না হয়, না চেয়ে শুধু শুধু অনেকদূর পড়ে যেন করো ইসলাম বিদ্বেষ “জ্বলে” না ওঠে, সেজন্য আমি একধরনের একটা caution বা সতর্কবাণী লাগিয়ে রেখেছি লেখা গুলোতে, যা দেখতে এরকম: [লেখাটি বিশ্বাসী মুসলিম ভাই-বোনদের জন্য লিখিত] । তবু শেষ রক্ষা হলো না। কাল ঐ সিরিজে একটা লেখা পোস্ট করলাম “মুসলিম Set of Beliefs এর বাকী কিছু পয়েন্ট” – এই শিরোনামে। সঙ্গে সঙ্গে কয়েকটা মাইনাস পড়লো যেটা আমার কাছে বেশ unusual attention-ই মনে হলো আর তারপর একজন মন্তব্য রাখলেন: “ভাই, এই ইসুতে না পোস্টাইলে হয় না ? বেশ কিছু দিন ধরে এই ক্যাচাল চলতাছে” । আমি বেশ অবাক হলাম! কত বিষয় নিয়ে এই ব্লগে কত পোস্ট লেখা হচ্ছে যার ৯০%তেই হয়তো আমার কোন আগ্রহ নেই – কিন্তু তাই বলে আমি তো কোন পোস্টে ঢুকে “এই ইসুতে না পোস্টাইলে হয় না ?” – একথা লিখি না। ইসলামের ব্যাপারে দেখুন সুশীলদের tolerance কত কম! তারা হয়তো একজন লেসবিয়ানের right to be different স্বীকার করবেন, কিন্তু একজন মুসলিমের right to be different মানতে চান না! অথচ এই মুহূর্তে – আমি যখন এই লেখাটা লিখছি তখন “সামু”-র প্রথম পাতায় ঈদ সংক্রান্ত ৯টা পোস্ট রয়েছে – পোসটাগুলো যাদের এরা তো সবাই মুসলিম এবং সামুর ব্লগারদের good majority-ই তো মুসলিম। তারা যে ঈদ নিয়ে লিখছেন এই ঈদ কি, কেন, ঈদে কতটুকু আনন্দ ফূর্তি করা যাবে আর কতটুকু করা যাবে না অথবা ঈদের অবশ্যকরণীয় কতটুকু এগুলো যদি আলোচনা হয় তবে কি আমরা বলবো যে সেটা – ক্যাচাল? অথচ আমার লেখার বিষয়বস্তু একজন মুসলিমের দ্বীন সম্বন্ধে জ্ঞানের জন্য ঈদের চেয়ে অনেক অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ ছিল!

যহোক, আমার এই লেখাটা ২ টি কারণে লিখছি:
১)প্রথমত, সুশীল, কাফির, মুশরিক বা নাস্তিকদের মনে করিয়ে দিচ্ছি যে, আমি একজন সাধানরণ মানুষ হিসবেই আমার ধর্ম নিয়ে লিখতে পারি! আপনাদের যদি right to be different থাকে এবং আপনারা যদি অন্যের প্রাণপ্রিয় sentiment গুলোকে নিয়ে হাসি-তামাশা করতে পারেন, তবে আমার right to be different-এর বদৌলতে আমি আমার ধর্ম-বিশ্বাস নিয়ে লিখতে পারি।
২)সুশীলদের কেউ যদি তথাপি নিজেকে মুসলিম মনে করেন, তবে তার জন্য কিছু জানার বিষয় আছে – ইসলামে “নাওয়াক্বিদুল ইসলাম” বা “nullifiers of Islam” বলে একটা জানার বিষয় আছে – কোন কাজগুলো করলে কেউ ইসলাম থেকে বেরিয়ে যাবে। সাধারণত ১০টা প্রধান কারণ তালিকাভুক্ত করা হয় যেগুলো কেউ সরাসরি এখানে দেখতে পারেন। আমি এখানে কেবল দুটো তুলে দিচ্ছি:

5 – Whoever hates any part of that which the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him) brought, even if he acts in accordance with it, is a kaafir, because Allaah says (interpretation of the meaning):

“That is because they hate that which Allaah has sent down (this Qur’aan and Islamic laws); so He has made their deeds fruitless”

[Muhammad 47:9]

6 – Whoever makes fun of anything in the religion of the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him), or makes fun of any texts that refer to rewards or punishments, is a kaafir. The evidence for that is the verse (interpretation of the meaning):

“Say: Was it at Allaah, and His Ayaat (proofs, evidences, verses, lessons, signs, revelations, etc.) and His Messenger that you were mocking?

Make no excuse; you disbelieved after you had believed”

[al-Tawbah 9:65-66]
[Source:Islam Q&A]

এদেশের ৮৭% মানুষের দ্বীন-ধর্ম সংক্রান্ত জ্ঞাতব্যকে “ক্যাচাল” বলার আগে একটু ভেবে দেখার জন্য সকল ব্লগারকে অনুরোধ জানাচ্ছি!

Processing your request, Please wait....
  • Print this article!
  • Digg
  • Sphinn
  • del.icio.us
  • Facebook
  • Mixx
  • Google Bookmarks
  • LinkaGoGo
  • MSN Reporter
  • Twitter
১৭০ বার পঠিত
1 Star2 Stars3 Stars4 Stars5 Stars (ভোট, গড়: ৫.০০)

৩ টি মন্তব্য

  1. “এই ইসুতে না পোস্টাইলে হয় না ” এই বাচন উচ্চারণ কারীকে মনে হয় প্রথম আলো ব্লগে গেলে মানাবে- কারণ সেখানে অনেক শয়তানের দোস্ত মজার পোষ্ট ‘পোস্টাইতে’ আছেন। উনারে ভাল লাগবে আশা করি।

  2. এই কথাটা চিন্তা করেই আমি এই ব্লগে, একটু একটু করে, মুসলিমদের মৌলিক ধর্ম-বিশ্বাসের একটা আর্কাইভ গড়ে তুলতে চেয়েছি এবং সেই উদ্দেশ্যে ১৩টা লেখা পোস্ট করেছি… …

    আক্বীদার বিষয়টি আসলেই অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান সময়ের অনেক মুসলমান আছেন যারা শুধু নামেই মুসলমান। প্রসঙ্গক্রমে একজন পরিচিত ভদ্রলোকের কথা মনে পড়লো। যদিও তিনি নামাজ পড়েন না কিন্তু তিনি রোজা রাখেন। সবচাইতে বড় ব্যপার হলো তিনি মনে করেন যে “হিন্দু মুসলমান যে যার ধর্ম পালন করেন না কেন, সবাই বেহেশতে যাবে… “

  3. আক্বিদার ইস্যুতে কথা বলতে গেলে এখানেই কত কথা শুনতে হয়, দলিল ছাড়া- ন্যুনতম যুক্তি ছাড়া সমালোচনা শুনতে হয়, সামুতে হবে সেটাই স্বাভাবিক না?