এক, দুই, তিন তালাক এবং চতুর্থ বিয়ে “হিল্লা” (২)
লিখেছেন: ' নাজনীন' @ বুধবার, সেপ্টেম্বর ৮, ২০১০ (১১:৫৫ অপরাহ্ণ)
আরো তিনটি সূরাতে তালাক সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে এবং এবং নারী-পুরুষের পারস্পরিক আচরণ সংক্রান্ত আয়াত এসেছে,
[sb]সূরা আত্-ত্বালাক্কঃ[/sb]
১। হে নবী, তোমরা যখন স্ত্রীদেরকে তালাক দিতে চাও, তখন তাদেরকে তালাক দিয়ো ইদ্দতের প্রতি লক্ষ্য রেখে এবং ইদ্দত গণনা করো। তোমরা তোমাদের পালনকর্তা আল্লাহকে ভয় করো। তাদেরকে তাদের গৃহ থেকে বহিস্কার করো না এবং তারাও যেন বের না হয় যদি না তারা কোন সুস্পষ্ট নির্লজ্জ কাজে লিপ্ত হয়। এগুলো আল্লাহর নির্ধারিত সীমা। যে ব্যক্তি আল্লাহর সীমালংঘন করে, সে নিজেরই অনিষ্ট করে। সে জানে না, হয়তো আল্লাহ এই তালাকের পর কোন নতুন উপায় করে দেবেন।
২। অতঃপর তারা যখন তাদের ইদ্দতকালে পৌঁছে, তখন তাদেরকে যথোপযুক্ত পন্থায় রেখে দেবে অথবা যথোপযুক্ত পন্থায় ছেড়ে দেবে এবং [su]তোমাদের মধ্য থেকে দু’জন নির্ভরযোগ্য লোককে সাক্ষী রাখবে। [/su]তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে সাক্ষ্য দিবে। এতদ্দ্বারা যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে, তাকে উপদেশ দেয়া হচ্ছে। আর যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্যে নিস্কৃতির পথ করে দেবেন।
৩।এবং তাকে তার ধারণাতীত জায়গা থেকে রিযিক দেবেন। যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে তার জন্যে তিনিই যথেষ্ট। আল্লাহ তার কাজ পূর্ণ করবেন। আল্লাহ সবকিছুর জন্যে একটি পরিমাণ স্থির করে রেখেছেন।
৪। [su]তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যাদের ঋতুবর্তী হওয়ার আশা নেই, তাদের ব্যাপারে সন্দেহ হলে তাদের ইদ্দত হবে তিন মাস। আর যারা এখনও ঋতুর বয়সে পৌঁছেনি, তাদেরও অনুরূপ ইদ্দতকাল হবে। গর্ভবর্তী নারীদের ইদ্দতকাল সন্তানপ্রসব পর্যন্ত। [/su]যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার কাজ সহজ করে দেন।
৫। এটা আল্লাহর নির্দেশ, যা তিনি তোমাদের প্রতি নাযিল করেছেন। যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার পাপ মোচন করেন এবং তাকে মহাপুরস্কার দেন।
৬। তোমরা তোমাদের সামর্থ অনুযায়ী যেরূপ গৃহে বাস কর, তাদেরকেও বসবাসের জন্যে সেরূপ গৃহ দাও। তাদেরকে কষ্ট দিয়ে সংকটাপন্ন করো না। [su]যদি তারা গর্ভবতী হয়, তবে সন্তানপ্রসব পর্যন্ত তাদের ব্যয়ভার বহন করবে। যদি তারা তোমাদের সন্তানদেরকে স্তন্যদান করে, তবে তাদেরকে প্রাপ্য পারিশ্রমিক দেবে এবং এ সম্পর্কে পরস্পর সংযতভাবে পরামর্শ করবে। তোমরা যদি পরস্পর জেদ কর, তবে অন্য নারী স্তন্যদান করবে।[/su]
৭। বিত্তশালী ব্যক্তি তার বিত্ত অনুযায়ী ব্যয় করবে। যে ব্যক্তি সীমিত পরিমাণে রিযিকপ্রাপ্ত, সে আল্লাহ যা দিয়েছেন, তা থেকে ব্যয় করবে। আল্লাহ যাকে যা দিয়েছেন, তদপেক্ষা বেশী ব্যয় করার আদেশ কাউকে করেন না। আল্লাহ কষ্টের পর সুখ দেবেন।
১। প্রথম আয়াতটিতে তালাকের সময় ইদ্দতের প্রতি লক্ষ্য রাখতে বলা হয়েছে। এ সংক্রান্ত বিভিন্ন হাদীসে বারবার বলা হয়েছে যে নারী হায়েজে থাকা অবস্থায় যেন তালাক দেয়া না হয়। কোন কোন সাহাবী ঐরূপ অবস্থায় যখন তাদের স্ত্রীদের তালাক দিয়েছেন রাসূল(সাঃ) খুব অপছন্দ করেছেন ব্যাপারটি এবং এ ব্যাপারে তাদের নিরুৎসাহিত করেছিলেন।
Bukhari :: Book 7 :: Volume 63 :: Hadith 178
Narrated ‘Abdullah bin ‘Umar:
that he had divorced his wife while she was menstruating during the lifetime of Allah’s Apostle . ‘Umar bin Al-Khattab asked Allah’s Apostle about that. Allah’s Apostle said, “Order him (your son) to take her back and keep her till she is clean and then to wait till she gets her next period and becomes clean again, whereupon, if he wishes to keep her, he can do so, and if he wishes to divorce her he can divorce her before having sexual intercourse with her; and that is the prescribed period which Allah has fixed for the women meant to be divorced.”
২। এরপর ইদ্দতকালীন সময়ে স্ত্রীর স্বামীর গৃহে অবস্থান ও খোরপোষ প্রাপ্তির কথা বলা হয়েছে। এটা সূরা বাকারাতেও বলা আছে যা আমি আগের পর্বে দিয়েছি। তবে স্ত্রী যদি ইদ্দতকালীন সময়ে স্বামীর গৃহে থাকতে না চায় তাহলে খোরপোষ থেকে বঞ্চিত হতে পারে। বিভিন্ন হাদীসে ফাতিমা বিনতে কায়েসের(আঃ) স্বামী কর্তৃক পূর্ণাঙ্গ তালাকপ্রাপ্তির ঘটনায় রাসূল(সাঃ) কর্তৃক ভরণপোষণ না দেয়ার সিদ্ধান্তের কথা বলা আছে।
Muslim :: Book 9 : Hadith 3524
Abu Ishaq reported: I was with al-Aswad b. Yazid sitting in the great mosque, and there was with us al-Sha’bi, and he narrated the narration of Fatima bint Qais (Allah be pleased with her) that Allah’s Messenger (may peace be upon him) did not make any provision for lodging and maintenance allowance for her. Al-Aswad caught hold of some pebbles in his fist and he threw them towards him saying: Woe be to thee, you narrate like it, whereas Umar said: We cannot abandon the Book of Allah and the Sunnah of our Apostle (may peace be upon him) for the words of a woman. We do not know whether she remembers that or she forgets. For her, there is a provision of lodging and maintenance allowance. Allah, the Exalted and Majestic, said:” Turn them not from their houses nor should they themselves go forth unless they commit an open indecency”
৩। তালাকের ক্ষেত্রে দুজন নির্ভরযোগ্য সাক্ষী রাখার কথা বলা হচ্ছে।
৪। এ সূরাতে নারীর বিভিন্ন অবস্থায় বিভিন্ন রকমের ইদ্দতকালের কথা বলা আছে। যেমনঃ
স্বাভাবিক স্ত্রীদের বেলায় তিনমাস, গর্ভবতীদের বেলায় সন্তানপ্রসব পর্যন্ত এবং দুগ্ধপোষ্য শিশু থাকলে সন্তানকে স্তন্যদান পর্যন্ত। তবে তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রী যদি সন্তানকে দুধপান করাতে না চায়, সেক্ষেত্রে ধাত্রী কর্তৃক দুধপান করানো যেতে পারে।
৫। ভরণপোষণের বেলায়ও সেই আগের কথাগুলোই এখানে বলা আছে। এখানে আরেকটু যেটা বলা আছে যে স্বামীর সামর্থ অনুযায়ীই ভরণপোষণ দিতে হবে।
এখন আমরা সূরা নিসাতে দেখি আল্লাহ্তাআলা পুরুষদেরকে তাদের স্ত্রীর প্রতি কিরূপ আচরণ করতে বলেছেন।
[sb]সূরা নিসাঃ [/sb]
১৯। হে ঈমাণদারগণ! বলপূর্বক নারীদেরকে উত্তরাধিকারে গ্রহন করা তোমাদের জন্যে হালাল নয় এবং তাদেরকে আটক রেখো না যাতে তোমরা তাদেরকে যা প্রদান করেছ তার কিয়দংশ নিয়ে নাও; কিন্তু তারা যদি কোন প্রকাশ্য অশ্লীলতা করে! নারীদের সাথে সদ্ভাবে জীবন-যাপন কর। অতঃপর যদি তাদেরকে অপছন্দ কর, তবে হয়ত তোমরা এমন এক জিনিসকে অপছন্দ করছ, যাতে আল্লাহ, অনেক কল্যাণ রেখেছেন।
২০। যদি তোমরা এক স্ত্রীর স্থলে অন্য স্ত্রী পরিবর্তন করতে ইচ্ছা কর এবং তাদের একজনকে প্রচুর ধন-সম্পদ প্রদান করে থাক, তবে তা থেকে কিছুই ফেরত গ্রহণ করো না। তোমরা কি তা অন্যায়ভাবে ও প্রকাশ্য গোনাহর মাধ্যমে গ্রহণ করবে?
২১। তোমরা কিরূপে তা গ্রহণ করতে পার, অথচ তোমাদের একজন অন্য জনের কাছে গমন এবং নারীরা তোমাদের কাছে থেকে সুদৃঢ় অঙ্গীকার গ্রহণ করেছে।
তাফসীরঃ সূরা নিসা, পৃষ্ঠা ৮-৯ঃ
উপরোক্ত আয়াতগুলো থেকে আমরা দেখতে পাই যে, জোর করে নারীদের আটকে রাখা বা সম্পত্তি মনে করা একেবারেই অনুচিত। আর স্ত্রীকে তালাক দেয়ার সময়ে তাকে আগে যেসব উপহার বা ধন-সম্পদ দেয়া হয়েছে, সেগুলো ফেরত না নেবার জন্যই বলা হয়েছে।
আবার কোন নারীকে স্পর্শ করার পূর্বেই তালাক দেয়া হলে তার কোন ইদ্দত পালনের প্রয়োজন নেই। এ সংক্রান্ত আয়াত,
[sb]সূরা আহযাবঃ[/sb]
৪৯। মুমিনগণ! তোমরা যখন মুমিন নারীদেরকে বিবাহ কর, অতঃপর তাদেরকে স্পর্শ করার পূর্বে তালাক দিয়ে দাও, তখন তাদেরকে ইদ্দত পালনে বাধ্য করার অধিকার তোমাদের নাই। অতঃপর তোমরা তাদেরকে কিছু দেবে এবং উত্তম পন্থায় বিদায় দেবে।
এখন আমি তালাক সংক্রান্ত আরো কিছু প্রাসঙ্গিক হাদীস এখানে দিচ্ছি,
[sb]১। একই দম্পতির চতুর্থ বিয়ের ব্যাপারে শর্তঃ [/sb]
তৃতীয় তালাকের পর যখন একজন নারী দ্বিতীয় স্বামী কর্তৃক ডিভোর্সড হলেও দ্বিতীয় স্বামীর সাথে প্রাক্তন স্বামীর মতো একইরূপ সম্পর্ক না হয়ে থাকলে তিনি তার পূর্বতন স্বামীকে বিয়ে করতে পারবেন না।
Bukhari :: Book 7 :: Volume 63 :: Hadith 187
Narrated ‘Aisha:
A man divorced his wife thrice (by expressing his decision to divorce her thrice), then she married another man who also divorced her. The Prophet was asked if she could legally marry the first husband (or not). The Prophet replied, “No, she cannot marry the first husband unless the second husband consummates his marriage with her, just as the first husband had done.”
Dawud :: Book 12 : Hadith 2302
Narrated Aisha, Ummul Mu’minin:
The Apostle of Allah (peace_be_upon_him) was asked about a man who divorced his wife three times, and she married another who entered upon her, but divorced her before having intercourse with her, whether she was lawful for the former husband. She said: The Prophet (peace_be_upon_him) replied: She is not lawful for the first (husband) until she tastes the honey of the other husband and he tastes her honey.
[sb]২। মনে মনে তালাকের চিন্তা করলো কিন্তু কোন একশন না নিলে তালাক কার্যকর হয় নাঃ[/sb]
Bukhari :: Book 7 :: Volume 63 :: Hadith 194
Narrated Abu Huraira:
The Prophet said, “Allah has forgiven my followers the evil thoughts that occur to their minds, as long as such thoughts are not put into action or uttered.” And Qatada said, “If someone divorces his wife just in his mind, such an unuttered divorce has no effect.
[sb]৩। খুলা তালাক সংক্রান্ত হাদীসঃ[/sb]
Bukhari :: Book 7 :: Volume 63 :: Hadith 197
Narrated Ibn ‘Abbas:
The wife of Thabit bin Qais came to the Prophet and said, “O Allah’s Apostle! I do not blame Thabit for defects in his character or his religion, but I, being a Muslim, dislike to behave in un-Islamic manner (if I remain with him).” On that Allah’s Apostle said (to her), “Will you give back the garden which your husband has given you (as Mahr)?” She said, “Yes.” Then the Prophet said to Thabit, “O Thabit! Accept your garden, and divorce her once.”
চলবে…
[...] দ্বিতীয় পর্ব [...]
অনেকদিন পরে!! ঈদ মোবারক। আমাকে চিনতে পারছেন? নিক পাল্টে নিলাম তাই।
@আল মুরতাহিল, ঈদ মুবারক। আপনার ব্লগ ঘুরে আসলাম। কিন্তু ঠিক চিনতে পারলাম না। দয়া করে বলবেন কি আপনার আগের নিক কি ছিল?
@আল মুরতাহিল,
আমি চিনেছি, আপনি আমার ব্লগ ডট কমে আই পি সহ ব্যান। ব্যাপক ক্যাচাল নাকি সেখানে লাগিয়েছিলেন । ললজ । আপনাকে আমার ভালই লাগে। জ্ঞান পিপাসু ভাই, আপনি আমাকে মেইল করেন না কেন? আপনাকে মেইল করে অফ যাওয়ার জন্য কেউ কেউ আমাকে বলেছিল। আমি প্রচন্ড ব্যাস্ত হয়ে পড়েছি, তাই মেইল করতে পারিনি। কেমন আছেন ?
নাজনীন @ফুয়াদ,
কেউই চিনলো না আমারে
@আল মুরতাহিল,
বাংলা মৌলভী ?
@?????আপনি তো ঠিক ঠিক বলে দিলেন। কিছুদিন না বলেই থাকতে চাইছিলাম।
@আল মুরতাহিল,আপনার নিক পাল্টানোর দরকার হলো কেন? কি হয়েছিল?
আর যদি কিছু মনে না করেন, সামুর “ডিজিটালভূত” আর আপনি কি একই ব্যক্তি?