ইসলাম নির্মূলই যেন সেক্যুলারদের প্রধান কর্তব্য
লিখেছেন: ' NerAß AhMed' @ শনিবার, মার্চ ৪, ২০১৭ (২:০৯ অপরাহ্ণ)
মানবাধিকারের দিক থেকেও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের একটা গুরুত্বপূর্ণ দায় ও কর্তব্য হচ্ছে, ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। অথচ বিশ্বাস ধারণের অধিকার, ধর্মপালন, ধর্মচর্চা ও ধর্মপ্রচারের অধিকারের বেলায় বাংলাদেশে আমরা এর ঠিক উল্টাটা দেখছি। ধর্মীয় স্বাধীনতা দূরের কথা, খোদ ধর্মই- বিশেষত: ইসলাম নির্মূল করাই বাংলাদেশের সেক্যুলার তথা ‘আধুনিক’দের কর্তব্য হয়ে উঠেছে। উলামা-মাশায়েখগণ যখন তাঁদের ভাষায় এর প্রতিবাদ করছেন, তখন সমস্বরে আওয়াজ তোলা হচ্ছে, ‘আলেম-উলামাগণ বাংলাদেশকে ধর্মরাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়’। ধার্মিক মুসলমানদের ধর্মীয় অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই-সংগ্রামের গণতান্ত্রিক অধিকার থাকার বিষয়টি কেউই বিবেচনা করতে রাজি না। মুখে গণতন্ত্র, আধুনিকতা, প্রগতি, ধর্মীয় স্বাধীনতার কথা বললেও বাংলাদেশের তথাকথিত সেক্যুলার সমাজ ও রাষ্ট্র, উভয়েই ইসলাম ও ইসলামী প্রতিষ্ঠান নির্মূল করাকেই প্রগতিশীলতা হিসেবে গণ্য করছে। এটা খুবই বিপজ্জনক রাজনৈতিক চর্চা। উলামা-মাশায়েখ ও তৌহিদী জনতার আন্দোলন, প্রতিবাদ, বিক্ষোভ দাবি দাওয়াকে উপেক্ষা বা গৌণ করার ব্যাপারকে এমন পরিস্থিতিতে মোটেও সহজ বা স্বাভাবিক গণ্য করার কোন সুযোগ নাই।
পশ্চিমা বিশ্ব তথা ইউরোপ-আমেরিকার খ্রীস্টান অধ্যুষিত দেশসমূহে ক্ষমতা বা কর্তৃত্ব গির্জার কাছ থেকে রাজনৈতিকদের হাতে চলে গেলেও, সেসব দেশে রাষ্ট্রীয় শক্তিকে খ্রীস্টধর্ম বা খ্রীস্টান ধার্মিকদের প্রতি খড়গগ্রস্ত হতে আমরা দেখি না। বরং বলা যায়, পশ্চিমা আধুনিক দেশসমূহে খ্রীস্টান ধর্মজাযকরা জোরেশোরেই ধর্মকর্ম পালন করছেন এবং ধর্মীয় প্রচারণার কাজ নিজ দেশের গন্ডি পেরিয়ে তৃতীয় বিশ্বের দেশসমূহ পর্যন্ত বিস্তার করতে পারছেন।
অথচ বিশ্বাস ধারণের অধিকার, ধর্মপালন, ধর্মচর্চা ও ধর্মপ্রচারের অধিকারের বেলায় বাংলাদেশে আমরা এর সম্পূর্ণ উল্টাটা দেখছি। ধর্মীয় স্বাধীনতা দূরের কথা, খোদ ধর্মই- বিশেষত ইসলাম নির্মূল করাই বাংলাদেশের সেক্যুলারবাদি ‘আধুনিক’দের কর্তব্য হয়ে উঠেছে। ধর্মচর্চার স্বাধীনতার তর্ক যখন ওঠে, তখন সেটা শুধু সংখ্যালঘু হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীস্টানদের প্রতি সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানরা কীভাবে আচরণ করছে, সেটাই একমাত্র বিবেচনার বিষয় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। যদিও সেটা ধর্মীয় স্বাধীতার প্রশ্ন নয়, বরং সাম্প্রদায়িকতা এবং সামাজিক বিশৃঙ্খলা মোকাবিলার প্রশ্ন।
বিস্ময়কর ব্যাপার হল, সংখ্যাগরিষ্ঠের মানে মুসলমানদের ধর্মচর্চার অধিকার রাষ্ট্র কোন না কোনভাবে ক্ষুর্ণ করছে কিনা, সেটা কৌতুহল হিসাবেও খোঁজার তাগিদ আমাদের সমাজে সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। অর্থাৎ- রাষ্ট্র এবং সেক্যুলারবাদি কথিত আধুনিক সমাজ- উলামা-মাশায়েখ ও ধার্মিক মুসলমানদের অধিকার থাকবার বিষয়টি একেবারেই ভাবতে নারাজ।
সংখ্যাগরিষ্ঠের ধর্মীয় বিশ্বাস, ধর্মচর্চা ও ধর্মপ্রচারণার প্রতি রাষ্ট্রের এমন রূঢ় আচরণ আমাদের রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ঘনিষ্ঠ সেক্যুলার প্রতিবেশী দেশ ভারতেও দেখা যায় না। বরং ভারতের সেক্যুলার সমাজেও দেখা যায়, সংখ্যালঘু মুসলমানরাই নানা নিষ্পেষণ ও নিষ্ঠুরতার শিকার।
তাহলে আমরা এমন উপসংহারে আসতে পারি, সেক্যুলার বা ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থার মানে দাঁড়াচ্ছে, যে কোনভাবে ইসলাম ও মুসলিম চেতনাবোধের বিনাশ সাধন