লগইন রেজিস্ট্রেশন

নারী ও পুরুষের নামাজের পার্থক্য

লিখেছেন: ' pakhi52' @ মঙ্গলবার, মে ১৩, ২০১৪ (১০:৩৬ অপরাহ্ণ)

মেয়েরা পুরুষদের মত সালাত আদায় করবে আহলে হাদীসের অনুসারীগন এই মতের পতিনিধিত্ব করেন। এখান থেকে একটি প্রশ্নের জন্ম নেয়
তাহলে কি এমতের অনুসারীগন ছাড়া বাকী সবাই যুগ যুগ ধরে ভূল করেছেন ?
সাহাবায়ে কেরাম তাবেঈ, তাবে তাবেঈ,আইম্মায়ে কিরাম সহ কেউ কি এবিষয়টি অনুধাবন করেন নি ?

প্রকৃত কথা হচ্ছে হক্ব বাতিলের সংঘাত চিরন্তন -অন্যথায় রাসুল (সঃ) এর স্বর্ণ যুগে তারকারাজীর ন্যায় উজ্জ্বল আদর্শবান সাহাবায়ে-কিরাম, তাবেঈ,তাবে তাবেঈ থেকে শত শত বছরের গবেষক, বিচক্ষণ ইমামদের সর্ব স্বীকৃত কোরআন ও হাদীসের আলোকে নারীদের সালাত পদ্ধতিকে ইদানিং জন্ম নেয়া একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দল কিভাবে পশ্ন বিদ্ধ করতে পারে ? নিম্নে এ বিষয়ে বিশদ আলোচনা করা হলো :

* —–মেয়েদের সালাত পদ্ধতি সম্পর্কে আহলে হক্ব উলামাদে মতামত ——*

সালাত পদ্ধতিতে মহিলাদের ক্ষেত্রে মৌলিক ভাবে দুটি পার্থক্য রয়েছে:

১। সতর কেন্দ্রিক, অর্থাৎ যতটুকু সম্ভব গোপনীয়তার মাধ্যমে মহিলারা সালাত আদায় করবে।

আল্লাহ তা’লা বলেন

وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى وَأَقِمْنَ الصَّلَاةَ وَآتِينَ الزَّكَاةَ وَأَطِعْنَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ إِنَّمَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيُذْهِبَ عَنكُمُ الرِّجْسَ أَهْلَ الْبَيْتِ وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيرًا

“তোমরা গৃহাভন্তরে অবস্থান করবে-মুর্খতা যুগের অনুরূপ নিজেদেরকে প্রদর্শন করবে না।” (সুরা আল আহযাব- আঃ নং ৩৩)

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত হুজুর (সাঃ) এরশাদ করেন “মহিলাদের নিজকক্ষে নামায পড়া বাড়িতে নামায পড়ার তুলনায় উত্তম, আর নির্জন ও অভ্যান্তরিন স্থানে নামায পড়া ঘরে নামায পড়া থেকে উত্তম। ‘‘ [হাদীসটি সহীহ, আবু দাউদ ১/৩৮৩- , মুসতাদরাকে হাকেম ১/৩২৮]

হযরত আয়েশা (রাঃ) রাসুল (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেনঃ- “ওরনা বা চাদর ব্যতিত মহিলাদের নামায কবুল হবেনা।” [আবু দাউদ ১/৪২১ তিরমিজী ২/২১৫-মুসতাদরাকে হাকিম ১/৫১]

হাকেম আবু আব্দিল্লাহ নিসাপুরী (রঃ) স্বীয় কিতাব মুসতাদরাক লিল হাকেমে (৯/২৫১) বলেন মুসলিম (রঃ) এর হাদীস গ্রহন করার শর্ত অনুযায়ী হাদীসটি সহীহ । হাকেম (রঃ) এর উক্ত মতকে ইমাম যাহাবী (রঃ) সমর্থন করেছেন।

উল্লেখিত আয়াত ও হাদীস এ কথার উপর সুস্পষ্ট প্রমান বহন করে মহিলাদের সব সময় পর্দার আড়ালেই থাকা প্রয়োজন । আর নামায ইসলামের অন্যতম একটি বিধান সুতরাং তাহা অধিক পর্দায় হবে ইহাই বিবেকের দাবী।

উপরে আমরা দেখলাম পর্দার ক্ষেত্রে নামাজ পড়ার সময় পুরুষ ও মহিলাদের কি পার্থক্য আছে , এখন আমরা দেখব নামাজ-এর রুকন বা পড়ার পদ্ধতির ক্ষেত্রে পুরুষ মহিলাদের কি পার্থক্য আছে :

২। নামাজ-এর রুকন বা পড়ার পদ্ধতিতে মহিলার পুরুষদের পার্থক্য

চার ধরনের দলীলের আলোকে সংক্ষিপ্ত ভাবে পদ্ধতিগত এই পার্থক্য তুলে ধরা হলো
১। হাদীস শরীফের আলোকে।
২। সাহাবায়ে কেরামের বক্তব্য ও কর্মের আলোকে।
৩। তাবেয়ী ইমাম গনের ঐক্যমত্যের আলোকে।
৪। চার ইমামের ঐক্যমত্যের আলোকে।

১। হাদীস শরীফের আলোকেঃ

নামাজী মহিলার সামনে দিয়ে অতিক্রমকারী ব্যক্তিকে বাধা দিবার লক্ষে করণীয় কি ? রসুল (সা:) এ প্রসংগে বলেন: পুরুষদের জন্য হলো তাসবীহ বলা আর মহিলাদের জন্য হাতে আওয়াজ করা। (সহীহ বুখারী ১/৪০৩)

ইয়াযীদ ইবনে আবী হাবীব (রঃ) বলেন, একবার রাসুল (সঃ) নামাযরত দুই মহিলার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তাদেরকে ( সংশোধনের উদ্দেশ্য) বললেন যখন সিজদা করবে তখন শরীর যমীনের সাথে মিলিয়ে দিবে, কেননা মহিলারা এ ক্ষেত্রে পুরুষদের মত নয়।
(কিতাবুল মারাসিল-ইমাম আবু দাউদ – পৃঃ১১৭)

প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস শায়েখ শুয়াইব আরনাউত (রঃ) হাদীসটির সুত্র সম্পর্কে বলেন, বণর্না কারী প্রত্যেক রাবী সর্ব্বোচ্চ গ্রহনযোগ্য রাবীদের অন্তর্ভুক্ত সুতরাং হাদীসটি “সহীহ”।
( তালীক আলা মারাসিলে আবী দাউদ পৃঃ ১১৭ )

আহলে হাদীসে স্বীকৃত শীর্ষস্থানীয় আলেম নবাব সিদ্দীক হাসান খান বুখারী শরীফের ব্যাখ্যগ্রন্থ ‘‘আওনুল বারী” (১/৫২০) তে লিখেছেন উল্লেখিত হাদীস সকল ইমামের উসুল অনুযায়ী দলীল হিসাবে পেশ করার যোগ্য।
আর এ হাদীসটির উপরই আহলে সুন্নত ও চার মাযহাবসহ অন্যন্যদের আমল চলে আসছে।

উল্লেখ্যঃ- এই সব হাদীসর সমর্থনে মহিলা ও পুরুষদের নামায আদায়ের পদ্ধতিগত পার্থক্য ও ভিন্নতাকে নির্দেশ করে । এমন আরো অনেক হাদীস রয়েছে । পক্ষান্তরে এগুলোর সাথে বিরোধ পুর্ন একটি হাদীস ও কোথাও পাওয়া যাবে না, যাতে বলা রয়েছে যে, পুরুষ ও মহিলার নামাযের পদ্ধতিতে কোন পার্থক্য নেই।

সাহাবায়ে কেরামের বক্তব্যের আলোকেঃ-

হযরত নাফেয় (রহঃ) ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন ওনাকে রাসুল (সঃ) এর যামানায় মহিলদের নামায সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন : “প্রথমত তারা চার পা হয়ে বসত অত পর এক পক্ষ হয়ে বসার জন্য বলা হল।” আসারাট সর্বোচ্চ পর্যায়ের সহীহ।
(জামেউল মাসানীদ-ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) খঃ ১/৪০০)

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। ওনাকে মহিলাদের নামায সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন “মহিলারা বৈঠকে আংগুল সমুহ মিলিয়ে ও সমবেত ভাবে বসবে। (এই হাদীসের সমস্‌ত রাবী সিকাহ- সুতারাং হাদীস সহীহ)
(মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা-খঃ১/২৪২)

তাবেয়ী ইমাম গনের ঐক্যমতের আলোকেঃ-

হযরত হাসান বসরী ও হযরত কাতাদা (রহঃ) বলেন, মহিলারা যখন সিজদা করবে তখন তারা যথাস্ভব জরসড় হয়ে থাকবে। অঙ্গঁ প্রত্যঙ্গঁ ফাঁকা রেখে সিজদা দিবে না, যাতে কোমর উচু হয়ে না থাকে। (সহীহ) (মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক খঃ৩/১৩৭-ইবনে আবী শাইবা ১/৪২)

* কুফাবসীদের ইমামঃ- ইবরাহীম নাখয়ী (রহঃ) বলেন মহিলারা বসা অবস্থায় এক পক্ষ হয়ে বসবে । (সহীহ) (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা খঃ১/৪৩)

* মক্কা বাসীদের ইমাম আতা ইবনে আবী রাবাহ (রহঃ) বর্ণনা করেন মহিলা যখন রুকুতে যাবে অত্যান্ত সংকোচিত ভাবে যাবে এবং হাতদ্বয় পেটের সাথে মিলিয়ে রাখবে। (সহীহ)
(মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক ৩/১৩৭)

খালেদ ইবনে লাজলাজ সিরিয়া বাসীদের ইমাম , তিনি বলেন মহিলাদের আদেশ করা হত, তারা যেন নামাযে দুই পা ডান দিক দিয়ে বের করে নিতম্বের উপর বসে। পুরুষদের মত না বসে । আবরনযোগ্য কোন কিছু প্রকাশিত হয়ে যাওয়ার আশংকায় মহিলাদেরকে এমনটি করতে হয়। (হাসান)
(মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ২/৫০৫)

মোট কথা তাবেয়ী-যুগে যারা ইমাম এবং ইসলামি বিধি বিধানের ক্ষেত্রে অনুসরনীয় তাদের মতামত থেকে প্রমানিত হল যে, মহিলা ও পুরুষদের নামাযের পদ্ধতি অভিন্ন মনে করা সম্পুর্ন ভুল । সাহাবী ও তাবেয়ীদের মতামতের সাথে এই ধারনার কোনই মিল নেই।

চার ইমামের ফিক্বহের আলোকেঃ-

ফিক্বহে হানাফীঃ- ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) এর অন্যতম শাগরেদ ইমাম মুহাম্মদ (রহঃ) বলেন আমাদের নিকট মহিলাদের নামাযে বসার পছন্দনীয় পদ্ধতি হল উভয় পা এক পাশে মিলিয়ে রাখবে, পুরুষের মত এক পা দাঁড় করিয়ে রখবে না। (কিতাবুরল আসার ১/৬০৯)
(আরো দ্রষ্টব্যঃ- হিদায়াঃ ১/১০০-১১০-১১১- ফাতওয়ায়ে শামী ১/৫০৪- ফাতওয়ায়ে আলমগীরি-১/৭৩-)।

ফিক্বহে শাফেয়ীঃ ইমাম শাফেয়ী (রহঃ) বলেন ’’ আল্লাহ পাক মহিলাদের কে পুরো পুরি পর্দায় থাকার শিক্ষা দিয়েছেন । এবং রাসুল (সঃ) ও অনুরুপ শিক্ষা দিয়েছেন। তাই আমার নিকট পছন্দনীয় হল, সিজদা অবস্থায় মহিলারা এক অঙ্গেঁর সাথে অপর অঙ্গঁকে মিলিয়ে রাখবে, পেট উরুর সাথে মিলিয়ে রাখবে এবং সিজদা এমন ভাবে করবে যাতে সতরের অধিক হেফাযত হয়।
(যাখীরা, ইমাম কারাফী ২/১৯৩)

ফিক্বহে হাম্বলীঃ- তাকবীরে মহিলাদের হাত উঠানোর সম্পর্কে ইমাম আহমাদ (রহঃ) বলেন হাত তুলনামুলক কম উঠাবে। ( আল মুগনী -২/১৩৯)

এ পর্যন্ত হাদীস আসারে সাহাবা, আসারে তাবেয়ীন ও চার ইমামের সম্মিলিত সিদ্ধান্তের আলোকে এ কথা সুস্পষ্ট হল যে, পুরুষ ও মহিলার নামাযের অভিন্ন পদ্ধতির পক্ষে কথা বলা আল্লাহ তা’লার মনোনীত ধর্ম ইসলামের মাঝে নিজেকে সংস্কার পন্থী রুপে আবিস্কার করার অপচেষ্টা ছাড়া অন্য কিছুই নয়।

প্রশ্ন পত্রে উল্লেখিত দলীল সমুহের উত্তরঃ-

আপনার প্রথম প্রশ্ন:
১। আবু হুরাইরা (রাঃ) বর্ণনা করেন রাসুল (সঃ) বলেছেন যখন তোমাদের কেউ সিজদা করবে তখন এমন ভাবে বসবে না যেভাবে উট বসে, বরং দু’হাতকে হাঁটুর পুর্বে রাখবে। (আবু দাউদ-১/৮৪০)

উত্তরঃ- বোন, মা, ফুপি- মাহরাম মহিলাদের ক্ষেত্রে শরীয়তের নিষেধাজ্ঞা থাকায় যেমনি ভাবে সুন্দরী হলেই বিবাহ করা যায় না, ঠিক তেমনি – কোরআন ও হাদীসের ব্যাপারে নাসেখ- মানসুখের চিরন্তন বিধান থাকায় হাদীস সহীহ হলেই আমল যোগ্য হয় না। উপরের ভুমিকার দ্বারা আমার বলার উদ্দেশ্য , আপনার প্রথম হাদীস জমহুর উলামাদের দৃস্টিতে মানসুখ (রহিত) এর তালিকায় ।
(বজলুল মাজহুদ -৫/৮৯)

যেই হাদিস দ্বারা উপরের হাদিস মনসুখ হয়েছে, সেটা হলো:
সাদ ইবনে আবী ওককাস (রা:) ওনার পিতা হতে বর্ননা করেন , তিনি বলেন: “আমরা সিজদার সময় হাটুর পূর্বে হাত রাখতাম, পরবর্তিতে আমাদেরকে হাত রাখার পূর্বে হাটু রাখার নির্দেশ দেয়া হয় (সহীহ ইবনে খুজাইমা – ১/৩১৮)

আপনার দ্বিতীয় প্রশ্ন:
২। একদা এক বেদুঈন মহিলা উম্মুল মুমিনীন আয়েশা(রা:) এর সাথে সাক্ষাত করতে এসে তাকে না পেয়ে ফেরার পথে উম্মুল মু’মিনীন হাফসা(রা:) এর কাছে গিয়ে মহিলাদের নামায সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বললেন “নামায আদায়ের নিয়ম পদ্ধতির ব্যাপারে মহিলাদের পৃথক কোনো নিয়মের কথা আমাদেরকে বলা হতো না, তবে রুকুতে , রুকু বাদ দাড়িয়ে, দু সিজদার মাঝে একটু সময় অবস্হান করতে বলা হতো ।

উত্তর: উল্লেখিত কথাগুলোকে যেহেতু আপনি হাদিস নামে উল্লেখ করেছেন, সুতরাং অস্বীকারের দু:সাহস না করে অনুসন্ধানের ত্রুটির উপর দোষ চাপিয়ে অনুরোধের সুরে বলছি , অনুগ্রহ করে কিতাবের নাম, পৃষ্ঠা ও হাদিস নাম্বার উল্লেখ করে দিলে ইনশাল্লাহ প্রমান ভিত্তিক সমুচিৎ জবাব দেয়া হবে ।

আপনার ৩য় প্রশ্ন:
৩। উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়েশা (রা:), হাফসা বিনতে উমার (রা:), মায়মুনা (রা:) দ্বীন সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ উম্মু দারদা (রা:) বুখারী ভাষ্যনুযায়ী এরা পুরুষদের মতো নামায আদায় করতেন ।

উত্তরঃ- উল্লেখিত আপনাদের এই দাবী সম্পূর্ন মিথ্যা,এমন কথা ইমাম বুখারী (রহঃ) স্বীয় কিতাব বুখারী শরীফে বা অন্য কোন কিতাবে কখনই বলেননি বা উল্লেখ করেন নাই। ইহা ইতিহাস সীকৃত শ্রেষ্ট মুহাদ্দীস-ইমাম বুখারীকে মিথ্যার কলংকে কলংকিত করে ওনার লেখনিকে প্রশ্ন বিদ্ধ করার অপপ্রয়াশ মাত্র।

উম্মু দারদা (রাঃ) একজন তাবেয়ী, তিনি নামাযে পুরুষদের ন্যায় বসতেন । নামাযের পদ্ধতিতে একজন তাবেয়ীর আমল যদি দলীল হয়ে থাকে তাহলে ইতিপূর্বে আমরা চার শ্রেনীর দলীলের ভিত্তিতে মহিলাদের নামাযের পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি , যার মাধ্যমে একথা প্রমান হয়েছে যে আয়িম্মায়ে তাবেয়ীন যথাঃ- হাসান বসরি , হযরত কাতাদাহ, ইব্রাহীম নাখয়ী, খালেদ ইবনে লাজলাজ ওনাদের তালীল ও শিক্ষা অনুযায়ী রুকু সিজদা সহ একাধিক আমলের মধ্যে মহিলাদের নামাযের পদ্ধতি পুরুষ থেকে ভিন্ন ছিল। এছাড়া হতে পারে উম্মু দারদা (রাঃ) এবিষয়টি সম্পর্কে অবগত ছিলেন না। অন্যান্য ক্ষেত্রে তিনি মহিলাদের মত ভিন্ন ভাবেই আমল করতেন । সুতরাং শুধু একজন তাবেয়ী মহিলার ব্যক্তিগত আমলকে অগ্রাধিকার দেয়ার ব্যাপারটি যুক্তি যুক্ত ও গ্রহনযোগ্য হতে পারে না।

৩। আপনাদের বক্তব্যের দারাই নামাযে পুরুষ ও মহিলার পদ্ধতি ভিন্ন হওয়া প্রমানিত হয়। কেননা উভয়ের নামাযের পদ্ধতি এক হলে ‘‘পুরুষদের মত নামায, কথাটির কোন অর্থ থাকেনা। সুতরাং একথা স্পষ্ট হয়ে গেল সেই যামানায় পুরুষ ও মহিলার নামাযের পদ্ধতি এক ছিল না।

৪। হযরত আবু হুমাইদ সায়েদী (রাঃ) রাসুল (সাঃ) এর একদল সাহাবীর মধ্যে বলিলেন আমি আপনাদের অপেক্ষা রাসুল (সাঃ) এর নামায অধিক স্বরন রাখিয়াছি। আমি তাহাকে দিখিয়াছি-তিনি যখন•••••••আর বসতেন নিতম্বের উপরে।
আপনাদের দাবীঃ এই হাদীস বলছে শেষ বৈঠকে নিতম্বের উপর বসার কথা। এখানে পুরুষ মহিলা উল্লেখ করা নাই সুতরাং ইহা সকলেরই আমল যোগ্য।

উত্তরঃ- উল্লেখিত হাদীসের মাঝে সাহাবী আবু হুমাইদ সায়েদী (রাঃ) রাসুল (সাঃ) এর নামাযের পদ্ধতি আলোচনা করেছেন। আর রাসুল (সাঃ) পুরুষ ছিলেন । অতপর এখানে পুরুষ মহিলা উল্লেখ করা নাই সুতরাং ইহা সকলেরই আমল যোগ্য এমন হাস্যকর দাবী করা অযোক্তিক নয় কি?

২য় ও ৩য় প্রশ্নের উত্তরঃ
উপরের উল্লেখিত আলোচনা দ্বারা একথা সূর্যের আলোর মত সুস্পষ্ট, হাকীমুল উম্মত মুজাদ্দিদুল মিল্লাত আশরাফ আলী থানভী (রহঃ) এর বেহেশতী জেওর এবং যুগের শ্রেষ্ঠ ফক্বীহ হাসান বিন আম্মার হানাফী (রহঃ) কতৃক লিখিত মারাকীর মত ফেক্বহ শাস্ত্রের অন্যতম গ্রহনযোগ্য কিতাবের ব্যপারে এমন অভিযোগ বা মন্তব্য, পরক্ষভাবে স্বয়ং আল্লাহ তাআলার প্রজ্বলিত দ্বীনের প্রদীপকে মুখের ফুৎকারে নিভিয়ে দেয়ার জন্য ব্যার্থ চেষ্টা মাত্র ।

তথ্যসূত্র:
১। আবু দাউদ ১/৩৮৩- ,
২। মুসতাদরাকে হাকেম ১/৩২৮
৩। তিরমিজী ২/২১৫
৪। বুখারী শরীফ ।
৫। তালীক আলা মারাসিলে আবী দাউদ পৃঃ ১১৭
৬। আওনুল বারী (১/৫২০)
৭। জামেউল মাসানীদ-ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) খঃ ১/৪০০
৮। মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা-খঃ১/২৪২
৯। মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক
১০। হিদায়াঃ ১/১০০-১১০-১১১-
১১। ফাতওয়ায়ে শামী ১/৫০৪-
১২। ফাতওয়ায়ে আলমগীরি-১/৭৩
১৩। যাখীরা
১৪। ইমাম কারাফী ২/১৯৩
১৫। আল মুগনী -২/১৩৯
১৬। বজলুল মাজহুদ -৫/৮৯
১৭। সহীহ ইবনে খুজাইমা – ১/৩১৮

উত্তর দাতা
মোঃ ফরিদুল ইসলাম
উচ্চতর হাদীস গবেষনা বিবাগ
বসুন্ধরা ঢাকা-

পরীক্ষিত এবং অনুমোদিত
মুফতী রফিকুল ইসলাম
হাদিস এবং তফসীর বিভাগের প্রধান
ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার
বসুন্ধরা , ঢাকা – ১২১২
বাংলাদেশ ।

Processing your request, Please wait....
  • Print this article!
  • Digg
  • Sphinn
  • del.icio.us
  • Facebook
  • Mixx
  • Google Bookmarks
  • LinkaGoGo
  • MSN Reporter
  • Twitter
২২৫ বার পঠিত
1 Star2 Stars3 Stars4 Stars5 Stars ( ভোট, গড়:০.০০)