বিশ রাকায়াত তারাবীহ নামায সহীহ হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত
লিখেছেন: ' ১.৯২.৫' @ মঙ্গলবার, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৩ (৯:১৪ পূর্বাহ্ণ)
তারাবীহ নামায কত রাকায়াত পড়তে হবে? মূলতঃ তারাবীহ নামায বিশ রাকায়াতই পড়তে হবে। কারণ, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং হযরত খুলাফায়ে রাশিদীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারাসহ সকল ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা ও চার মাযহাবের ইমামগণ উনারাসহ সকল ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা ২০ রাকায়াত তারাবীহ আদায় করেছেন।
হাদীছ শরীফ এ ইরশাদ হয়েছে, “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, “নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিশ রাকায়াত তারাবীহ নামায পড়তেন বিতর নামায ব্যতীত। অর্থাৎ তারাবীহ বিশ রাকায়াত এবং বিতর তিন রাকায়াত মোট তেইশ রাকায়াত।” (মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বা)
হাদীছ শরীফ এ ইরশাদ হয়েছে, “হযরত ওমর ইবনুল খত্তাব আলাইহিস সালাম, হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম এবং অন্যান্য সাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের থেকে বর্ণিত, তারাবীহ নামায বিশ রাকায়াত।” (তিরমিযী শরীফ)
ইমাম বায়হাক্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি সহীহ সনদে বর্ণনা করেছেন যে,“হযরত ওমর ইবনুল খত্তাব আলাইহিস সালাম, হযরত উছমান যূন নুরাইন আলাইহি সালাম, হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম উনারা সকলেই বিশ রাকায়াত তারাবীহ নামায আদায় করেছেন।
হযরত ইয়াযীদ ইবনে রূমান রহমতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন, “হযরত উমর ইবনুল খত্তাব আলাইহি সালাম উনার খিলাফতকালে হযরত সাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা তারাবীহ নামায ও বিতর নামাযসহ ২৩ রাকায়াত পড়তেন।” (মুয়াত্তায়ে ইমাম মালিক)
হযরত আব্দুর রহমান সু’লামী রহমতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন, “হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম কুরআন শরীফ এর জ্ঞান সম্পন্ন ব্যক্তিদেরকে ডেকে একত্রিত করে একজনকে ইমামতি করার নির্দেশ দিয়ে বললেন, তারাবীহ নামায বিশ রাকায়াত পড়াবেন।” (বায়হাক্বী শরীফ)
হযরত আবুল হাসান রহমতুল্লাহি উনার থেকে বর্নিত আছে, “হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম একজন সাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে ইমাম নিযুক্ত করে উনাকে নির্দেশ দিলেন, তারাবীহ নামায বিশ রাকায়াত পড়াবেন।” (মুছান্নাফ-ইবেন আবী শায়বা)
হযরত যায়িদ ইবনে ওহাব রহমতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন, “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু রমাদ্বান শরীফ মাসে তারাবীহ নামায পড়াতেন। হযরত আ’মাশ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তিনি বিশ রাকায়াত তারাবীহ নামায পড়াতেন এবং তিন রাকায়াত বিতর পড়াতেন।”
হাদীছ শরীফ এ ইরশাদ হয়েছে, “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিশ রাকায়াত তারাবীহ নামায পড়তেন বিতর নামায ব্যতীত। অর্থাৎ তারাবীহ বিশ রাকায়াত এবং বিতর রাকায়াত মোট তেইশ রাকায়াত।” (মুছান্নাফ- ইবনে আবী শায়বা)
হাদীছ শরীফ এ আরো ইরশাদ হয়েছে, “হাফিযুল হাদীছ, ইবনে হাজর আসকালানী রহমতুল্লাহি আলাইহি, ইমাম রাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণনা করেন, নিশ্চয়ই সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি লোকদের সাথে দু’রাত্রি বিশ রাকায়াত তারাবীহ নামায পড়লেন। যখন তৃতীয় রাত্রি আসলো, তখন লোকজন একত্রিত হলো, কিন্তু হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের নিকট আসলেন না। অতঃপর বললেন, আমারা আশংকা হচ্ছে যে, এটা আপনাদের উপর ফরয যায় কিনা। আর যদি এটা ফরয হয়ে যায়, তাহলে আপনারা তা আদায় করতে সক্ষম হবেন না।” এই হাদীছ শরীফ খানা সহীহ হওয়ার ক্ষেত্রে সকলেই একমত। (তালখীছুল হাযির ফি তাখরীজে আহাদীছির রাফিয়িল কাবীর, অনুরূপ লামিউদদুরারী শরহে ছহীহিল বুখারী, মিরকাত শরহে মিশকাতে বর্ণিত আছে)
হযরত সায়িব ইবনে ইয়াযীদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, “আমরা আমীরুল মু’মিনীন হযরত উমর ইবনুল খত্তাব আলাইহিস সালাম উয়ার খিলাফতকালে বিশ রাকায়াত তারাবীহ নামায পড়েছি ও বিতর নামায পৃথক আদায় করেছি।” (সুনানুল মা’রিফাহ লিল বায়হাক্বী, তা’লীকুল হাসান, ই’লাউস সুনান, তাহাবী শরহে মায়ানিয়িল আছার)
হযরত ইয়াহইয়া ইবনে সায়ীদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত- নিশ্চয়ই হযরত উমর ইবনুল খত্তাব আলাইহিস সালাম তিনি এক ব্যক্তিকে সকল লোকদের নিয়ে বিশ রাকায়াত তারাবীহ নামায পড়ার আদেশ দিয়েছেন। (মুছান্নিফ ইবনে আবী শা’ইবা, ই’লাউস সুনান, ফিক্বহুস সুনানে ওয়াল আছার, ফাতহুল মুলহিম শরহে মুসলিম)
মুহম্মদ ইবনে কা’ব রহমতুল্লাহি উনার থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, “লোকেরা (হযরত সাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম) আমীরুল মু’মিনীন হযরত উমর ইবনুল খত্তাব আলাইহিস সালাম উনার যামানায় (খিলাফতকালে) রমাদ্বান শরীফ মাসে বিশ রাকায়াত তারাবীহ নামায পড়েন।” (ক্বিয়ামুল লাইল, পৃষ্ঠা-৯১)
হযরত আবুল হাসানা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, “নিশ্চয়ই হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম তিনি এক ব্যাক্তিকে সকলকে নিয়ে পাঁচ তারবীহা অর্থাৎ বিশ রাকায়াত তারাবীহ নামায পড়ার নির্দেশ দেন।” (সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী, অনুরূপ মুছান্নিফ ইবনে আবী শাইবা, আল জাওহারুন নক্বী, কানযূল উম্মাল, ই’লাউস সুনান, উমদাতুল ক্বারী, আইনী শরহে বুখারীতে বর্ণিত আছে)
হযরত সায়িব ইবনে ইয়াযীদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, “লোকেরাহযরত উমর ইবনুল খত্তাব আলাইহিস সালাম উনার খিলাফতকালে বিশ রাকায়াত তারাবীহ নামায পড়তেন। অনুরূপ হযরত উছমান যিন নুরাইন আলাইহিস সালাম ও হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম উনাদের খিলাফতকালে বিশ রাকায়াত তারাবীহ নামায পড়া হতো।” (আইনী শরহে বুখারী, উমাদাতুল ক্বারী শরহে বুখারী, ফাতহুল মুলহিম শরহে মুসলিম)
হযরত আব্দুল আযীয ইবনে রফী’ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, “হযরত উবাই ইবনে কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু মদীনা শরীফ-এ রমাদ্বান শরীফ মাসে বিশ রাকায়াত তারাবীহ ও তিন রাকায়াত বিতর নামায পড়েন।” (মুছান্নিফ ইবনে আবী শাইবা, অনুরূপ আছারুস সুনান, তা’লীকুল হাসান, ই’লাউস সুনান, ফিক্বহুস সুনানে ওয়াল আছার, ফতহুল মুলহিম শরহে মুসলিম, বজলুল মাজহুদ শরহে আবী দাউদে উল্লেখ আছে)
হযরত আবূ খছীব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, “হযরত সুয়াইদ ইবনে গাফলাহ রহমতুল্লাহি তিনি রমাদ্বান শরীফ মাসে আমাদেরকে নিয়ে পাঁচ তারবীহা অর্থাৎ বিশ রাকায়াত নামায পড়েন।” (সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী, মুছান্নিফ ইবনে আবী শাইবা, আল্ জাওহারুন নক্বী, আছারুস সুনান, ই’লাউস সুনান, বজলুল মাজহুদ, শরহে আবূ দাউদ)
হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম উনার এক সাথী হযরত শুতাইর ইবনে শেকাল রহমতুল্লাহি আলাইহি রমাদ্বান শরীফ মাসে তারাবীহ ও তিন রাকায়াত বিতর নামায পড়েন।” (সুনানুল কুবরা লিল বাইহাক্বী, মুছান্নিফ ইবনে আবী শাইবা, আল জাওহারুন নক্বী, মিরক্বাত শরহে মিশকাতে উল্লেখ আছে)
হযরত সায়িদ ইবনে উবাইদ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, “নিশ্চয়ই হযরত আলী ইবনে রুবাইয়াহ রমাদ্বান শরীফ মাসে লোকদের নিয়ে বিশ রাকায়াত তারাবীহ ও তিন রাকায়াত বিতর নামায পড়েন।” (মুছান্নিফ ইবনে আবী শাইবা, অনুরূপ আছারুস সুনান, ফিক্বহুস সুনানে ওয়াল আছার, ই’লাউস সুনান, বজলুল মাজহুদ শরহে আবূ দাউদে উল্লেখ আছে)
হযরত আতা ইবনে আবী রিবাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, “আমি লোকদের এরূপ অবস্থায় পেয়েছি যে, উনারা বিতরসহ তেইশ রাকায়াত তারাবীহ নামায পড়েন।” (মুছান্নিফ ইবনে আবী শাইবা, অনুরূপ আছারুস সুনান, ক্বিয়ামুল লাইল, লাইলুল আওতার, ফিক্বহুস সুনানে ওয়াল আছার, ফাতহুল বারী শরহে বুখারী)
হযরত ইমাম নাফে’ রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, “হযরত ইবনে আবী মুলাইকাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি, রমাদ্বান শরীফ মাসে আমাদেরকে নিয়ে বিশ রাকায়াত তারাবীহ নামায পড়েন।” (মুছান্নিফ ইবনে আবী শাইবা, অনুরূপ আছারুস সুনান, ফিক্বহুস সুনানে ওয়াল আছারে উল্লেখ আছে)
হযরত আবু ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি হযরত হারিস রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণনা করেন, “তিনি রমাদ্বান শরীফ মাসে লোকদের ইমামতি করাতেন ও বিশ রাকায়াত তারাবীহ ও তিন রাকায়াত বিতর নামায পড়াতেন।” (মুছান্নিফ ইবনে আবী শাইবা)
হযরত আবুল বুখতারী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত, “তিনি রমাদ্বান শরীফ মাসে পাঁচ তারবীহা অর্থাৎ বিশ রাকায়াত তারাবীহ ও তিন রাকায়াত বিতর নামায পড়তেন।” (মুছান্নিফ ইবনে আবী শাইবা)
হাফিযুল হাদীছ, ইবনে আব্দুল বার রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, হারিছ ইবনে আব্দুর রহমান ইবনে আবু জুবার রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত সায়িব ইবনে ইয়াযীদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, “আমীরুল মু’মিনীন, হযরত উমর ইবনুল খত্তাব আলাইহিস সালাম উনার সময় তেইশ রাকায়াত তারাবীহ নামায পড়া হতো। হযরত আব্দুল বার রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, উহার তিন রাকায়াত বিতর নামায।” (আইনী শরহে বুখারী)
হযরত সাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা, হযরত উবাই ইবনে কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার ইমামতিতে যে তারাবীহ নামায আদায় করেন, জমহুর আলিমগণ উনাদের প্রসিদ্ধ মতে, তা দশ সালামে বিশ রাকায়াত। আর উহা মূলতঃ পাঁচ তারবীহাত। প্রত্যেক চার রাকায়াতে এক তারবীহা যা দুই সালামে আদায় করেন বিতর ব্যতীত। আর বিতর হলো তিন রাকায়াত।” (ইরশাদুল সারী শরহে ছহীহিল বুখারী)
আল্লামা ইবনে হাজর মক্কী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন, সাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা সকলেই একমত যে, তারাবীহ নামায বিশ রাকায়াত।
তারাবীহ নামায বিশ রাকায়াত এ বিষয়ে কোন সাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু দ্বিমত পোষণ করেন নি। হযরত উবাই ইবনে কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি এই কথা বর্ণনা করেছেন- বিশ রাকায়াত তারাবীহ। এটাই সহীহ বর্ণনা। (উমাদুল ক্বারী, শরহে বুখারী)
তারাবীহ নামায ৮ রাকায়াত বলে তারা যে হাদীছ শরীফখানার বুলি আওড়ায় সে হাদীছ শরীফ খানা বুখারী শরীফ প্রথম জিলদ ১৫৪ পৃষ্ঠায় বর্ণিত। হযরত আবূ সালমাহ ইবনে আব্দুর রহমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনাকে জিজ্ঞাস করলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি রমাদ্বান শরীফ মাসে ও রমাদ্বান শরীফ মাস ব্যতীত অন্য মাসে এগার রাকায়াতের অধিক নামায পড়তেন না। আর তিনি তা চার রাকায়াত করে পড়তেন।
উপরোক্ত হাদীছ শরীফ-এ রমাদ্বান শরীফ মাসের সাথে সাথে রমাদ্বান শরীফ মাস ব্যতীত অন্য মাসে একথাও উল্লেখ আছে। অর্থাৎ বলা হয়েছে, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অন্য মাসে যেরূপ এগার রাকায়াত নামায পড়তেন তদ্রুপ রমাদ্বান মাসেও এগার রাকায়াত নামায পড়তেন। এখন প্রশ্ন হলো, রমাদ্বান শরীফ মাসে না হয় তারাবীহ নামায পড়েছেন কিন্তু রমাদ্বান শরীফ মাস ব্যতীত অন্য মাসে তারাবীহ নামায পড়বেন কিভাবে? তারাবীহ নামায তো শুধু রমাদ্বান শরীফ মাসে পড়তে হয়।
মুলতঃ এ হাদীছ শরীফ-এ তারাবীহ নামাযের কথা বলা হয়নি বরং তাহাজ্জুদ নামাযের কথা বলা হয়েছে। কেননা মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সারা বছরই তাহাজ্জুদ নামায আদায় করতেন। এ প্রসংগে বিখ্যাত মুহাদ্দিছ আল্লামা শায়খ শামসুদ্দীন কিরমানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, “উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি উক্ত হাদীছ শরীফ দ্বারা তাহাজ্জুদ নামাযকে বুঝানো হয়েছে। হযরত আবূ সালমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার প্রশ্ন ও উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার জওয়াবে তাহাজ্জুদ নামাযের সাথে সম্পৃক্ত ছিল।” (কাওকাবুদ দুরারী শরহে বুখারী)
উক্ত হাদীছ শরীফ এর ব্যাখ্যায় ইমামুল মুহাদ্দিছীন হযরত শাহ আব্দুল হক মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন। “বিশুদ্ধ বা সহীহ মত এটাই যে, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিতরসহ যে এগার রাকায়াত নামায পড়েছেন, তা তাহাজ্জুদ নামায ছিল” (আশয়াতুল লুময়াত)
আর হুজ্জাতুল ইসলাম, ইমাম গাজ্জালী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ব্যাখ্যায় বলেন, “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক, তিন, পাঁচ, সাত, নয় এবং এগার রাকায়াত বিতর নামায আদায় করতেন। তের রাকায়াতের বর্ণনাটি পরিত্যাজ্য, আর একখানা হাদীছ শরীফ এর মধ্যে সতের রাকায়াতের কথাও উল্লেখ আছে। আর এসকল নামাযের রাকায়াত যার সাথে আমি বিতর শব্দটি ব্যবহার করেছি, তা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাত্রি বেলায় আদায় করতেন।আর এটাই হলো তাহাজ্জুদ নামায।” (ইহইয়াউ উলুমিদ্দীন)
উপরোক্ত নির্ভরযোগ্য আলোচনা দ্বারা এটাই প্রমাণিত হলো যে, হযরত আবূ সালমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্নিত বুখারী শরীফ এর হাদীছ শরীফ খানা তারাবীহ নামাযের পক্ষে মোটেও দলীল হিসেবে গ্রহনযোগ্য নয় বরং তা তাহাজ্জুদ নামাযের দলীল হিসেবে গ্রহনযোগ্য।
বৃটিশদের দালাল আহলে হদস খুজে পায় না দলিল ।ওদেরকে দেখান। জাযাকাল্লাহ
যারা সার্বিক জীবনে কুরআন ও সহীহ হাদীস মেনে চলে, তাদেরকে আহলে হদস বলার শিক্ষা কাদের নিকট থেকে পেয়েছেন? অবশ্যই ইয়াহুদী ও তাদের মত যারা তাদের নিকট থেকে। উপরের রেফারেন্সগুলি দ্বারা বুঝা যাচ্ছে যে, তা সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত? আহলে হাদীসরা বলছে, কুরআন ও হাদীসের দিকে আসুন। আর আপনারা বলছেন, না আমরা আমাদের বাপ-দাদারা যা করে গেছেন, তারেই অনুসরণ করব। যেমন মক্কার কাফেররা বলত।
তাই আসুন, সঠিককে সঠিক বলি আর অঠিককে অঠিক বলি।