মহানবী (সাঃ) এর কথা ও মর্মকথা – ৩
লিখেছেন: ' রাশেদ' @ রবিবার, জুন ২০, ২০১০ (৯:১৬ পূর্বাহ্ণ)
আবু জেহেলরা নবুওয়াতের প্রমাণস্বরূপ দেখতে চেয়েছিল দ্বিখণ্ডিত চন্দ্র। আল্লাহপাকের অসীম করুণায় নবী (সাঃ)
এর অঙ্গুলি সংকেতে চাঁদ যখন সত্যই দ্বিধাবিভক্ত হয়ে আকাশের দুই প্রান্তে অবস্থান নিলো, আবু জেহেলদের কোন
পরিবর্তন হয়নি। তারা তখন বললো, আবদুল্লাহর ছেলে একজন বিরাট বড় যাদুকর। সত্যপ্রত্যাখ্যানকারীরা এইরকমই
বলে। যারা মহাসত্যের প্রতি উদাসীন ও বধির, তারা কোন কিছুতেই প্রভাবিত হয় না। মিথ্যা ছাড়া অন্যদিকে তাদের
অনুরাগ জন্মে না। এইতো এই শতাব্দীর ১৯৩২ সালের একটি ঘটনা, বাগদাদে অবস্থিত দু’জন সাহাবীর সমাধি থেকে
পবিত্র লাশ স্বপ্নাদিষ্ট হয়ে উত্তোলন করলেন তৎকালীন বাদশাহ। সারা পৃথিবীর লক্ষ লক্ষ মানুষ স্বচক্ষে অবলোকন
করলো এই ঘটনা। তের’শ বছর পূর্বে পরলোকগত ও সমাহিত হজরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রাঃ) ও হজরত
হুজাইফা (রাঃ) সাহাবীদ্বয়ের পবিত্র দেহ হুবহু জীবিত মানুষের মতোই জীবন্ত অবিকৃত এবং চোখ দুটি খোলা, যা থেকে
বিচ্ছুরিত হচ্ছে জ্যোতি। ইরাকের এই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এখনো কেউ কেউ জীবিত। কিন্তু এমন ঘটনার পরেও মূঢ়
অবিশ্বাসীদের অন্তর কি কিছুমাত্র দ্রবীভূত হয়েছে?
অতি সম্প্রতি মরিস বুকাইলি তাঁর ‘বাইবেল কোরআন ও বিজ্ঞান’ এবং ‘মানুষের আদি উৎস’ গ্রন্থদ্বয়ে কী অকাট্যভাবেই
না চোখে আঙ্গুল দিয়ে বিশ্ববাসীকে দেখিয়ে দিলেন যে, কোরআন যথার্থই একটি ঐশী গ্রন্থ, যার প্রতিটি শব্দ ও বাক্য ও
সিদ্ধান্ত সর্বতোভাবে নির্ভুল ও অভ্রান্ত। মাইকেল হার্ট ‘The Hundreds’ শীর্ষক যে অসাধারণ একটি গ্রন্থ প্রণয়ন
করেছেন, সেখানে বিস্তর চিন্তাভাবনা ও গবেষণার পর হার্ট এই সঠিক সিধান্তে উপনীত হতে বাধ্য হয়েছেন যে, মহানবী (সাঃ)-ই
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব। হার্টের এই সিদ্ধান্ত কি ভুল? এবং এইতো কিছুদিন মাত্র আগে Professor Bruce
Lawrence একটি বই লিখেছেন, বইটির নাম “Defenders of God the Fundamentalist Revolt against the
Modern Age”। ডিউক ইউনিভার্সিটির এই অধ্যাপক বইটিতে উল্লেখ করেছেন – অন্যতম চন্দ্রবিজয়ী নীল আর্মস্ট্রং চন্দ্রে
অবতরণের মুহূর্তে একটি অদ্ভুত শব্দ শুনেছিলেন। পৃথিবীতে প্রত্যাবর্তনের পর যুক্তরাষ্ট্র সরকার কর্তৃক মিশরে এক শুভেচ্ছা
সফরে প্রেরিত এই আর্মস্ট্রং কায়রোর রাস্তা দিয়ে যখন হাঁটছিলেন, অকস্মাৎ চন্দ্রপৃষ্ঠে শ্রুত সেই শব্দ হুবহু আবার শুনতে
পেলেন। কোন এক পথচারীর নিকট থেকে তিনি জানলেন, সেটা পার্শ্ববর্তী মসজিদ থেকে প্রচারিত আযানের ধ্বনি। কালক্ষেপ
না করে নীল আর্মস্ট্রং মুসলমান হয়ে গেলেন। কিন্তু দেশে ফিরে যখন তিনি তাঁর এই ধর্মান্তরিত হবার কথা বললেন, প্রচণ্ড
হুমকি এলো, তাঁর পদ পদবি চাকুরীসহ সকল সুবিধা কেড়ে নেয়া হবে। অধ্যাপক ব্রুস লিখেছেন, নবদীক্ষিত আর্মস্ট্রং এখন
‘জাকিয়া’ অর্থাৎ আপন ধর্মবিশ্বাসকে আপাতত গোপন রেখে জীবন নির্বাহ করছেন। ব্যক্তিস্বাধীনতা ও মানবাধিকার, চিন্তা ও
মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের অতন্দ্র প্রহরী ও প্রবক্তা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপযুক্ত ব্যবহারই বটে!
উদাহরণের অভাব নেই। চোখে আঙ্গুল দিয়ে কত পুনঃপুনঃই – না মানুষকে আল্লাহপাক তাঁর সার্বভৌম শক্তি ও অস্তিত্বের
কথা অবহিত করেছেন; কিন্তু দুর্মর পথভ্রষ্টদের আদৌ কোন ভাবান্তর ঘটে না। ঘটার কথাও নয়, কারণ আল্লাহ নিজেই
বলেছেন, ‘পৃথিবীতে যারা অন্যায়ভাবে দম্ভ করে বেড়ায়, তাদের দৃষ্টি আমি আমার নিদর্শন থেকে ফিরিয়ে রাখবো,
তারা আমার কোন নিদর্শনই বিশ্বাস করবে না এবং সৎপথ দেখলেও তাকে পথ বলে গ্রহণ করবে না’। কিন্তু পৃথিবীর
এই লক্ষ্যভ্রষ্ট মানুষেরা যেদিকেই ধাবিত হোক, যেমন ইচ্ছা ‘মুক্তবুদ্ধির’ চর্চা করুক, আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল (সাঃ)-এর
কথাই যে সর্বাংশে সত্য তা প্রমাণিত হচ্ছে, এবং আরো উত্তমভাবে অচিরেই প্রমাণিত হবে।
অদ্যাবধি প্রাপ্ত সকল বস্তুর মধ্যে ইউরেনিয়ামই সর্বাপেক্ষা ভারি, এক ঘনফুট ইউরেনিয়ামের ওজন প্রায় চৌদ্দ মন।
পেপারওয়েট তৈরীর পক্ষেই ইউরেনিয়াম খুবই উপযুক্ত। কিন্তু বিজ্ঞানীরা যখন বললেন, এই কৃষ্ণবর্ণ পদার্থটির অভ্যন্তরে
নীরবে নিঃশব্দে পুঞ্জিভূত রয়েছে এক বিস্ময়কর ও কল্পনাতীত ও অপরিমেয় পারমাণবিক শক্তি, তখনই তার প্রকৃত
পরিচয় পাওয়া গেল। পৃথিবী জানতে পারলো যে, ইউরেনিয়াম এমন এক মহাশক্তির আধার যে, পেপারওয়েট কি অন্য
কোন সাধারণ উদ্দেশ্যে তার ব্যবহার সমূহ মূঢ়তা। মানুষও প্রকৃতপক্ষে এইরকমই; সৃষ্টিকর্তা তার মধ্যে লুক্কায়িত
রেখেছেন এক অপরিমিত তেজ, এক অনিঃশেষ ভবিষ্যত। সে না পেপারওয়েট, না কচুরিপানা পরিকীর্ণ এঁদো পুকুরের
পাঁতিহাস। পৃথিবীর এই আপাত দৃশ্যমান মুক্তাঙ্গনে বিচরণশীল মনুষ্য নামক দ্বিপদ প্রাণীটির যে কী মূল্য ও মর্যাদা, তা
বস্তুতই কল্পনাতীত। আল্লাহপাক তাকে সৃষ্টি করেছেন তাঁর একান্ত প্রতিনিধিরূপে। অথচ কী পরিহাস কী কৌতুক, অবিশ্বাসী
ও অস্বীকারকারী ও অতিবুদ্ধিমানেরা কেবল আত্মহননেই লিপ্ত। মুক্ত ও নিঃশর্ত জীবনাচার তাদের এত প্রিয়, এবং রহস্যময়
নিম্নভাগ থেকে এই অক্লান্ত ডুবুরি সম্প্রদায় এত প্রচুর ‘গুগলি’ ও ‘শামুক’ সঞ্চয় করেছে যে, সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত সর্বোচ্চ মর্যাদার
প্রতি অন্ধ ও উদাসীন ও অমনস্ক এই জ্ঞান ও গবেষণা জর্জরিত বিশ্বাসহীন মানুষেরা বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের শ্রেষ্ঠতম সৃষ্টি হিসেবে
নয়, বরং ডারউইন কথিত লাঙ্গুলবিশিষ্ট চদুষ্পদ শাখামৃগের অধঃস্তন বংশধর বলে ভাবতে পুলক বোধ করে। ‘শিক্ষিত’
‘সভ্য’ ও ‘আধুনিক’ ‘বিজ্ঞ’ ও ‘বিদগ্ধ’ প্রগতিবাদীদের উপযুক্ত সিদ্ধান্ত এবং আত্মপরিচয়ই বটে। সত্যই অধঃপাতের কোন
সীমা নেই! এমন আত্মভ্রষ্ট দুর্মতিগ্রস্ত মানসিক রোগীদের কাছে নবী মোহাম্মদ (সাঃ) এর বিশ্বস্ত আহবান যদি উপেক্ষিত
কি অগ্রাহ্য না হয়, তাহলে আর কাদের আপ্যায়নের জন্য আল্লাহপাক জাহান্নামকে প্রস্তুত রেখেছেন?
অবিশ্বাসীরা হয়ত বলবে পরকাল অনেক দূরবর্তী প্রসঙ্গ, তা নিয়ে পার্থিব এই মধুর জীবনটাকে বিচলিত করে লাভ নেই।
বরং পৃথিবীবক্ষে জীবনের যে বাস্তব দাবী সেইদিকে দৃষ্টিপাত করা আবশ্যক। অবিশ্বাসীদের এই বক্তব্য কথঞ্চিত
প্রণিধানযোগ্য বলেই প্রশ্ন করি – আল্লাহপাক যা বলেছেন, আল্লাহর নবী (সাঃ) যে-সকল বিষয়ে সাবধান করেছেন, তার
মূল্য কি কেবল পারলৌকিক কল্যাণ-অকল্যাণের মধ্যেই সীমাবদ্ধ? জাগতিক প্রেক্ষাপটে তার কার্যকারিতা কি খুবই
অকিঞ্চিতকর ও গৌণ? যদি তাই হয়, তাহলে অন্তত অবিশ্বাসের একটা হেতু খুঁজে পাওয়া সম্ভব। কিন্তু কার্যত এ-রকম
তো নয়ই, বরং পৃথিবীতে মানুষ জেনে না-জেনে স্বেচ্ছায় কি অনিচ্ছায় এখনো যেখানে যেটুকু উৎকৃষ্ট বোধ কি জীবনাচার
আঁকড়ে ধরে আছে, তা সবই ইসলামের অবদান; এবং যা কিছু অশুভ অহিতকর তা সবই ইসলামের সুস্পষ্ট বিধানমতে
নিষিদ্ধ। এমন একটিও দৃষ্টান্ত এই পৃথিবী তুলে ধরতে সক্ষম নয়, যা যথার্থই উত্তম কিন্তু ইসলামে নেই, এবং যা যথার্থই
ক্ষতিকর ও মানব-বৈরী কিন্তু ইসলামে আছে।
ইসলাম একটি সর্বাঙ্গসুন্দর ও পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান এবং নবী (সাঃ) সেই সর্বোত্তম বিধানেরই এক নিখুঁত ও যথাযথ ও
বিশ্বস্ত প্রতিবিম্ব। অর্থসম্পদের একনিষ্ঠ ক্রীতদাস ও ক্ষমতালিপ্সু ও স্বার্থান্ধ এই পৃথিবীর পক্ষে অনুধাবন করা কঠিন যে,
নবী (সাঃ) কত বড় এবং তাঁর প্রদর্শিত পথ সর্বকালের সকল মানুষের জন্যই কত সুন্দর ও কল্যাণকর ও শান্তিময়।
নিন্দুকেরা কখনো সত্য বলে না, যা বলে তা কোন-না-কোন হীন উদ্দেশ্য অথবা পশুপ্রবৃত্তিচালিত নিষিদ্ধকথা। নাহলে
পৃথিবীর সঙ্গে মিলিয়ে মিলিয়ে অবিশ্বাসীরা তাদের নিজস্ব অভিজ্ঞতা থেকেই বলতো, ইসলাম যা অনুমোদন করে তা
আশীর্বাদ, যা করে না তা সবই নিখাদ অভিশাপ; বলতো, সর্ববিষয়ে ইসলাম যে সীমারেখা চিহ্নিত করে, তার বাইরে
গিয়ে দাঁড়ানো আক্ষরিক অর্থেই এক নরককুণ্ডে নিক্ষিপ্ত হওয়া।
একটি দু’টি উদাহরণ সহযোগে বিষয়টি বিবেচনা করতে পারি। ‘মানবাধিকার’ আধুনিক পৃথিবীর একটি অন্যতম জরুরি
উপাদান, ‘গণতন্ত্রও’ একইরকম জরুরি। এবং ‘সর্বরোগের মহৌষধ’ এই দুই কল্যাণবটিকার এত বিপুল ভক্ত ও দালাল
সারা পৃথিবীময় ছড়িয়ে আছে যে, এর বিভ্রান্তিকর ‘মহত্ব’ পরিহারের উপায় নেই। কিন্তু আজ এই দুটি বিষয় যেভাবে গৃহীত
এবং তার যে প্রায়োগিক রূপ, তার মধ্যে আসলে বিরাজ করছে ফাঁকি ও প্রতারণার এক বিশাল গহবর। মানবাধিকার
কি গণতন্ত্রের ছদ্মবেশে মানুষের অধিকারকে হরণ করাই বর্তমান পৃথিবীর যে কোন রাষ্ট্রীয় প্রক্রিয়ার চরিত্র-বৈশিষ্ট। না-হলে
ইরাকের শিশুবৃদ্ধদের উপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ সম্ভব হতো না; তীব্রতম ও ‘ফলপ্রসূ’ মার্কিনী আক্রমণের সংবাদ পেয়ে
প্রেসিডেন্ট বুশ অলিন্দে পায়চারি করতে করতে বলতে পারতো না, ‘আমি পরিতৃপ্ত’। এবং আরো আগে সদ্য-আবিষ্কৃত
আণবিক বোমার প্রকৃত শক্তি ও ক্ষমতা আসলেই কতখানি, তা নির্ভুলভাবে নিরূপণের জন্য ট্রুম্যান জাপানের সর্বাপেক্ষা
জনবহুল দুটি নিরপরাধ নগরবাসীকে লক্ষ্যস্থল হিসাবে বেছে নিতে পারতো না। এবং সোভিয়েত সরকারই কি পারতো
তার দেশবাসীকে অভুক্ত রেখে বোমা-বানানোর বর্বর প্রতিযোগিতায় নামতে? সত্যই সর্বমানবিক দায়িত্ববোধ ও প্রেমের
এমন ‘উৎকৃষ্ট’ দৃষ্টান্ত আর হয় না! অথচ মহানবী (সাঃ) দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে ঘোষণা করেন, শিশু বৃদ্ধ ও তপস্যারত কোন শত্রু,
ফলদায়িনী কোন বৃক্ষ, শস্যক্ষেত্র, এ-সবকিছুর উপরে তরবারি উত্তোলন সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। তিনি কেবল ধর্মীয় কি আধ্যাত্মিক
নেতা ছিলেন না, বহু যুদ্ধেও তাঁকে অংশগ্রহণ করতে হয়েছে, এবং তিনি স্পষ্ট ও যথাযথভাবে তুলে ধরেছেন তাঁর এই
যুদ্ধনীতির বাস্তব ও ব্যবহারিক প্রয়োগ। নীতি হিসাবে কোনটা ভালো, কোনটা গ্রহণযোগ্য, কোনটা মানবসম্প্রদায়ের জন্য
উপকারী ও কাম্য ও অনুসরণীয়?
আসলেই একালে ‘মানবাধিকার’ একটি কৃত্রিম ও লোকঠকানো শ্লোগান মাত্র, যা খুব উচ্চৈস্বরে নিনাদিত হচ্ছে বটে কিন্তু
প্রকৃতপক্ষে তা একটি অসার ও অন্তঃসারহীন হ্রেষারব। যথাযথ মানবাধিকার কী জিনিস তার অকৃত্রিম ঘোষণা ও সর্বোত্তম
ব্যবহারিক দৃষ্টান্ত কেবল ইসলামের মধ্যেই সার্থক রূপ পরিগ্রহ করেছে। কারণ কথার মাধুরি দিয়ে নয়, কাজ দিয়ে জীবন
দিয়ে মানবপ্রেমকে প্রতিষ্ঠা করাই প্রকৃত মানবাধিকার; নবী (সাঃ) ও তাঁর অনুসারীরা সেই দৃষ্টান্তই পুনঃপুনঃ স্থাপন করেছেন।
মানুষের প্রতি মানুষের যে মানবিক দায়িত্ববোধ, তাকে এমনকি দুঃসহতম সংকটের মধ্যেও জাগরুক রাখতে হবে, এ-থেকে
কোন অবস্থাতেই-যে কোন মানুষের নিষ্কৃতি নেই, এই সত্য এই মানবিক মহিমা ইসলামই তুলে ধরেছে। মানুষের প্রতি কর্তব্য
ইসলামের এমন একটি জরুরি শর্ত, যা থেকে ভুলক্রমেও একবার মুখ ফিরিয়ে থাকার উপায় নেই; এবং এমন কোন পূণ্যকর্ম
নেই, যা দিয়ে কোন মানুষ তার এই অপরিহার্য দায়িত্বভার এতটুকু লঘু করতে পারে। এইজন্যই খলিফা হজরত উমার (রাঃ)
তাঁর শত ব্যস্ততার মধ্যেও মানুষের অভাব অনটন দুঃখ দৈন্য অনুসন্ধান করে বেড়ান। কারণ মহানবী (সাঃ) এর শিক্ষানুযায়ী
‘খলিফা’ মানে রাজা নয়, খলিফা মানে সকল মানুষের সুখ ও কল্যাণের জন্য সদাসতর্ক এক সার্বক্ষণিক প্রহরী। হজরত আবু
বকর (রাঃ) খলিফা হসেবে তাঁর দায়িত্বগ্রহণের প্রাক্কালে জনগণের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমি যতক্ষন আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের
নির্ধারিত পথে আছি আপনারা আমার সঙ্গে থাকবেন, বিচ্যুতি ঘটলে তৎক্ষণাৎ পরিত্যাগ করবেন আমাকে’। ‘King can
do no wrong’ ‘Nothing wrong in love and war’ এই ধরণের বিশ্ববিশ্রুত অসত্যভাষণ ও মধুর প্রতারণা, এই
ধরণের নাটুকে মিথ্যাচার ইসলামে সম্ভব নয়। আধুনিক পৃথিবীকে প্রশ্ন করতে লুব্ধ হই, কোনটা উত্তম?
লেখক: আবু জাফর
———————–
চলবে ইনশাআল্লাহ।