লগইন রেজিস্ট্রেশন

হযরত আদম (আঃ) এবং ইবলিসের প্রার্থনা।

লিখেছেন: ' দ্য মুসলিম' @ শুক্রবার, ডিসেম্বর ১৮, ২০০৯ (১২:৫৯ পূর্বাহ্ণ)

আমাদের পতৃপুরুষ সৃষ্টির ইতিহাস পবিত্র কুরআনে বিশদভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। আল্লাহপাক মানবকে আশরাফুল মাখলুকাত বা সৃষ্টিকুলের শ্রেষ্ঠ করে সৃষ্টি করে তাদেরকে সম্মানি সেজদা করার জন্য ফিরিশতাদের আদেশ করেন। সকলে আল্লাহর এই আদেশ সাথে সাথে পালন করেন। কিন্তু ইবলিশ শয়তান আল্লাহর এই আদেশ অমান্য করে। এমনকি সে অহংকারবশত আল্লাহর আদেশ মান্য করতে সরাসরি অস্বীকৃতি জানায়।
সেই থেকে শয়তান মানুষের শত্রু হয়ে যায়। সে প্রতিজ্ঞা করে যে, যে আদমের কারনে তাকে অভিশপ্ত হতে হয়েছে তাকে সে কোনদিন ক্ষমা করবেনা। কিয়ামত পর্যন্ত সে আদমের পেছনে লেগে থাকবে এবং আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মানতে বা আল্লাহ রাসুলের পছন্দমত চলতে বাধা সুষ্টি করবে। এ ব্যাপারে সে আল্লাহর নিকট থেকে অধিকার প্রাপ্ত হয়েছে।

বর্ণিত আছে,
একদা ইবলিস বলেছিল,

হে পরওয়ারদিগার, আমাকে আদমের কারণে জান্নাত থেকে বহিষ্কার করেছেন, আপনি যদি আমাকে ক্ষমতা দান না করেন তাহলে আমি তার শত্রুতা ও ক্ষতিসাধন করতে পারবোনা। আল্লাহ তায়ালা বললেন, ‘ আমি তোকে ক্ষমতা দান করলাম।’ তবে আদম সন্তানদের মধ্যে আম্বিয়াগণ যেহেতু মাসুম ও নিষ্পাপ সেহেতু তাঁদের উপর ইবলিসের ক্ষমতা চলবেনা। ইবলিস বললো, ‘ আমাকে আরো অধিক ক্ষমতা দান করুন।’ আল্লাহ পাক বললেন, ‘ এক একজন আদম সন্তানের শত্রুতার জন্য তোর দুই দুইটি সন্তান জন্ম নিবে। ‘ সে বললো, ‘আরো অধিক করে দিন।’ আল্লাহ পাক বললেন, ‘তাদের বক্ষদেশে তোর আবাসস্হল হবে এবং তাদের শিরায় শিরায় তোর চলার ক্ষমতা থাকবে।’ সে বললো, ‘ আরো অধিক করে দিন।’ আল্লাহ পাক বললেন, ‘ আদম সন্তানের বিরুদ্ধে তোর অশ্বারোহী ও পদাতিক বাহিনী নিয়ে মেতে উঠ। তোর সর্ববিধ সহযোগীদের নিয়ে তাদের ক্ষতি সাধনে মত্ত হয়ে যা, তাদের ধন-সম্পদ উপার্জনে, জীবিকা নির্বাহে হারাম ও ঘৃণ্য কাজে লিপ্ত করার প্রয়াস চালিয়ে যা। তাদের সন্তান-সন্ততির ব্যাপারে হারাম উপায় তথা ঋতুকালিন সময়ে স্ত্রী গমনে উদ্বুদ্ধকরণ, সন্তান-সন্ততির শিরকি নাম রাখা ইত্যাদি ব্যাপারে প্রতারিত কর। অনুরূপ ভ্রান্ত ধর্ম ও মতবাদ পেশ করে গর্হিত ও কলুষিত বাক্য ও কার্যাবলীর দ্বারা তাদেরকে পথভ্রষ্ট কর।’

অপর দিকে হযরত আদম (আঃ) আরজ করলেন,

‘ হে পরওয়ারদিগার! আপনি ইবলিসকে আমার আওলাদ ও সন্তান-সন্ততির ওপর ক্ষমতাবান করে দিয়েছেন; এখন আপনার তাওফিক ও সাহায্য ছাড়া তাদের ক্ষমা পাওয়ার কোনো উপায় নেই। ‘ আল্লাহ পাক বললেন, ‘ তোমার প্রতিটি সন্তানের সাথে একজন করে সংরক্ষক ও তত্বাবধায়ক ফিরিশতা নিয়োজিত থাকবে। ‘ আদম (আঃ) বললেন, ‘ ইয়া আল্লাহ! আমাদের আরো অধিক সাহায্য করুন। ‘ আল্লাহ পাক বললেন, ‘ যতক্ষণ পর্যন্ত আদম সন্তানের দেহে প্রাণ থাকবে, ততোক্ষন পর্যন্ত তাদের জন্য তওবার দরজা খোলা থাকবে। ‘ হযরত আদম (আঃ) বললেন, ‘ আরো সাহায্য করুন। ‘ আল্লাহ পাক বললেন, ‘ আমি আদম সন্তানকে ক্ষমা করতে থাকবো, তারা যত গুনাহই করুক না কেন, আমি কোন পরওয়া করবোনা। ‘ হযরত আদম (আঃ) বললেন এখন যথেষ্ট হয়েছে।

(মুকাশাফাতুল কুলুব থেকে সংকলিত)

Processing your request, Please wait....
  • Print this article!
  • Digg
  • Sphinn
  • del.icio.us
  • Facebook
  • Mixx
  • Google Bookmarks
  • LinkaGoGo
  • MSN Reporter
  • Twitter
৭৫৮ বার পঠিত
1 Star2 Stars3 Stars4 Stars5 Stars (ভোট, গড়: ৫.০০)

৬ টি মন্তব্য

  1. সরাসরি আল-কুরআন থেকে …..

    আমি মানবকে পচা কর্দম থেকে তৈরী বিশুস্ক ঠনঠনে মাটি দ্বারা সৃষ্টি করেছি।
    এবং জিনকে এর আগে লু এর আগুনের দ্বারা সৃজিত করেছি।
    আর আপনার পালনকর্তা যখন ফেরেশতাদেরকে বললেনঃ আমি পচা কর্দম থেকে তৈরী বিশুষ্ক ঠনঠনে মাটি দ্বারা সৃষ্ট একটি মানব জাতির পত্তন করব।
    অতঃপর যখন তাকে ঠিকঠাক করে নেব এবং তাতে আমার রূহ থেকে ফঁুক দেব, তখন তোমরা তার সামনে সেজদায় পড়ে যেয়ো।
    তখন ফেরেশতারা সবাই মিলে সেজদা করল।
    কিন্তু ইবলীস-সে সেজদাকারীদের অন্তর্ভূক্ত হতে স্বীকৃত হল না।
    আল্লাহ বললেনঃ হে ইবলিস, তোমার কি হলো যে তুমি সেজদাকারীদের অন্তর্ভূক্ত হতে স্বীকৃত হলে না?
    বললঃ আমি এমন নই যে, একজন মানবকে সেজদা করব, যাকে আপনি পচা কর্দম থেকে তৈরী ঠনঠনে বিশুষ্ক মাটি দ্বারা সৃষ্টি করেছেন।
    আল্লাহ বললেনঃ তবে তুমি এখান থেকে বের হয়ে যাও। তুমি বিতাড়িত।
    এবং তোমার প্রতি ন্যায় বিচারের দিন পর্যন্ত অভিসম্পাত।
    সে বললঃ হে আমার পালনকর্তা, আপনি আমাকে পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত অবকাশ দিন।
    আল্লাহ বললেনঃ তোমাকে অবকাশ দেয়া হল।
    সেই অবধারিত সময় উপস্থিত হওয়ার দিন পর্যন্ত।
    সে বললঃ হে আমার পলনকর্তা, আপনি যেমন আমাকে পথ ভ্রষ্ট করেছেন, আমিও তাদের সবাইকে পৃথিবীতে নানা সৌন্দর্যে আকৃষ্ট করব এবং তাদের সবাইকে পথ ভ্রষ্ঠ করে দেব।
    আপনার মনোনীত বান্দাদের ব্যতীত।
    আল্লাহ বললেনঃ এটা আমা পর্যন্ত সোজা পথ।
    যারা আমার বান্দা, তাদের উপর তোমার কোন ক্ষমতা নেই; কিন্তু পথভ্রান্তদের মধ্য থেকে যারা তোমার পথে চলে।
    তাদের সবার নির্ধারিত স্থান হচ্ছে জাহান্নাম।

    ১৫) সূরা হিজর, ২৬ থেকে ৪৩,

    জ্ঞান পিপাষু

    @জ্ঞান পিপাষু,

    আমি ইতিপূর্বে আদমকে নির্দেশ দিয়েছিলাম। অতঃপর সে ভুলে গিয়েছিল এবং আমি তার মধ্যে দৃঢ়তা পাইনি।
    যখন আমি ফেরেশতাদেরকে বললামঃ তোমরা আদমকে সেজদা কর, তখন ইবলীস ব্যতীত সবাই সেজদা করল। সে অমান্য করল।
    অতঃপর আমি বললামঃ হে আদম, এ তোমার ও তোমার স্ত্রীর শত্রু, সুতরাং সে যেন বের করে না দেয় তোমাদের জান্নাত থেকে। তাহলে তোমরা কষ্টে পতিত হবে।
    তোমাকে এই দেয়া হল যে, তুমি এতে ক্ষুধার্ত হবে না এবং বস্ত্রহীণ হবে না।
    এবং তোমার পিপাসাও হবে না এবং রৌদ্রেও কষ্ট পাবে না।
    অতঃপর শয়তান তাকে কুমন্ত্রনা দিল, বললঃ হে আদম, আমি কি তোমাকে বলে দিব অনন্তকাল জীবিত থাকার বৃক্ষের কথা এবং অবিনশ্বর রাজত্বের কথা?
    অতঃপর তারা উভয়েই এর ফল ভক্ষণ করল, তখন তাদের সামনে তাদের লজ্জাস্থান খুলে গেল এবং তারা জান্নাতের বৃক্ষ-পত্র দ্বারা নিজেদেরকে আবৃত করতে শুরু করল। আদম তার পালনকর্তার অবাধ্যতা করল, ফলে সে পথ ভ্রষ্ঠ হয়ে গেল।
    এরপর তার পালনকর্তা তাকে মনোনীত করলেন, তার প্রতি মনোযোগী হলেন এবং তাকে সুপথে আনয়ন করলেন।
    তিনি বললেনঃ তোমরা উভয়েই এখান থেকে এক সঙ্গে নেমে যাও। তোমরা একে অপরের শত্রু। এরপর যদি আমার পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে হেদায়েত আসে, তখন যে আমার বর্ণিত পথ অনুসরণ করবে, সে পথভ্রষ্ঠ হবে না এবং কষ্টে পতিত হবে না।

    ২০) সূরা ত্বোয়া-হা, আয়াত নং ১১৫ থেকে ১২৩

    জ্ঞান পিপাষু

    @জ্ঞান পিপাষু,

    আর তোমার পালনকর্তা যখন ফেরেশতাদিগকে বললেনঃ আমি পৃথিবীতে একজন প্রতিনিধি বানাতে যাচ্ছি, তখন ফেরেশতাগণ বলল, তুমি কি পৃথিবীতে এমন কাউকে সৃষ্টি করবে যে দাঙ্গা-হাঙ্গামার সৃষ্টি করবে এবং রক্তপাত ঘটাবে? অথচ আমরা নিয়ত তোমার গুণকীর্তন করছি এবং তোমার পবিত্র সত্তাকে স্মরণ করছি। তিনি বললেন, নিঃসন্দেহে আমি জানি, যা তোমরা জান না।
    আর আল্লাহ তা’আলা শিখালেন আদমকে সমস্ত বস্তু-সামগ্রীর নাম। তারপর সে সমস্ত বস্তু-সামগ্রীকে ফেরেশতাদের সামনে উপস্থাপন করলেন। অতঃপর বললেন, আমাকে তোমরা এগুলোর নাম বলে দাও, যদি তোমরা সত্য হয়ে থাক।
    তারা বলল, তুমি পবিত্র! আমরা কোন কিছুই জানি না, তবে তুমি যা আমাদিগকে শিখিয়েছ (সেগুলো ব্যতীত) নিশ্চয় তুমিই প্রকৃত জ্ঞানসম্পন্ন, হেকমতওয়ালা।
    তিনি বললেন, হে আদম, ফেরেশতাদেরকে বলে দাও এসবের নাম। তারপর যখন তিনি বলে দিলেন সে সবের নাম, তখন তিনি বললেন, আমি কি তোমাদেরকে বলিনি যে, আমি আসমান ও যমীনের যাবতীয় গোপন বিষয় সম্পর্কে খুব ভাল করেই অবগত রয়েছি? এবং সেসব বিষয়ও জানি যা তোমরা প্রকাশ কর, আর যা তোমরা গোপন কর!
    এবং যখন আমি হযরত আদম (আঃ)-কে সেজদা করার জন্য ফেরেশতাগণকে নির্দেশ দিলাম, তখনই ইবলীস ব্যতীত সবাই সিজদা করলো। সে (নির্দেশ) পালন করতে অস্বীকার করল এবং অহংকার প্রদর্শন করল। ফলে সে কাফেরদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে গেল।
    এবং আমি আদমকে হুকুম করলাম যে, তুমি ও তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস করতে থাক এবং ওখানে যা চাও, যেখান থেকে চাও, পরিতৃপ্তিসহ খেতে থাক, কিন্তু এ গাছের নিকটবর্তী হয়ো না। অন্যথায় তোমরা যালিমদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে পড়বে।
    অনন্তর শয়তান তাদের উভয়কে ওখান থেকে পদস্খলিত করেছিল। পরে তারা যে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে ছিল তা থেকে তাদেরকে বের করে দিল এবং আমি বললাম, তোমরা নেমে যাও। তোমরা পরস্পর একে অপরের শক্র হবে এবং তোমাদেরকে সেখানে কিছুকাল অবস্থান করতে হবে ও লাভ সংগ্রহ করতে হবে।
    অতঃপর হযরত আদম (আঃ) স্বীয় পালনকর্তার কাছ থেকে কয়েকটি কথা শিখে নিলেন, অতঃপর আল্লাহ পাক তাঁর প্রতি (করুণাভরে) লক্ষ্য করলেন। নিশ্চয়ই তিনি মহা-ক্ষমাশীল ও অসীম দয়ালু।
    আমি হুকুম করলাম, তোমরা সবাই নীচে নেমে যাও। অতঃপর যদি তোমাদের নিকট আমার পক্ষ থেকে কোন হেদায়েত পৌঁছে, তবে যে ব্যক্তি আমার সে হেদায়েত অনুসারে চলবে, তার উপর না কোন ভয় আসবে, না (কোন কারণে) তারা চিন্তাগ্রস্ত ও সন্তপ্ত হবে।

    ২) সূরা আল বাক্বারাহ, আয়াত নং ৩০ থেকে ৩৮

    জ্ঞান পিপাষু

    @জ্ঞান পিপাষু,

    সম্পূর্ণ আল-কুরআন থেকে আমি যা পেয়েছি তাই উপরে দিলাম। যদি কেউ আল-কুরআন থেকে আরো তথ্য প্রদান করতে পারেন এ বিষয়ে, তাহলে খুবই উপকৃত হবো। ধন্যবাদ। :)

    দ্য মুসলিম

    @জ্ঞান পিপাষু,ধন্যবাদ। অনেক কিছু জানতে পারলাম। (F)