কবিরা গুনাহ-১২ (সুদ দেয়া নেয়া।)
লিখেছেন: ' দ্য মুসলিম' @ শনিবার, জানুয়ারি ৯, ২০১০ (৮:২১ অপরাহ্ণ)
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ,
পবিত্র কোরআন এর দলিলঃ
- হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ খেয়ো না এবং আল্লাহকে ভয় কর। যাতে তোমরা সাফল্য লাভ করতে পার। (সুরা আলে ইমরান-১৩০)
- যারা সুদ খায় তারা ( কেয়ামতের দিন ) সে ব্যক্তির মত দাঁড়াবে, যাকে শয়তান আপন স্পর্শ দিয়ে মোহাবিষ্ট করে দেয়। তাদের এ অবস্হার কারণ, তারা বলে বেড়াতোঃ ব্যবসা তো সুদের মতই। অথচ আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল আর সুদকে হারাম করেছেন।(সুরা আল বারাকা- ২৭৫)
পবিত্র হাদিস এর দলিলঃ
- মেরাজ রাতে আমাকে উর্ধ্বলোকে বিচরণ করানোর সময় আমি আমার মাথার উপরে সপ্তম আকাশে বজ্রে প্রচন্ড গর্জনের শব্দ শুনতে পেলাম। চোখ মেলে এমন কিছু লোক দেখতে পেলাম, যাদের পেটগুলো বিশাল ঘরের মত সামনের দিকে বের হয়ে আছে। তা ছিলো অসংখ্য সাপ ও বিচ্ছুতে পরিপূর্ণ। যেগুলো পেটের বাইরে থেকে দেখা যাচ্ছিলো। অনন্তর আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে জিবরাঈল ! এরা কারা? তিনি বললেনঃ এরা সুদখোর।’ (ইবনে মাযা ও আহমদ)
- হযরত আবদুর রহমান ইবনে মাসউদ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত আছে, যখন কোন জাতির মধ্যে ব্যভিচার ও সুদ ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ে, তখন আল্লাহ পাক সেই জাতিকে ধ্বংস করার নির্দেশ দেন। (আবু ইয়া’লা ও হাকেম)
- সে সমাজে সুদ বিস্তার লাভ করে, তাদের মধ্যে পাগলের সংখ্যা বেড়ে যায়। যে সমাজে ব্যভিচারের ব্যপকতা ঘটে, তাদের মৃত্যুর হার বেড়ে যায়। আর ওজনে কম বেশী করার অভ্যাসে অভ্যস্তদের উপর আল্লাহ সামান্য ফোঁটা পরিমাণ বৃষ্টিও বন্ধ করে দেন। (ইবনে মাজা, বায়হাকী ও হাকেম)
- সুদ থেকে অর্জিত এক দিরহাম পরিমাণ অর্থ ইসলামের দৃষ্টিতে ৩৬বার ব্যভিচার করা অপেক্ষা গুরুতর অপরাধ। (ইবনে মাজা, বায়হাকী)
- সুদখোর, সুদ প্রদানকারী, উভয়ের উপর আল্লাহ অভিসম্পাত করেন। (মুসলিম) [তিরমিযির বর্ণনায় "সুদের সাক্ষী ও লেখক" কথা দুটি যোগ হয়েছে।]
- সুদের গুনাহ সত্তরটি। তার মধ্যে অপরাধের দিক থেকে সর্বনিম্ন গুনাহটি হল, আপন মায়ের সাথে যৌনাচারের গুনাহের সমান। আর সবচেয়ে জঘন্য প্রকারের সুদ হলো, সুদের পাওনা আদায়ের জন্য কোন মুসলমান ভাইয়ের সম্ভ্রমহানি করা বা তার সম্পদ দখল করা। (ইবনে মাজা, তাবারানী)
আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকল কবীরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার তোফিক দিন।
আল্লাহ হাফেজ।
১,৫৭১ বার পঠিত
ভাই , চারিদিকে শুধু “সুদ” আর “সুদ” । গ্রামীন ব্যাংকের শুরু করা “মাইক্রো ক্রেডিট” আজ ঘরে ঘরে ।
আপনার এই লেখাকে ধন্যবাদ জানাই ।
@হাফিজ, দোয়া করবেন। ধন্যবাদ।
আমার লিংক সংযোজনে কোথায় সমস্যা ছিল একটু জানাবেন?
@মুসলিম৫৫,
লিংক দেয়ার জন্য “লিংক” বাটন এ ক্লিক করলে একটি “উইনডো” আসে। সে উইন্ডো তে লিংকটি পেষ্ট করতে হয়। আপনি হয়তো বা করেছিলেন কিন্তু কোন কারনে পেষ্ট হয়নি বা খালি রয়ে গেছে।
আমি পরে আপনার লিংক এর প্রোপার্টিজ দেখে সমস্যা ধরতে পেরেছিলাম। ধন্যবাদ।
সুরা বাকারা’র ২৭৪-২৮১ আয়াত:
Verse No : 274
যারা নিজেদের ধন-সম্পদ ব্যয় করে, রাত্রে ও দিনে, গোপনে ও প্রকাশ্যে, তাদের জন্যে তাদের এ দানের প্রতিফল (সুরক্ষিত) রয়েছে তাদের পালনকর্তার কাছে। তাদের কোন রকম আশংঙ্কা নেই এবং তারা চিন্তিতও হবে না।
Verse No : 275
যারা সুদ খায়, তারা (মাথা উঁচু করে) দাঁড়াতে পারবে না, (দাঁড়ালেও) তার দাঁড়ানো হবে সে ব্যাক্তির মতো, যাকে শয়তান নিজস্ব পরশ দিয়ে (দুনিয়ার লোভ লালসায়) মোহাচ্ছন্ন করে রেখেছে; তাদের এ অবস্থার কারণ এই যে, তারা বলে, ক্রয়-বিক্রয়ও তো সুদ নেয়ারই মত (একটা কারবারের নাম), অথচ আল্লাহ তায়ালা ক্রয়-বিক্রয় বৈধ করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন।
তাই তোমাদের যার (যার) কাছে তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে (সুদ সংক্রান্ত) এ উপদেশ পৌঁছেছে, সে অতঃপর সুদের কারবার থেকে বিরত থাকবে; আগে (এ আদেশ আসা পর্যন্ত) যে সুদ সে খেয়েছে, তা তো তার জন্য অতিবাহিত হয়ে গেছে, তার ব্যাপার একান্তই আল্লাহ তায়ালার উপর নির্ভরশীল।
কিন্তু (এরপর) যারা (আবার সুদী কারবারে) ফিরে আসবে, তারা অবশ্যই জাহান্নামের অধিবাসী হবে, তারা সেখানে চিরকাল অবস্থান করবে।
Verse No : 276
আল্লাহ তায়ালা সুদকে নিশ্চিহ্ন করেন, (অপর দিকে) দান-সদকা (-র পবত্র কাজ) কে তিনি (উত্তরোত্তর) বর্ধিত করেন। আল্লাহ তায়ালা (তাঁর নেয়ামতের প্রতি) অকৃতজ্ঞ পাপিষ্ঠ ব্যাক্তিদের পছন্দ করেন না।
Verse No : 277
নিশ্চয়ই যারা (সত্যিকার অর্থে) ঈমান এনেছে, সৎকাজ করেছে, নামায প্রতিষ্ঠিত করেছে এবং যাকাত দান করেছে, তাদের জন্যে তাদের পুরষ্কার তাদের পালনকর্তার কছে রয়েছে। তাদের কোন শঙ্কা নেই এবং তারা দুঃখিত হবে না।
Verse No : 278
হে ঈমানদারগণ, তোমরা (সুদের ব্যাপারে) আল্লাহ তায়ালাকে ভয় কর এবং সুদের যে সমস্ত বকেয়া আছে, তা পরিত্যাগ কর, যদি তোমরা ঈমানদার হয়ে থাক।
Verse No : 279
অতঃপর যদি তোমরা পরিত্যাগ না কর, তবে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের পক্ষ থেকে (তোমাদের বিরুদ্ধে) যুদ্ধের (ঘোষণা থাকবে), কিন্তু যদি তোমরা তওবা কর, তবে তোমরা নিজের মূলধন ফিরে পাবার অধিকারী হবে, (সুদী কারবার দ্বারা) তোমরা কারও প্রতি যুলুম করো না, তোমাদের ওপরও অতঃপর (সুদের) যুলুম করা হবে না।
Verse No : 280
সে (ঋণ গ্রহীতা) ব্যাক্তি যদি কখনো অভাবগ্রস্থ হয়ে পড়ে, তবে (তার ওপর চাপ দিয়ো না, বরং) তার সচ্ছলতা ফিরে আসা পর্যন্ত তাকে সময় দাও; আর যদি তা ক্ষমা করে দাও, তবে তা হবে তোমাদের জন্য খুবই উত্তম, যদি তোমরা (ভালভাবে) জানো (তাহলে এটাই তোমাদের করা উচিৎ)।
Verse No : 281
ঐ দিনকে ভয় কর, যে দিন তোমরা সবাইকে আল্লাহর দিকে ফিরিয়ে নেয়া হবে, সেদিন প্রত্যেকে মানব সন্তানকে তার কর্মের ফল পুরোপুরি দিয়ে দেয়া হবে এবং তাদের প্রতি কোন রূপ অবিচার করা হবে না।
ইমরান নযর হোসেন এর ImportanceofProhibitionofRibaInIslam.pdf বইটি দেখতে পারেন:
ImportanceofProhibitionofRibaInIslam.pdf
@রাশেদ,
পড়ে দেখার চেষ্টা করবো, ইনশাআল্লাহ।
অনেকে বলে থাকনে যে ব্যাংকরে জব নাকি হালাল। তাদের এই হাদীসটি পড়ার অনূরুধ করলাম।