কবিরা গুনাহ-২৪ (ডাকাতি ও সন্ত্রাস। )
লিখেছেন: ' দ্য মুসলিম' @ শুক্রবার, এপ্রিল ২৩, ২০১০ (৭:১০ পূর্বাহ্ণ)
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ,
মহান আল্লাহ পাক ঘোষনা করেনঃ “যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয় এবং দেশে অরাজকতা-সন্ত্রাস সৃষ্টিতে সচেষ্ট থাকে, তাদের শাস্তি হচ্ছে,, তাদেরকে হত্যা করা হবে, কিংবা শুলিতে চড়ানো হবে, অথবা তাদের হাত-পা সমূহ বিপরীত দিক থেকে কেটে দেয়া হবে, অথবা দেশ থেকে বহিষ্কার করা হবে, এটা তাদের পার্থিব লাঞ্ছনা, আর পরকালৈ তাদের জন্র রয়েছে কঠোর শাস্তি।” (সুরা মায়েদা-৩৩)
এ আয়াতের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে ইমাম ওয়াহেদী রঃ বলেনঃ “আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের সাথে যু্দ্ধে লিপ্ত হওয়ার” অর্থ তাঁদের অবাধ্য হওয়া এবং তাদের আদেশ নিষেধ লংঘন করা। আদেশ লংঘনকারী আসলে বিদ্রোহে লিপ্ত হয়। আর “দেশে অরাজকতা-সন্ত্রাস সৃষ্টিতে সচেষ্ট থাকে” অর্থ- খুন-রাহাজানি, অপরের সম্পদ লুন্ঠন ও হাইজ্যাকের মাধ্যমে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা। আর কোন মুমিনের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণকারীকে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনাকারী গণ্য করা হবে। ইমাম মালেক, শাফেয়ী ও আওযায়ীর রঃ অভিমতও এটা।
এর তাফসীর প্রসঙ্গে ওয়ালি রঃ বলেন, হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ বলেছেনঃ এখানে “আও” বা অথবা শব্দটি ব্যবহার করা হয়েচে এখতিয়ার তথা বিচারকের স্বাধীন ইচ্ছা বুঝানোর জন্য। আর বার বার এ শব্দটি ব্যবহারের তাতপর্য হচ্ছে, উল্লিখিত শাস্তিগুলো থেকে যে কোন একটি প্রয়োগের পূর্ণ এখতিয়ার বা স্বাধীনতা বিচারকের রয়েছে। অর্থাৎ বিচারক ইচ্ছে করলে তাকে ফাঁসি দিতে পারেন, ইচ্ছা করলে শুলিতে চড়াতে পারেন, ইচ্ছা কললৈ নির্বাসনও দিতে পারেন। হযরত হাসান, সাঈদ ইবনুল মুসাইয়িব, মুজাহিদও এ মত পোষন করেন।
হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেনঃ “চোর চুরি করলে তার এক হাত কেটে দাও, আবার চুরি করলে তার এক পা কেটে দাও, আবার চুরি করলে আর এক হাত কেটে দাও, আবার চুরি করলে আর এক পা কেটে দাও।” (আবু দাউদ, নাসায়ী)
প্রথম খলিফা হযরত আবু বকর রাঃ ও দ্বিতীয় খলিফা হযরত ওমর রাঃ নিজেদের খিলাফতকালৈ এ হাদীস অনুসারে চুরির শাস্তি দিয়েছেন। কোন সাহাবী রাঃ-ই এর বিরোধিতা করেননি। আল্লাহ পাকের ঘোষনা “বিপরীত দিক থেকে কথার মর্ম অনুযায়ী সর্বসম্মত মত হচ্ছে, প্রথমে ডান হাত কাটা হবে, তারপর দ্বিতীয় বার বাম পা।”
বস্তুতঃ শুধুমাত্র ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও ত্রাস সৃষ্টির জন্যই যদি একটি কবীরা গুনাহর অপরাধে দোষী ও এরূপ শাস্তির সম্মুখীন হতে হয়, তবে যে লোক অন্যায়ভাবে লুটতরাজ, অর্থ-সম্পদ ছিনতাই, খুন-জখমের মত জঘন্য ও নৃশংস অপকর্মের সাথে সাথে নামাজ তরক, ব্যভিচার, সমকামিতা, মদ্যপান, কপটতা ইত্যাদি নানাবিধ কবীরা গুনাহর সাথে সংশ্লীষ্ট থাকে, তার পরিণতি যে কত মর্মান্তিক হতে পারে তা ভাববার বিষয়।
আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকল কবীরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার তোফিক দিন।
আল্লাহ হাফেজ।