লগইন রেজিস্ট্রেশন

কবিরা গুনাহ-২৬ (জুলুম-অত্যাচার করা।)

লিখেছেন: ' দ্য মুসলিম' @ শনিবার, মে ১, ২০১০ (২:১৬ অপরাহ্ণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ,

বিসমিল্লাহির রাহ মানির রাহিম।

*** মহান আল্লাহ পাক ঘোষণা করেনঃ “জালেমরা যা করে, সে বিষয়ে আল্লাহকে কখনো উদাসীন মনে করো না। তাদেরকে তো তিনি শুধু একটি নির্দিষ্ট দিন পর্যন্ত অবকাশ দিয়ে রেখেছেন। যেদিন চক্ষুসময়হ বিষ্ফোরিত হবে, তারা আকাশের দিকে মাথা তুলে ভীত-বিহবল হৃদয়ে দৌড়াতে থাকবে, তাদের দৃষ্টি নিজেদের দিকে ফিরে আসবেনা এবং তাদের হৃদয় উড়ে যাবে। মানুষকে ঐ দিনের ভয় প্রদর্শন করুন, যেদিন তাদের কাছে আযাব আসবে। তখন জালেমরা বলবেঃ হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদেরকে সামান্য মেয়াদ পর্যন্ত সময় দিন, যাতে আমরা আপনার আহবানে সাড়া দিতে এবং পয়গম্বরগণের অনুসরণ করতে পারি। তোমরা কি ইতোপূর্বে কসম খেতে না যে, তোমাদেরকে দুনিয়া থেকে যেতে হবে না? তোমরা তাদের বাসভূমিতেই বসবাস করতে, যারা নিজেদের উপর জুলুম করেছে এবং তোমাদের জানা হয়ে গিয়েছিল যে, আমি তাদের সাথে কিরূপ ব্যবহার করেছি এবং আমি তোমাদেরকে ওদের সব কাহিনীই বর্ণনা করেছি।” (সুরা ইবরাহীম- ৪২-৪৫)

*** আল্লাহ তাযালা আরো ঘোষণা দেনঃ “ব্যবস্হা গ্রহণ করা হবে কেবল তাদের বিরুদ্ধেই, যারা মানুষের উপর অত্যাচার চালায়”- (সূরা শুরা-৪২)

*** আল্লাহ তায়ালা আরো বলেনঃ “নির্যাতনকারীরা শীঘ্রই জানেত পারবে, তাদের গন্হব্যস্হল কোথায়।” (সুরা শোআরা-২২৭)

### মুসলিম ও তিরমিযী শরীফে উদ্ধৃতি হাদীসে আবু মুসা আশআরী রাঃ বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ “আল্লাহ পাক অত্যাচারীকে দীর্ঘ সময়ের জন্য অবকাশ দিয়ে থাকেন, তার পর যখন তিনি আটক করেন, তখন আর রেহাই দেন না।” অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ আয়াতটি পাঠ করেনঃ “আর তোমরা পালনকর্তা যখন কোন জুলুমরত জনপদকে গ্রেফতার করেন, তখন এমনিভাবেই গ্রেফতার করে থাকেন, নিশ্চয়ই তাঁর গ্রেফতার বড়ই কঠোর।” (সুরা হুদ-১০২)

### রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ যদি কেউ তার কোন ভাইয়ের সহায় সম্পদ নষ্ট, ইযযত-সম্মানহানি অথবা অন্য কোন উপায়ে অত্যাচার করে, তবে সাথে সাথে তা মিটিয়ে ফেলা (অর্থাৎ মাফ করে দেয়া উচিত) উচিত। এটা সেই ভয়াবহ দিন এসে পড়ার আগেই করা উচিত, যেদিন দীনার ও দীরহাম থাকবে না। বরং তার সংগ্রহে যদি নেক আমর থাকে, তবে তার অত্যাচারের পরিমাণ নেকী উক্ত অত্যাচারিতকে দিয়ে দেয়া হবে। আর যদি কোন নেক আমল না থাকে, তবে অত্যাচারীতের বদ আমলগুলো তার ঘাড়ে চাপানো হবে। (সহীহ বোখারী ও তিরমিযী)

### রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ আল্লাহ তায়ালা ঘোষনা করেছেনঃ “হে আমার বান্দাগণ!আমি আমার নিজের জন্য অত্যাচার হারাম করে নিয়েছি এবং তোমাদের পরস্পরের মধ্যেও অত্যাচার করাকে হারাম করে দিয়েছি। অতএব তোমরা পরস্পরে জুলুম করো না।” (মুসলিম ও তিরমিযী)

### রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে ব্যক্তি আধ হাত পরিমাণেও পরের জমি জবর দখল করবে, কেয়ামতের দিন সাতটি পৃথিবী তার ঘাড়ে পেঁচিয়ে দেয়া হবে। (বোখারী ও মুসলিম)

### হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উনাইস রাঃ বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে আমি বলতে শুনেছি, “কেয়ামতের দিন আল্লাহর বান্দাদেরকে খালি পায়ে ও বিনা খাতনা অবস্হায় সমবেত করা হবে। এ সময় এত জোরে একটি আওয়ায ধ্বনীত হবে, যা কাছের ও দূরের সবাই সমানভাবে শুনতে পাবে। ঘোষনা দেয়া হবেঃ “আমি সূক্ষ্ম প্রতিফল প্রদানকারী রাজাধিরাজ। কোন জান্নাতীর পক্ষে সম্ভব নয়, সে জান্নাতে প্রবেশ করে এবং কোন জাহান্নামীর পক্ষেও সম্ভব নয় সে জাহান্নামে যাবে, যতক্ষণ পর্যন্ত না মজলুমের প্রতি তাদের জুলুমের প্রতিশোধ না নেব, এমনকি তা যদি একটি চড় থাপ্পড় অথাবা তার চেয়েও ছোট কোন বিষয় হয়। তোমার পালনকর্তা কারও উপর (সামান্য পরিমানও) অত্যাচার করেন না।” আমরা বললাম ইয়া রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! তা কিভাবে সম্ভব? আমরা সবাই তো খালি পায়ে নগ্নাবস্হায় থাকবো? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ প্রত্যেকের কৃত পাপ পুণ্যের বিনিময়ে প্রতিশোধ নেয়া হবে। তোমাদের পালনকর্তা কার প্রতি অত্যাচার (বৈষম্য) করবেন না। “- (আহমত, বোখারী, তাবারানী)

আল্লাহ পাক আমাদেরকে সকল প্রকার কবীরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার তৌফিক দিন। আমিন।

Processing your request, Please wait....
  • Print this article!
  • Digg
  • Sphinn
  • del.icio.us
  • Facebook
  • Mixx
  • Google Bookmarks
  • LinkaGoGo
  • MSN Reporter
  • Twitter
২০৪ বার পঠিত
1 Star2 Stars3 Stars4 Stars5 Stars (ভোট, গড়: ৪.০০)