পুরুষের কয়েকটি স্বাস্থ্য সমস্যা
লিখেছেন: ' sayedalihasan' @ শনিবার, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১১ (৯:৫২ পূর্বাহ্ণ)
সাধারণত যেসব রোগ পুরুষের বেশি হয় এবং যেসব রোগে পুরুষের মৃত্যুহার বেশি, সেগুলো পুরুষদের স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে পরিচিত। পুরুষের শত্রু হিসেবে কয়েকটি রোগ-ব্যাধিকে চিহ্নিত করা যেতে পারে_
হৃদরোগ
পুরুষের প্রধান শত্রু। প্রতিরোধ করতে হলে নিচের বিষয়গুলোর প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে।
* প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ_সব ধরনের ধূমপান পরিত্যাগ করতে হবে।
* স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। শাকসবজি, ফলমূল, আঁকাড়া শস্যদানা, অতিরিক্ত আঁশযুক্ত খাদ্য ইত্যাদি বেশি খেতে হবে। কিন্তু সম্পৃক্ত চর্বি এবং লবণযুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে।
* উচ্চ রক্তচাপ কিংবা ডায়াবেটিস হলে অবশ্যই তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
* প্রতিদিন ব্যায়াম করতে হবে_তা যেকোনো ধরনের শরীরচর্চা কিংবা খেলাধুলা, যা কিছু হোক।
* শরীরের ওজন সীমিত রাখতে হবে।
* অতিরিক্ত অ্যালকোহল রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয় এবং তা হৃৎপিণ্ডের জন্য ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার করে।
* মানসিক চাপ এবং উদ্বেগমুক্ত হতে হবে।
ক্যান্সার
ফুসফুস, ত্বক, প্রোস্টেট, অন্ত্র ইত্যাদি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ক্যান্সারে বহু পুরুষের অকালমৃত্যু হয়। ক্যান্সারের ঝুঁকি কমানোর জন্য নিচের পদক্ষেপগুলো বেশি কার্যকর_
* ধূমপান পরিহার করলে ক্যান্সারের ঝুঁকিও কমে।
* অতিরিক্ত ওজন কমাতে পারলে নানা রকম ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকাংশে হ্রাস পায়।
* প্রচুর শাকসবজি এবং ফলমূল খেতে হবে। শাকসবজি ও ফলমূল ক্যান্সার প্রতিরোধে অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখে।
* ‘সানস্ক্রিন’ বা সৌরালোক সুরক্ষাকারী ক্রিম কিংবা ছাতা ব্যবহার করতে হবে।
* ক্যান্সার শনাক্তকারী পরীক্ষা-নিরীক্ষা নিয়মিত করতে হবে। কিছু কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে ক্যান্সার সুপ্তাবস্থায় বা প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা যায়। এ জন্য প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদি ব্যাধি
ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদি রোগ, বিশেষ করে ক্রনিক ব্রংকাইটিস এবং পালমোনারি এমফাইসিমায় অনেক পুরুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। এ জন্য_
* ধুলাবালি-ধোঁয়াযুক্ত পরিবেশ এড়িয়ে চলতে হবে। এমন স্থানে বাস করতে হবে, যা রাস্তার ধুলাবালি থেকে মুক্ত।
* শ্বাসনালির সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে হবে। ঘন ঘন শ্বাসনালির সংক্রমণ থেকে মুক্ত থাকার জন্য সতর্ক থাকতে হবে।
মস্তিষ্কের পক্ষাঘাত বা স্ট্রোক
মস্তিষ্কের পক্ষাঘাতের অনেক ঝুঁকি উপাদান আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। যেমন_বয়স, পারিবারিক ইতিহাস, জাতি ইত্যাদি। কিন্তু কতকগুলো উপাদান নিয়ন্ত্রণযোগ্য। যেমন_
* ক্রনিক রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
* অতিরিক্ত ধূমপান পক্ষাঘাতের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
* অ্যালকোহল সেবন স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়।
ডায়াবেটিস
অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের ফলে হৃদরোগ, চোখের রেটিনার সমস্যা, স্নায়ুরোগ এবং আরো অনেক জটিলতা হয়। অতএব ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে অধিকাংশ পুরুষ তাদের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে পারে। এ জন্য_
* নিয়মিত জীবনাচরণ মেনে চলতে হবে।
* স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করতে হবে।
* নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে।
* অতিরিক্ত ওজন কমাতে হবে।
বিষণ্নতা ও আত্মহত্যা
সাধারণত বিষণ্নতা থেকে আত্মহত্যা করার ইচ্ছা জাগে। প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা গেলে বিষণ্নতা দূর করার মাধ্যমে আত্মহত্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব।
স্বাস্থ্য ঝুঁকি চিহ্নিত করা সহজ, কিন্তু প্রতিরোধের পদক্ষেপ নেওয়া সহজ নয়। তবে সব ক্ষেত্রে পুরুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার মূল সূত্রটি একই; আর তা হচ্ছে_স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ, নিয়মিত ব্যায়াম ও শরীর চর্চা, ধূমপান পরিহার, মদপান না করা এবং নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো।
গুরুত্বপূর্ণ লেখার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।