সালাত বা নামাজ……………..পর্ব ০১
লিখেছেন: ' shahedups' @ শনিবার, এপ্রিল ২, ২০১১ (৪:২১ অপরাহ্ণ)
সালাতের অর্থ:
আরবি সালাত শব্দটি ‘সেলা’ ধামতুল থেকে উদগত-যার অর্থ বন্ধন। সালাতের মাধ্যমে যেহেতু বান্দা ও তার রবের মাঝে বন্ধন সৃষ্তি হয় তাই এর নাম দেয়া হয়েছে সালাত। আর ইসলামি পরিভাষায় সালাত হল, রাসূল (সা:) প্রদর্শিত ইবাদতের সেই নির্দিষ্ট পদ্ধতি-যা তিনি মুসলমানদের হাতে-কলমে শিক্ষা দিয়েছেন। এককথায় সালাত নিয়ত সহযোগে বিশেষ কিছু শর্ত সমন্বিত নির্দিষ্ট কথা ও কাজের নাম-যা তাকবীরের মাধ্যমে সূচিত হয়ে সালামের মাধ্যমে সমাপ্ত হয়।
সালাতের গুরুত্ব:
ইসলাম আল্লাহর একমাত্র মনোনিত ধর্ম। এ ধর্মের দ্বিতীয় ভিত্তিমুল হল সালাত। রাসূল (সা:) বলেন: ‘পাঁচটি ভিত্তির ওপর ইসলামের বুনিয়াদ।’ (বুখারী ও মুসলিম) এ পাঁচতির মধ্যে দ্বিতীয়তি হল সালাত বা নামাজ।
সালাত মুমিনের বৈশিষ্ট। আল্লাহ তাআলা মুমিনদের প্রশংসা করে বলেন, ‘তারা সালাত কায়েম করে।’ (বাকারা: ০৩)
যে ব্যক্তি সালাতের হিফাজত করল, সে তার দীনের হিফাজত করল: ‘আর যে সালাত নষ্ট করল সে তো অন্য সবকিছু নষ্ট করবে।’
‘যার কাছে সালাতের গুরূত্ব যতটুকু ইসলামের গুরূত্ব ও ততটুকুই।’
রাসূল (সা:) এর সর্বশেষ অসিয়ত ছিল সালাত। দুনিয়া থেকে বিদায়ের প্রাক্কালে তিনি নিজ উম্মতকে (আস-সালাত, আস-সালাত) ‘তোমরা সালাতের ব্যাপারে যত্নশীল থেকো’ বলে আপ্রান সতর্ক করেছেন।
এ পৃথীবি তার সর্বশেষ হাসি ও দেখেছিল আ সালাতকে উপলক্ষ্য করে। রাসূল (সা:) আপন হুজরা থেকে মসজিদের দিকে তাকিয়ে দেখেন আবু-বকর ইমামতি করছেন। সবাই তার পিছনে একাত্ন হয়ে সালাতে নিমগ্ন। নিগ হাতে রোপন করা দীনের এমন সুন্দর দৃশ্য দেখে সফল মালীর মত হেসেছিলেন তিনি তৃপ্তির হাসি।
ইসলামের যে অংশ সর্বশেষ বিদায় নেবে তা এই সালাত। সালাত যখন বিদায় নেবে তখন ইসলামের আর কোন অংশি অবশিষ্ট থাকবেনা। রাসূল (সা:) বলেন, ‘ইসলামের বন্ধন সব একে একে ছিড়ে যাবে। যখন একতি বন্ধন ছিড়ে যাবে মানুষ তার পরবর্তি বন্ধনতি আকড়ে ধরবে। সর্বপ্রথম ইসলামি শাসন বিলুপ্ত হবে আর সর্বশেষ উঠে যাবে সালাত।’ (ইবনে হিব্বান)
রাসূল (সা:) এক সময় চাঁদের দিকে তাকিয়ে বলেন, ‘তোমরা রোমাদের রবকে দেখতে পাবে; যেমন দেখতে পাচ্ছ এ চাঁদকে, তাকে দেখার জন্য তোমাদের হোরাহুরি করে হবেনা।’
‘যদি তোমাদের সাধ্য থাকে তবে সূর্যদ্বয় ও সূর্যাস্তের সালাত ত্যাগ করোনা।’ (বুখারী ও মুসলিম)
যারা সালাতের ব্যাপারে অবহেলা প্রদর্শন করে তাদের নিন্দা করে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তাদের পর আসল এমন এক আসৎ বংশধর যারা সালাত নষ্ট করল এবং কুপ্রবিত্তির অনুসরন করল। সুতরাং শীঘ্রই তারা জাহান্নামের শাশ্তি প্রত্যক্ষ করবে।’ (মরিয়াম: ৫৯)
রাসূল (সা:) বলেছেন, ‘যে আসরের সালাত ত্যাগ করল তার আমল বরবাদ হয়ে গেল: (বুখারী)
সালাত একতি গুরোত্বপূর্ণ ইবাদত-যার জন্য নবী-রাসূলগন আপ্রান চেষ্টা করেছেন এবঙ এ কন্য আল্লাহর বিশেষ হীদায়েত ও তাওফিক প্রার্থনা করেছেন। যেমন ইব্রাহীম (আ:) বলেন, ‘হে আমার রব, আমাকে সালাত কায়েমকারী বানান এবং আমার বংশধরদের মধ্য থেকেও। হে আমার রব, আমার দোআ কবুল করোন।’ (ইবরাহিম: ৪০)
আল্লাহ তা;আলা ঈসমাইল (আ.) এর প্রশংসা করেছেন এ জন্য যে তিনি সালাত কায়েম করতেন এবং অন্যদের সালাতের প্রতি উদ্ধুত করতেন। ইরশাদ হচ্ছে, ‘সে তার পরিবারকে সালাত ও জাকাতের নির্দেশ দিত আর সে ছিল তার রবের সন্তোষপ্রাপ্ত। (মারইয়াম: ৫৫)
সালাতের হুকুম:
সজ্ঞান, সাবালক প্রত্যেক মুসলমানের ওপর সালাত ফরজ। আল্লাহ তাআলা বলেন,’তোমরা সালাত কায়েম কর এবং জাকাত প্রদান কর।’ (বাকারা: ১১০)
আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘অতএব তোমরা সালাত কায়েম কর, নিশ্চয় সালাত মুমিনদের ওপর নির্দিষ্ট সময়ে ফরজ।’ (নিসা: ১০৩)
অন্যত্র বলেছেন, ‘আর তাদেরকে কেবল এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল যে, তারা যেন আল্লাহর ইবাদত করে। তাঁরই জন্য দীনকে একনিষ্ঠ করে, সালাত কায়েম করে এবং জাকাত দেয়; আর এটিই হল সঠীক দীন।’ (বাইয়িনা: ০৫)
রাসূল (সা:) বলেন, ‘তোমরা নিজ সন্তানদের সালাতের নির্দেশ দাও, যখন তারা সাত বছরে পদার্পন করে। আর যখন তাদের বয়স দশে উপনীত হয় তখন সালাতের জন্য প্রহার করো এবং তাদের বিছানা আলাদা করে দাও।’ (সহীহ আল-জামে: ৫৮৬৮)
রাসূল (সা:) বলেন, ‘ আল্লাহ তাআলা পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ফরজ করেছেনম যে ব্যাক্তি সুন্দর করে অযু করবে, অত: পর সময়মত তা অদায় করবে এবঙ তার রুকু ও একাগ্রতা যথাযথ আদায় করবে, আল্লাহর দায়িত্ব হচ্ছে তাকে ক্ষমা করে দেওয়াখ আর যে এমনতি করবেনাম তার ব্যাপারে আল্লাহর ইচ্ছাম হয় তাকে ক্ষমা করে দিবেন, না হয় তাকে শাস্তি দিবেন।’
চলবে…………………………………………
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে ৫ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সাথে আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমীন আপনাকে ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ সুন্দর ও গুরুত্ব পূর্ণ লেখার জন্য।
তবে বানানের দিকে একটু সচেতন হবেন।
@সত্যের সন্ধানী ১০০%, সহমত।