সালাত ত্যাগকারী কাফের
লিখেছেন: ' shovoon' @ রবিবার, জুলাই ৩১, ২০১১ (৮:০৩ পূর্বাহ্ণ)
যে ব্যাক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে সালাত ত্যাগ করে,যদি সে সালাত ওয়াজিব হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে, তবে ওলামাদের দুটি মাতের সবচেয়ে সহীহ মত অনুযায়ী সে বড় কুফরি করবে। আর যদি সালাত ওয়াজিব হওয়ার বিষয়টি অস্বীকারকারি-অবিশ্বাসী হয়,তাহলে ওলামাদের সর্বসম্মত মতে সে কাফের হয়ে যাবে। এ সম্পর্কে নবী করীম (সা) এরশাদ করেন:
“কর্মের মুল হচ্ছে ইসলাম, তার স্তম্ভ হচ্ছে সালাত এব এর সর্বোচ্চ চূড়া হচ্ছে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ বা সংগ্রাম করা।”
(ইমাম আহমদ, তিরমিজি ও ইবনে মাজাহ)
নবী করীম (সা) আরও বলেন:
“ব্যাক্তি এবং শিরক ও কুফরীর মধ্যে পার্থক্য হল সালাত ছেড়ে দেওয়া।”(মুসলিম)
নবী করীম (সা) আরও এরশাদ করেন:
“আমাদের ও তাদের মধ্যে যে প্রতিশ্রুতি, তা হলো সালাত। অতেব যে সালাত ছেড়ে দিবে সে কুফরী করল।”(ইমাম আহমদ ও আহলে সুনান)
সালাত ত্যাগ করা কুফরী, এর কারন হল যে, যে ব্যাক্তি সালাত ওয়াজিব হওয়া অস্বীকার করে সে আল্লা্হ এবং তার রাসূল, আহলে ইলম ও ঈমান এর সর্বসম্মত মিথ্যা প্রতিপন্নকারী। যে ব্যাক্তি অলসতা করে সালাত ছেড়ে দিল তার থেকে উক্ত ব্যাক্তির কুফরী খুবি মারাত্মক। উভয় অবস্হাতেই মুসলিম শাসকগনের প্রতি অপরিহার্য হলো যে, তারা সালাত ত্যাগকারীকে তওবা করার নির্দেশ দিবে, যদি তওবা না করে, তা হলে এ বিষয়ে বর্নিত দলীলের ভিত্তিতে তাদেরকে হত্যা কারার নির্দেশ প্রদান করবে।
অতএব সালাত ত্যাগকারীকে বর্জন করা এবং তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা ওয়াজিব এবং সালাত ত্যাগ করা থেকে আল্লাহর কাছে তওবা না করা পর্যন্ত তার দাওয়াত গ্রহন করা যাবেনা। সাথে সাথে তাকে ন্যায়ের পথে আহবান ও নসিহত প্রদান করা ওয়াজিব এবং দুনিয়া ও আখিরাতে সালাত ত্যাগ করার কারনে যে শাস্তি তার প্রতি নির্ধারিত আছে তা থেকে সাবধান করতে হবে।
যে ব্যাক্তি সালাত পরেনা তাহলে সে অবশ্যই কাফের, মুর্তাদ ও ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যাবে এবং তার সাথে একইসাথে বসবাস করা জায়েজ নয়।বিনয় ও প্রয়োজনে তাদেরকে চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে বারবার সালাত পরার জন্য আহবান জানাতে হবে।এর ফলে হয়তো বা আল্লাহ বেনামাজিদেরকে হিদায়াত দাল করতে পারেন, কারন সালাত ত্যাগকারী কাফের।
সালাত ত্যাগকারী কাফের, পবিত্র কোরান থেকে প্রমান:
আল্লাহ তাআলা মুশরিকদের সম্পর্কে এরশাদ করেন: “অতএব যদি তারা তোবা করে নেয় এবং সালাত আদায় করতে এবং যাকাত দিতে থাকে, তাহলে তারা তোমাদের দ্বীনি ভাই হয়ে যাবে, আর আমি বুদ্বিমান লোকদের জন্যে বিধানাবলি বর্ননা করে থাকি।”(সূরা আত-তওবাহ:১১)
আয়াতের অর্থ থেকে বুঝা যায় যে, যদি তারা উক্ত কাজগুলি না করে, তাহলে তারা আমাদের ভাই নয়।তবে গোনাহ যত বড়ি হোকনা কেন, গুনাহের কারনে ঈমানী ভাতৃত্ব নষ্ট হবেনা।কিন্তু ইসলাম থেকে খারিজ হওয়ার কারনে ঈমানী বন্ধন শেষ হয়ে যাবে।
সালাত ত্যাগকারী কাফের,হাদীস থেকে প্রমান:
নবি করীম (সা এরশাদ করেন:
“ব্যাক্তি এবং শিরক ও কুফরীর মধ্যে পার্থক্য হলো সালাত ছেড়ে দেওয়া।” (মুসলিম)
এ সম্পর্কে হাদীসের সুনান গ্রন্হগুলিতে আবু বোরায়দাহ (রা নবী করীম (সা থেকে বর্ননা করেন:
“আমাদের ও তাদের মধ্যে যে প্রতিশ্রুতি তা হলো সালাত, অতেব যে সালাত ছেড়ে দিল সে কুফরী করল।”
সাহাবায়ে কেরামের উক্তি:
১)আমিরূল মুমিনিন ঊমর (রা) বলেন:
“যে ব্যক্তি সালাত ছেড়ে দিল তার ইসলামে কোন অংশ নেই।”
২)আব্দুল্লাহ বিন শাকীক (রহ) বলেন:
“নবী করীম (সা) এর সাহাবাগন সালাত ত্যাগ করা ছাড়া অন্য কোন আমলকে কুফরী মনে করতেন না।”
এ কথা যখন স্পষ্ট হয়ে গেল যে, সালাত ত্যাগকারী কফের, তাই অবশ্যি তার প্রতি মুরতাদের হুকুম বর্তাবে। এবং নুসূস বা কোরান ও হাদীসে এমন কোন প্রমান নেই যে, সালাত ত্যাগকারী মুমিন অথবা সে জান্নাতে প্রবেশ করবে অথবা সে জাহান্নাম থেকে নাজাত পাবে ইত্যাদি। যার মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারি যে সালাত ত্যাগকারীর কুফরীকে তাবীল বা অপব্যাখ্যা কারা হয়েছে যে,সে নিম্নতর কুফরীতে লিপ্ত হবে।
সালাত ত্যাগকারীর প্রতি শরিয়াতি বিধান
১ম:বেনামাজির কোন মুসলিম মহিলার সাথে বিয়ে হারাম। সালাত না পড়া অবস্হায় যদি তার আকদ বা বিবাহ সম্পাদন করা হয়, তহলেও তার বিবাহ বা নিকাহ বাতিল বলে গন্য হবে। এবং এই বিবাহের মাধ্যমে উক্ত স্ত্রী স্বামীর জন্য হালাল হবেনা।আল্লাহ পাক মুহাজির মহিলাদের সম্পর্কে এরশাদ করেন:
“যদি তোমরা জানতে পার যে, তারা মুমিন নারী, তবে তাদেরকে কাফেরে নিকট ফেরত পাঠিওনা। মুমিন নারীরা কাফেরদের জন্য বৈধ নয় এবং কাফেররা মুমিন নারীএর জন্য বৈধ নয়।”(সূরা মুমতাহিনা:১০)
২য়: বিবাহ বন্ধন সম্পাদন হওয়ার পর যদি সে সালাত ত্যাগ করে, তা হলেও তার বিবাহ বাতিল হয়ে যাবে এবং পুর্বের যে আ্য়াত উল্লেখ করা হল তা আনুযায়ী স্ত্রী তার জন্য হালাল হবেনা। এ বিষয়ে আহলে ইলমদের নিকট ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষন প্রশিদ্ধ রয়েছে।বিবাহ বাতিল হওয়ার ব্যাপারে স্ত্রী মিলনের আগে হোক বা পরে হোক এতে কোন পার্থক্য নেই।
৩য়:যে ব্যাক্তি নামাজ পরেনা তার জবেহকৃত পসু খাওয়া যাবেনা। কেন তার জবেহকৃত পসু খাওয়া যাবেনা? এর কারন হলো যে,উক্ত জবেহকৃত পসু হারাম।অথচ যদি কোন ইহূদী অথবা খৃষ্টান জবাই করে তা আমাদের জন্য খাওয়া হালাল।আল্লাহ রক্ষা করুন। উক্ত সালাত ত্যাগকারীর কোরবানী ইহূদী ও নাসারার কোরবানীর চাইতেও নিকৃষ্ট।
৪র্থ:বেনামাজির মক্কা ও তার হারামের এলাকায় প্রবেশ হারাম।এ সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন:
“হে মুমিনগন!মুশরিকরা হচ্ছে একেবারেই অপবিত্র, অতেব তারা যেন এ বছরের পর মসজিদুল হারামের নিকটেও আসতে না পারে।” (সূরা তওবাহ:২৮)
৫ম:সালাত ত্যাগকারী ব্যাক্তির যদি কোন নিকট আত্মী্য় মারা যায়, তাহলে সে সম্পত্তির কোন মিরাছ পাবেনা।নবী করীম (সা বলেন: মুসলিম কাফেরের ওয়ারিস হবেনা, কাফের মুসলিমের ওয়ারিস হবেনা।” (বুখারী ও মুসলিম)
রাসূল (সা আরো বলেন: “ফারায়েজ তাদের মৌল মালিকদের সংযোজন করো।অর্থাৎ সর্ব প্রথম তাদের অংশ দিয়ে দাও যাদের অংশ নির্ধারিত। অতপর যা অবশিষ্ট থাকবে তন্মধ্যে নিকটতম পুরুষ আত্মীয়দেরই হবে অগ্রাধিকার।: (বুখারি ও মুসলিম)
৬ষ্ঠ:সে মারা গেলে তাকে গোসল দেয়ার কোন প্রয়েজন নেই,দাফন-কাফনের দরকার নেই এবং তার উপর জানাযার সালাত ও পরা হবেনা এবং মুসলমানদের কবরস্হানে দাফন ও কর আযাবেনা। এখন প্রশ্ন হল যে উক্ত মৈত ব্যাক্তি কে আমরা কি করব? এর উত্তর হলো আমরা তার মৃতদেহকে খালি জায়ফায় নিয়ে যাবো এবং তার জন্য গর্ত করে তার পূর্বের পরিধেয় কাপরেই দাফন-করব। কারন ইসলামে তার কোন পবিত্রতা ও মর্যাদা নেই। তাই কারি জন্য বৈধ হবেনা যার সম্পর্কে সে জানে যে সে সালাত পরতোনা, এমন কেউ মারা গেলে মুসলমানদের কাছে জানাযার নামাজের জন্য তাকে উপস্হাপন করা।
৭ম: কিয়ামতের দিন ফিরাউন,হামান, কারূন এবং উবাই ঈবনে খালাক কাফেরদের নেতা ও প্রধানদের সাথে তার হাসর-নাসর হবে। সে জান্নাতে প্রবেশ করবেনা এবং তার পরিবার পরিজনের তার জন্য কোন রহমত ও মাগফেরাতের দোআ বৈধ নয়।কারন সে কাফের, মুসলমানদের প্রতি তার কোন অধিকার নেই। আল্লা্হ বলেন: “নবী ও মুমিনদের জন্য যায়েজ নয় যে, তারা মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। যদিও তারা আত্মীয়ি হোক না কেন,একথা প্রকাশ হওয়ার পর যে তারা জাহান্নামের আধিবাসী।” (সূরা তওবাহ:১১৩)
এবার নিজেই চিন্তা করে দেখুন আপনার কি অবস্হা।
যদি কেহ নামাযের ফরজ অস্বীকার না করে, শুধু মাত্র অলসতা করে নামায পরিত্যাগ করে তাহলে ও কি সে কাফের হয়ে যাবে? তবে সে নামায ছাড়ার কারনে গুনাহ হচ্ছে সেটা স্বীকার করে।
জানার অপেক্ষায় থাকলাম।
@anamul haq, অলসতা করে নামায পরিত্যাগ করা মানে ইচ্ছাকৃত ভাবে পরিত্যাগ করা,সুতরাং সে কাফের।
@shovoon, তাহলেতো বাংলাদেশের অধিকাংশ মুসলমানই কাফির হয়ে যায় আপনার ফতোয়ায়?
@মুসাফির,হা ঠিক বলেছেন কিন্তু কিচ্ছু করার নাই,আর আমার ফতওয়া অনুসারে নয়,কোরআন এবং হাদিস এর কথা অনুসারে।
@shovoon, তাহলে কি বেনমাজীর সাথে বিবাহ জায়েয হবেনা? তাদের হাতের জবেহ খাওয়া যাবেনা?
ভাই চালিয়ে যান। অনেক কাজের পোষ্ট। আর আমার লিংকটিও দেখবেন আশা করি। সম্পূর্ন যদিও কপি করেছেন আমার পোষ্ট থেকে তারপর ও আপনাকে ধন্যবাদ, কারন আমল করে তা প্রচার করাই আমাদর মুখ্য উদ্দেশ্য।
@shahedups, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাই,এই সর্বত্র প্রচার করা দরকার।
জনাব.খুব কঠিন বিষয় ফতোয়া দিলেন। মেহের বানি করে আপনার বিস্তারিত পরিচয় দিবেন?আপনার ইলেমের যোগ্যতা তুলে ধরুন।