প্রকৃতির বৈচিত্র্য: ডারউইনবাদীদের নাইটমেয়ার-৫
লিখেছেন: ' এস.এম. রায়হান' @ শনিবার, জানুয়ারি ২২, ২০১১ (৩:০৩ পূর্বাহ্ণ)
বিবর্তন তত্ত্বকে বিজ্ঞানের নামে প্রতিষ্ঠিত তত্ত্ব হিসেবে চালিয়ে দিয়ে ডারউইনবাদীদের কল্পকাহিনী প্রচারকে উন্মোচন করার সহজ ও কার্যকর একটি পন্থা হচ্ছে সাধারণ লোকজন ও ছাত্র-ছাত্রীদেরকে বিবর্তন তত্ত্ব নিয়ে প্রশ্ন করা শেখানো। বেশী নয় মাত্র দুটি মৌলিক প্রশ্ন শেখালেই হবে। তাহলে দেখা যাবে বড় বড় ডারউইনবাদীরাও সাধারণ লোকজন ও ছাত্র-ছাত্রীদেরকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছেন। যেমন, এক প্রজাতি থেকে এলোমেলো পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে ধাপে ধাপে সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রজাতি বিবর্তিত হওয়ার প্রমাণ কোথায়? নির্দিষ্ট একটি জায়গায় আষ্টেপিষ্টে চেপে ধরতে হবে। কেউ কেউ হয়ত দুটি প্রজাতির মধ্যে কিছু সাদৃশ্য দেখানোর চেষ্টা করবেন। সেক্ষেত্রে পরবর্তী প্রশ্ন হচ্ছে দুটি প্রজাতির মধ্যে কিছু সাদৃশ্য থাকা মানেই কী করে প্রমাণ হয় যে এক প্রজাতি থেকে অন্য প্রজাতি ধাপে ধাপে বিবর্তিত হয়েছে? কেউ কেউ আবার জীবাশ্ম কিংবা ডিএনএ’র উদাহরণ নিয়ে আসতে পারেন। এক্ষেত্রেও একই ধরণের প্রশ্ন করতে হবে। এভাবে যৌক্তিক প্রশ্ন করা শুরু করলেই দেখবেন যে তারা বিজ্ঞানের নামে ধর্মের মতো করে বিবর্তনবাদের কল্পকাহিনী প্রচার করার মানসিক শক্তি হারিয়ে ফেলেছেন, যেহেতু বিবর্তন তত্ত্বের বৈজ্ঞানিক কোন ভিত্তি নেই।
নীচের ভিডিওতে সরীসৃপ প্রজাতির একটি প্রাণীর শিকার ধরার পদ্ধতিটা খুব ভালভাবে লক্ষ্য করুন। দেখবেন যে বিশাল লম্বা জিহ্বাকে দ্রুতগতিতে বাহিরে ছুঁড়ে দিয়ে শিকার ধরছে। বেশ দর্শনীয়। তারা সরাসরি মুখ দিয়ে শিকার ধরে না। তো এই যে বিশাল লম্বা জিহ্বাকে বাহিরে ছুঁড়ে দিয়ে শিকার ধরছে – এই পদ্ধতি কীভাবে এলোমেলো পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ধাপে ধাপে বিবর্তিত হওয়া সম্ভব? এরকম একটি পদ্ধতি কি আদৌ ধাপে ধাপে বিবর্তিত হতে পারে? লম্বা জিহ্বা আর শিকার ধরার পদ্ধতি যদি প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ধাপে বিবর্তিত হতে থাকে তাহলে সেই ধাপগুলোতে প্রাণীটার অবস্থা কেমন হবে? ভেবে দেখুন।
প্রজাপতিকে যারা হাত দিয়ে ছুঁয়ে দেখেছেন তারা নিশ্চয় লক্ষ্য করেছেন যে প্রজাপতির ডানা অত্যন্ত সূক্ষ্ম, মসৃণ, ও কারুকার্যখচিত এবং ডানাতে এক ধরণের পাউডারও থাকে যে পাউডার প্রজাপতির ডানাকে পিচ্ছিল করে রাখে। শুধু তা-ই নয়, প্রজাপতির সম্মুখদিকে সুঁচের মতো অত্যন্ত সূক্ষ্ম ও লম্বা শুঁড়ও লক্ষণীয়। প্রজাপতির মতো অতি সূক্ষ্ম, মসৃণ, ও কারুকার্যখচিত ডানাযুক্ত প্রজাতি কোথা থেকে ও কীভাবে ধাপে ধাপে বিবর্তিত হবে? এই ধরণের বিবর্তন কী করে সম্ভব? নিজেরাই দেখুন:
উপসংহার: সরীসৃপ প্রজাতির লম্বা জিহ্বা আর শিকার ধরার পদ্ধতি প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ধাপে অন্য কোন প্রাণী থেকে বিবর্তিত হতে পারে না। এই ধরণের বিবর্তনের পক্ষে কোন প্রমাণও নাই। ফলে এই প্রাণীকে একদম প্রথম থেকেই সব কিছু সহ পূর্ণাঙ্গভাবে থাকতে হবে, যেটি বিবর্তন তত্ত্বের বিপরীত। প্রজাপতির ক্ষেত্রেও অনুরূপ যুক্তি প্রযোজ্য।
আপনাকে দুটি প্রশ্ন :
১। “বিবর্তনবাদ” এর মুল সংগা কি বিবর্তনবাদীদের দৃষ্টিতে ?
২। ডারউইন কি দাবী করেছিলো ?
@ম্যালকম এক্স, ভাই আমি এই পোষ্টটির লেখক নই, তবে আপনার প্রশ্নের উত্তর দিতে পারলে ভাল লাগবে। দুটি প্রশ্নের মোটামুটি একই রকম।
বিবর্তনবাদের ধারনা অনুযায়ী, পৃথিবীতে প্রাণের আবির্ভাব পানিতে, দৈবভাবে সংগঠিত কোন রাসায়নিক পরিবর্তনের মাধমে। এভাবে উৎপত্তি লাভ করা প্রাণ/প্রাণী পরবর্তিতে বিভিন্ন ধাপে বিবর্তিত হয়ে আজকের রূপ লাভ করেছে।
আর ডারউইনের দাবিও এটাই ছিল।
এজন্য এ মতবাদ মানুষকে স্রষ্টাহীন বিশ্বাসের দিকে ধাবিত করে। আর কোরআন মানুষকে শেখায় আল্লাহ্ সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা।
“তোমরা ইবাদত কর তোমার রবের যিনি তোমাদের ও তোমাদের আগে যারা অতিক্রান্ত হয়েছে তাদের সবার সৃষ্টিকর্তা।”
সুরা আল বাক্বারা ২১
অর্থাৎ মানুষ বিবর্তনের মাধ্যমে বানর বা অন্য কোন কিছু থেকে আসেনি, তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে।
@ম্যালকম এক্স, প্রশ্নের জন্য ধন্যবাদ। আমার আগের পর্বগুলো পড়লে কিন্তু আপনার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যেতেন। সাজেদুর রহমান ইতোমধ্যে কিছুটা বলেছেন, তবে বিবর্তনবাদীরা বিপদে পড়ে প্রাণের উদ্ভবকে বিবর্তনবাদ তত্ত্ব থেকে বাহিরে রাখতে চান।
বিবর্তনবাদ তত্ত্ব এবং ডারউইনের দাবি অনুযায়ী ব্যাকটেরিয়া-সদৃশ সরল একটি জীব থেকে অন্ধ-অচেতন ও উদ্দেশ্যহীন প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে মিলিয়ন মিলিয়ন বছর ধরে ধীরে ধীরে এক প্রজাতি থেকে ভিন্ন প্রজাতি বিবর্তিত হতে হতে মানুষে এসে ঠেকেছে। যেমন মাছ থেকে ধীরে ধীরে সরীসৃপ, সরীসৃপ থেকে ধীরে ধীরে পাখি, চতুষ্পদ কোন জন্তু থেকে ধীরে ধীরে তিমি, এক কীট-পতঙ্গ থেকে অন্য কীট-পতঙ্গ, জীবজগত থেকে উদ্ভিদজগত, এক উদ্ভিদ থেকে অন্য উদ্ভিদ, নর বানর জাতীয় প্রজাতি থেকে মানুষ, ইত্যাদি বিবর্তিত হয়েছে। আপাতদৃষ্টিতে শুনতে ভালই শুনালেও তাদের বিশ্বাস স্রেফ কল্পকাহিনী ও হাস্যকর কিছু অনুমানের উপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে আছে। বাস্তবে এই ধরণের বিবর্তন সম্ভব নয়। এ বিষয়ে আমার সিরিজ দুটি পড়ে দেখতে পারেন।
সুন্দর পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ।
Darwinism সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইলে harunyahya.com ভিজিট করতে পারেন। এমনকি এখানে ডাউনলোড করার জন্য বাংলা বইও পাবেন।
@Shah Shajedur Rahman, পড়ার জন্যও ধন্যবাদ।
এস.এম. রায়হান’ @ আপনার এই ধরনের লেখা গুলি আমার খুব ভাল লাগে।
[...] অন্যান্য পর্ব: [পর্ব-২|পর্ব-৩|পর্ব-৪|পর্ব-৫|পর্ব-৬|পর্ব-৭|পর্ব-৮|পর্ব-৯|পর্ব-১০] [...]