লাশ ঘর
লিখেছেন: ' সরোয়ার' @ বৃহস্পতিবার, মে ২৭, ২০১০ (৮:০৬ অপরাহ্ণ)
লাশ ঘর পেরিয়ে আমার কর্মক্ষেত্র। বেশীর ভাগ সময়-ই মনে থাকে না লাশ ঘর অতিক্রম করছি। অনুভূতির স্নায়ুগুলো কেমন জানি ভোঁতা হয়ে গেছে। নিত্তনৈমিত্যিক দৃশ্য- লাশের গাড়ি আসা-যাওয়া করছে, লাশের শোকাহত আত্মীয়-স্বজনরা প্রিয়জনের লাশের অপেক্ষায়রত। তাদের কেউ আবার সিগারেট ফুঁকছে। লাশ কর্মীরা যে যার কাজে ব্যস্ত, তাদের দু-একজন কাজের ফাঁকে হালকা খোশ গল্প করছে। যে মানুষটা লাশ হয়ে শীতল ঘরে স্থান পেয়েছে সেও হয়তো আমাদের মত ব্যস্ত ছিল। এখন তার নেই কোন ব্যস্ততা। অফিস যাওয়ার নেই কোন তাড়াহুড়া।
একদিন অফিস থেকে ফেরার পথে রাস্তার পাশে একজনকে পড়ে থাকতে দেখলাম। পরনে বেশ পরিপাটি পোষাক। খুব যত্ন করে চুল আচঁড়ানো। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে। আশে-পাশে তেমন কেউ নেই, শুধুমাত্র কয়েকজন ট্রাফিক পুলিশ ছাড়া। এ সময় অ্যাম্বুলেন্স এসে থামল। হাসপাতালে সদ্য-কর্মচঞ্চল মানুষটির নিস্তেজ দেহের রুটিন চেক হবে। তারপর স্থান হবে লাশ ঘরে। এদিকে হয়তবা আদরের সন্তান বাবার সাথে খেলার জন্য অপেক্ষা করছিল। এমনও হতে পারে সহধর্মীনী রান্না করছিল আর চিন্তা করছিল স্কুল ভ্যাকেশনে পরিকল্পনা। অথবা কীভাবে সারপ্রাইজ দেয়া যায় তার প্রিয় সঙ্গীকে। তারা জানেও না যে তাদের প্রিয় মানুষটির নিথর দেহখানা লাশ ঘরের মেঝেতে অবহেলায় পড়ে আছে।
লাশ ঘর মানে মর্গ। এখানে না গেলেও সত্যিকার লাশঘরের বাসিন্দা আমরা সবাই, জীবন স্বপ্নের অনেক কিছু সত্য অনেক কিছু মিথ্যা কিন্তু এই লাশঘর হল চিরবাস্তাব। এখানে যাবার আগে আল্লাহ আমাদের সত্যিকার মুসলিম হওয়ার তৌফিক দান করুন।
লেখা সু্ন্দর হয়েছে।
@বাংলা মৌলভী,
এক বন্ধুর মোবাইলে পোষ্টমর্টেমের ভিডিও ক্লিপ দেখার সুযোগ হয়েছিলো। সে ডাক্তারী পড়াশোনা করতো। যেভাবে অযত্নে অবহেলায় একটি লাশকে কাটা হয় তা দেখে খুব কষ্ট পেয়েছিলাম।
পোষ্টমর্টেম বিষয়ে শরীয়াতের হুকুম কি বলতে পারবেন?
আলহামদুলিল্লাহ, খুবই সুন্দর একটি লেখা।