‘মুক্তচেতনা’র ‘আলোকিত’ ভূমি ইউরোপে সাম্প্রদায়িক ভাবধারার পূনর্জাগরণ!
লিখেছেন: ' সরোয়ার' @ রবিবার, জুন ২৭, ২০১০ (৫:০৭ অপরাহ্ণ)
ডাঃ জাকির নায়েককে ব্রিটিশ গভর্নমেন্ট কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষণা!
মুক্তবুদ্ধির চর্চা ও অসাম্প্রদায়িক চেতনা প্রতিষ্ঠা ছিল ফরাসী বিপ্লবের অন্যতম উদ্দেশ্য। ইউরোপকে মুক্তবুদ্ধি বা চেতনার আলোকিত কেন্দ্র হিসেবে উপস্থাপন করে ইউরোপিয়ানরা বেশ গর্ব করেন। ক্রমে ক্রমে সেই তকমা খসে পড়ছে এবং আসল রূপ উন্মোচিত হচ্ছে। সেক্যুলারিজমের উপর ভিত্তি করে ইউরোপে ফ্রান্স সর্বপ্রথম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মেয়েদের হিজাব নিষিদ্ধ করে। তারপর থেকে অনেক দেশ ফ্রান্সের এই নীতিকে অনুসরণ করে। বোরকার পর হালাল বার্গারের ইসুতে ফ্রান্সে তোলপাড় হয়। ফ্রান্সের নীতিকে অনুসরণ করে ইউরোপের অন্যান্য দেশ বোরকা পরাকে আইনগতভাবে ক্রিমিনালাইজড করা হয়। বেলজিয়াম ও ইতালী বোরকা পরিধানের অপরাধে দুজনকে জরিমানা করেছে (এখানে এবং এখানে)। সাম্প্রতিক সুইজারল্যান্ডে গণভোটের মাধ্যমে মসজিদের মিনার তৈরীকে গনতান্ত্রিকভাবে নিষিদ্ধ করা হয়। হল্যান্ডে Geert Wilders-এর নেতৃত্বে কোরান ব্যান করার পক্ষপাতি রাজনৈতিক দল সম্প্রতি ইলেকশনে আশাতীত সাফল্য পেয়েছে। তার রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ২০০৪ সালে এবং দলের মূল ভিত্তি হচ্ছে ইসলাম বৈরীতা। গত সংসদীয় ভোটে পেয়েছিল ৯টি আসন। এবার তা বেড়ে দাড়িয়েছে ২৪ তে। সর্বোচ্চ আসন লাভকারী দল পেয়েছে ৩১টি আসন।
মুহাম্মদ (সাঃ)-কে ব্যঙ্গ করে ডেনিশ কার্টুনকে নিয়ে ইউরোপ জুড়ে ফ্রীডম অব এক্সপ্রেশন বা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে অনেক উচ্চ-বাচ্য করতে দেখা গেছে। গর্ব সহকারে ফলাও করে প্রচার করা হয়েছে যে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হচ্ছে ইউরোপিয়ানদের ভ্যালু, যার উপর তাদের সমাজ দাঁড়িয়ে আছে। মজার ব্যাপার হচ্ছে ব্রিটিশ গর্ভমেন্ট ডাঃ জাকির নায়েককে তার মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কেড়ে নিয়ে তাকে নিষিদ্ধ করেছে। শুধু তাই নয়, তাকে সন্ত্রাসকে প্রমোটকারী হিসেবেও আখ্যায়িত করে তার নামে ভয়ঙ্কর মিথ্যা অপবাদ প্রচার করা হচ্ছে! ডঃ জাকির নায়েকের টক বা স্পীচ সন্ত্রাসকে কোনভাবেই সমর্থন করে না, বরং সন্ত্রাসী চেতনাকে উপড়ে ফেলতে ভূমিকা রাখছে।
যুক্তিবাদের ধারক ও বাহকরা যুক্তিতে না পেরে তাদের সংকীর্ণ মনোভাবকে ক্ষমতা বা গায়ের জোরে অন্যের উপর আরোপ করতে দ্বিধা করে না। তথাকথিত ‘মুক্তচেতনা’র আসল উদ্দেশ্যই সন্দেহজনক। মূলকথা হচ্ছে ইউরোপে সামাজিক অবক্ষয় হচ্ছে দ্রুতগতিতে। তৈরী হচ্ছে মিউটেন্ট জেনারেশন। জন্মহার বেশ হতাশাজনক। অন্যদিকে দিন দিন বাড়ছে বৃদ্ধদের সংখ্যা। সব কিছু মিলিয়ে ভবিষ্যত তেমন আশাব্যঞ্জক নয়। এহেন পরিস্থিতিতে অনেকে ইসলামের দিকে আকৃষ্ট হচ্ছেন। আসলে এটাই বড় মাথা ব্যথার কারণ। এ সমস্ত পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রন করতে ইসলামের বিরুদ্ধে সম্প্রাদায়িক ভাবধারাকে উসকে দেওয়া হচ্ছে। তার প্রমাণ হিসেবে উল্লেখ করা যায় সম্প্রতি ইউরোপ জুড়ে এন্টিমুসলিম দলগুলো নির্বাচনে আশাতীত সাফল্য পাচ্ছে। তার মানে ক্রমে ক্রমে মুসলিমদের জীবনধারণ ইউরোপে আরো কঠিন হবে। ইসলামের শান্তিপূর্ণ সুবাতাস ইউরোপ তথা সারা পৃথিবীতে বইবে যেটা মুসলিমরা মনে-প্রাণে বিশ্বাস করে। এজন্য মুসললিমদেরকে অত্যন্ত কষ্ট ও ধৈর্য্যসহকারে শান্তিপূর্ণ কর্মকান্ডের উদাহরণ সৃষ্টি করে শান্তির সুবাতাস ছড়াতে ভুমিকা রাখতে হবে।
ডাঃ জাকির নায়েক এই ভিডিওতে তার বিরুদ্ধে ব্রিটিশ মিডিয়ার সাম্প্রতিক মিথ্যাচারকে খন্ডন করেছেন:
ডাঃ জাকির নায়েক এই ভিডিওতে তার বিরুদ্ধে ব্রিটিশ গভর্নমেন্ট কর্তৃক তথ্য বিকৃতিকে ভুল প্রমাণ করেছেন:
প্রসংগত, হল্যান্ডের চরম ইসালাম ও মুসলিম বিদ্বেষী Geert Wilders-এর পলিটিক্যাল পার্টিতে অন্যতম ভূমিকা পালন করেন সোমালিয়ান বংশদ্ভূত বিখ্যাত এক্স-মুসলিম আয়ান হিসরি আলি। ইসলামের বিরুদ্ধে গল্প বানাতে আয়ান হিরসি আলি তার বিয়ে নিয়ে মিথ্যা বলেছিলেন। তিনি হলান্ডে Asylum ভিসায় নাগরিত্ব পেয়েছিল। তার পরে ইসলামের বিরুদ্ধে অপ-প্রচার করে সংসদে এমপি পর্যন্ত হয়েছিলেন। পলিটিক্সে তার দাপট এতই ছিল যে, হল্যান্ডের সরকারের পতন হয়েছিল তার ইস্যুকে কেন্দ্র করে! Asylum ভিসার সময় মিথ্যা তথ্য দেওয়ার কারণে তার নাগরিত্ব বাতিল হয়ে যাওয়ার আলোচনা এড়াতে আমেরিকায় পাড়ি জমায়। বর্তমানে নিও-কন (neo-con) হয়ে American Enterprise Institute-এ কাজ করছে! মজার ব্যাপার হচ্ছে, Time magazine hailed her as one of the world’s “100 most influential people”. The Economist described her as a “cultural ideologue of the new right”.
আয়ান হিসরি আলি কানাডার তথাকথিত ‘শরিয়া আইন’ বিরোধীতার নামে ইসলামের বিরুদ্ধে কাজ করেছেন। আশ্চার্যজনক হলেও সত্য যে সদালাপের নিয়মিত লেখক স্ব-ঘোষিত ইসলামের সংস্কারক জ়ামিলুল বাসার আয়ান হিসরি আলি সহ অন্যান্য ইসলাম বিদ্বেষীদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মুসলিমদের বিরুদ্ধে ক্যাম্পেইন করেছেন! বিস্তারিত জানতে পড়ুনঃ
“সংস্কারক” মুখোশে: জামিলুল বাসার
http://shodalap.com/sorowar/4530
“সংকারক” বাসারের সহযোগী আয়ান হিরসি আলি যিনি কানাডার Aarbitration Act ক্যাম্পেইনে মূখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন, তিনি সম্প্রতি গার্ডিয়ান পত্রিকায় সাক্ষাতকার দিয়েছেন। যদিও তিনি এক্স-মুসলিম তবুও তিনি ইসলামকে সংস্কার করার প্রেসক্রিপশন বাতলিয়েছেন- enlightenment project নামে। তবে এটা করতে হবে চার্চের মাধ্যমে!!! তিনি ক্রিশ্চিয়ান ধর্মের প্রচারে নেমেছেন!!! সাক্ষাতকারের অংশবিশেষঃ
Why are Muslims so hypersensitive to criticism and why don’t they do anything with it except to respond by denying it or playing the victim?
# Hirsi Ali proposes an “enlightenment project” in which “critical thinking” be introduced to her former faith through various mediums, one of which, she suggests, is the Christian church.
http://www.guardian.co.uk/world/2010/may/08/ayaan-hirsi-ali-interview
মজার যোগসূত্র লক্ষ্য করুন। বাসার সাহেবের লিখা প্রবন্ধ– নবি-রাছুলগণ কি ভুলের উর্দ্ধে-১/২
http://shodalap.com/index.php/m-j-bashar/prophet/
ধন্যবাদ আপনার এই সময়োপযুগী পোস্টের জন্য ।
তাদের এই ভন্ডামি নতুন নয় । সালামান রুশদীর স্যাটানিক ভার্সেস বের হবার পর , আহমদ দীদাত বিবিসিতে ৫ মিনিট বক্তব্য দিতে চেয়েছিলনে ৫০ হাজার ডলার এর বিনিময়ে । অথচ বিবিসি সেটা রাজি হয়নি । এটাই ফ্রীডম ওব স্পীচ !!!!!
Assalam U Alaikum,
Aside from the non-muslims our lost brothers are also making it much worse. Such is one comment shown below from expatriate Pakistani-Canadian
“Every participant in the event is guilty of endorsing gay-bashing, Jew-hatred and the second-class status of women,” explained Fatah on Friday. “These young men and women may not be the infantry of the worldwide Islamist jihad against humanity, but they are certainly its cheerleaders and are playing the role of termites undermining the foundations of Western civilization.” more by Tarek Fatah
He is refering to the “Journey of Faith” conference to be held @ Toronto, Canada from July 2nd till 4th.
Inshallah, as usual me and my family and close friends with their families will be attending this. I guess now I have become part of what my lost brother has also mentioned.
I have been following the international news online for the last weeks and things do not look good.
I pray that Allah will help brother Naik overcome this and also the local scholars of UK, Canada and USA also needs to step up or else they would become the next. If this really happens the vaccum left by our beloved scholars will make our youths orphan of proper information. Guess who will be filling this vaccum ? I might be paranoid but the trend does not look prospective. Inshallah, we have our plans and Allah has His.
Allahu Mustan.
চমৎকার একটি তথ্যসমৃদ্ধ লেখা পড়লাম। লেখককে অজস্র ধন্যবাদ।
অসংখ্য ধন্যবাদ চমৎকার একটি লেখার জন্য।
চরমভাবে মুসলিম বিদ্বেষী এক্স-মুসলিম আইয়ান হিসরি আলির ( যিনি সদালাপের ইসলামের সংস্কারক এম জে বাসার সাহেবের সাথে কানাডাতে মুসলিম বিরোধী নো-‘শরিয়া’ ক্যম্পেইন করেছেন!) সহযোগী নেদাল্যান্ডের প্রভাবশালী পলিটিশিয়ান Geert Wilders ক্ষমতায় গেলে স্কার্ফ পরিধানকারী মুসলিম মেয়েদের কাছে থেকে ট্যাক্স হিসেবে ১০০০ ইউরো আদায় করার প্রস্তাব দেন। মজার ব্যাপার হচ্ছে, ট্যাক্স থেকে প্রাপ্ত টাকা মেয়েদের অধিকারর আদায়ের জন্য ব্যয় করার প্রস্তাব দেন। এই প্রস্তাবনা নির্বাচনী অঙ্গিকারের অংশ ছিল। যদিও দু সপ্তাহের আগের নির্বাচনে অল্পের জন্য ম্যাজরিটি আসন পায় নি (তারা পেয়েছে ২৪ টি আসন, যেখানে সর্বোচ্চ আসন পাওয়া পার্টি পেয়েছে ৩১ টি আসন), তাদের ভবিয্যত বড় উজ্জল!
Wilders wants headscarf tax
http://www.rnw.nl/english/article/wilders-wants-headscarf-tax
Poll favourite may put anti-Islam MP Geert Wilders in Cabinet
http://www.timesonline.co.uk/tol/news/world/europe/article7145217.ece
নতুন পোষ্ট লিখলাম, প্রথম পাতায় আসলো না,
প্রথম পাতায় প্রকাশ করে কিভাবে ?