কুরবানী ইস্যুকে কেন্দ্র করে দেশকে সঙ্ঘাতের দিকে ঠেলে দেওয়ার অপচেষ্টা!
লিখেছেন: ' সরোয়ার' @ বুধবার, অগাষ্ট ৪, ২০১০ (১১:০৭ পূর্বাহ্ণ)
ইতোমধ্যে খবরের কাগজে একটি খবর হয়তো পড়ে থাকবেন এই শিরোনামে-
“কোরবানি নিয়ে মিথ্যা তথ্য পড়ানো হয় দাবি করে হাইকোর্টে রিট”
“কোরবানির উদ্দেশ্যে হজরত ইব্রাহিম (আ.) তাঁর প্রিয় ছেলে হজরত ইসমাইল (আ.)-কে নয়, তাঁর আরেক ছেলে হজরত ইসহাক (আ.)-কে শুইয়েছিলেন দাবি করে হাইকোর্টে রিট আবেদন দাখিল করা হয়েছে। এতে আরো দাবি করা হয়, এ নিয়ে বই-পুস্তকে যা পড়ানো হয়, তা মিথ্যা।
….গতকাল এই রিটের ওপর শুনানি গ্রহণের আগে সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের বিচারপতিসহ রিটকারী ও সরকারপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সবাই অজু করে নেন। আদালতের নির্দেশেই সবাই অজু করেন। গতকাল সকালে রিট আবেদনটি দেখে আদালত বলেন, এ রিট আবেদনের শুনানির জন্য সবাইকে অজু করে আসতে হবে। আদালত রিটকারী, সরকারের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রাজিক আল জলিলকে অজু করে আসতে বলেন এবং বিচারপতিরাও অজু করে আসার পর দুপুরে শুনানি হবে বলে জানিয়ে দেন। পরে দুপুরে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। রিটকারী নিজেই শুনানি করেন।”
প্রথমত, কোর্ট এ বিষয়ে কেন আমল দিচ্ছে? এটা কি কোর্টের বিষয়? তাহলে তো মুসলিম বিদ্বেষী মুক্তমনারাও (যারা মূলত নাস্তিক মৌলবাদী) মামলা করে দাবী করতে পারে যে কোরান-হাদিস ভুল, মিথ্যা, ইত্যাদি। তারা কোর্টে এটাও রিট করতে পারে যে আল্লাহ নেই এবং প্রমাণ হিসেবে তারা বিবর্তনবাদকে উল্লেখ করবে। তখন কোর্ট কীভাবে ফয়সালা করবে?
ভাবুন তো, কোন মুসলিম সংগঠনের পক্ষ থেকে কোর্টে রিট করা হলো এভাবে- “রাবণ-সীতার কাহিনী কাল্পনিক বা দুর্গাপুজ়া হাস্যকর।” বিষয়টা আদালতে উঠার সাথে সাথেই আন্তর্জাতিক খবর হিসেবে শিরোনাম হবে। সংখ্যা-লঘুদের ধর্ম-বিশ্বাস নিয়ে উপহাস করে তাদের ধর্ম পালনে বাধার অভিযোগ তুলে জাতিসঙ্ঘের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভের আয়োজন করবে। তার সাথে যোগ হবে মুক্তমনাদের মাতম। ইসমাইল (আ.)/ইসহাক (আঃ) ইস্যুটা নতুন নয়। এটা বেশ প্রাচীন খেলা। ইহুদী/খৃষ্টানদের ধর্মানুসারে ইসহাক ছিলেন প্রতিজ্ঞার সন্তান (অর্থাৎ যাকে কোরবানী দেয়া হয়েছিল), ইসলাম এসে সত্য তথ্যটি পুনঃস্থাপিত করেছে; তা হলো ইসমাইল (আঃ)-কেই কোরবানী দেয়া হয়। এসবের উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশে বিবাদ লাগানো।
যে উদ্দ্যেশ্যেই করা হোক না কেন তা অত্যন্ত পরিষ্কার। মুসলিমদেরকে ক্ষেপিয়ে দিয়ে রাস্তা-ঘাটে লাঠি-সোটা-টুপি-দাড়ি-অলাদের মিছিলে নামাতে বাধ্য করে সেগুলোর ছবি-ভিডিও তুলে পশ্চিমা মিডিয়াতে প্রচার করে বাংলাদেশকে ‘ইসলামিক জঙ্গী’ দেশ হিসেবে চিহ্নিত করে ধীরে ধীরে প্রকাশ্যে ইসলাম পালন নিষিদ্ধ করার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরী করা। তা না হলে ইহুদী-খ্রিস্টানদের সাথে মুসলিমদের ধর্মীয় মতবিরোধ নিয়ে অন্য এক ধর্মাবলম্বী এ বিষয়ে কোর্টে যাবেন কেন?
দেশের সার্বিক অবস্থা বিবেচনায়, বিষয়টি অতীব জরুরী। এতে সাধারণ মুসলমান খুব মর্মাহত হবেন। অন্যদিকে আবেগপ্রবন মুসলিম বা ধর্মীয় রাজনৈতিক গ্রুপ এটাকে ইস্যু বানাতে পারে যাতে দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনিষ্ট হতে পারে। যারা রিট আবেদন করেছে তারা তা চিন্তা-ভাবনা ও পরিকল্পনা করেই এগিয়েছে। তাছাড়া কোর্টের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে, কেননা বিচার বিভাগের মূল লক্ষ্য হচ্ছে সমাজে ন্যায়-বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শান্তি কায়েম করা। ইসলাম ধর্ম এতো ঠুনকো নয় যে বিচারপতির রায়ে তা পরিবর্তন হয়ে যাবে। তাদের রায়ে/মন্তব্যে ইসলাম ধর্মের কিছু আসে যায় না। ষড়যন্ত্রকারীদের উদ্দেশ্য হচ্ছে মুসলমানদের মনে আঘাত করে তাদের পাতা ফাঁদে পা দেওয়ার জন্য প্ররোচিত করা। ইসলাম ধর্ম ধৈর্য শিক্ষা দেয়। তাই মুসলমান হিসেবে আমাদের বিষয়টা এড়িয়ে যাওয়া উচিত। এটাই দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণকর।
কোরবানীর ইস্যু নিয়ে বিস্তারিত জানতে পড়ুনঃ
হযরত ইব্রাহিম (আ.) ইসমাইল (আ.)-কে নয়, ইসহাক (আ.)-কে কোরবানি করতে নিয়ে গিয়েছিলেন? আসুন দেখি কোরআন ও বাইবেল কি বলে।
ইব্রাহীম, ইসমাঈল ও ইসহাক (আ.) সম্বন্ধে জ্ঞাতব্য
নোটঃ লেখাটি সদালাপ- এ প্রথম প্রকাশিত হয়।
মেরিনারকে ব্লক করে কী লাভ হল? তাঁর লেখা এমন একটা ঘটনার সঠিক ব্যাখ্যা অন্য ব্লগ থেকে পড়তে হল। মেরিনারের মত গুণী লেখককে শুধু আনব্যান করলেই হবেনা, ফিরে আসার জন্য অনুরোধ করা উচিত। আল্লাহর ওয়াস্তে তার পোস্টের সংখ্যা এবং মানটা একটু দেখুন!
নিজেদের মধ্যে বিবাদ করে আমরা এই অবস্থায় এসেছি।
@আবু আনাস, আস-সালামু আলাইকুম,
মেরিনারকে অনেক আগেই অনুমোদন (আন-ব্যান) দেয়া হয়েছিল । উনি মডারেশনে ছিলেন, যেটাও তুলে দেয়া হোলো ।
ওয়াসসালাম ।
ও সরোয়ার ভাই, আপনার লেখার সাথে একমত। ব্যাপারটা ঠান্ডা মাথায় মোকাবেলা করতে হবে।
একটি তথ্য – হাইকোর্টে এখন জমা পড়া মামলার সংখ্যা ৩,২৫,৫৭১। যেখানে পুলিশ এমপিদের বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে সংসদ থেকে অনুমতি নিতে হয় সেখানে এক লোক ইসলাম কারেকশন করতে সকালে গিয়ে রিট করে দুপুরে শুনানি করে আসে। আর ৩,২৫,৫৭১ টি মামলার লোকেরা বছরের পর বছর নিষ্পত্তির জন্য ঘুরে।
আল্লাহ এই দেশে গযব না দেয় – ভূমিকম্প, আগুন, বন্যা – কি যে আসবে সামনে আল্লাহ জানেন।
@আবু আনাস,
ওখানেই কবি নীরব!
@আবু আনাস, ধন্যবাদ শক্ত কথাগুলি বলার জন্য। আমাদের দেশে নাকি কোর্টের বিরুদ্ধে কথা বলা নিষেধ। ওনারা ‘ফেরেস্তা’ । সরকারের পোষ্য ‘ফেরেস্তা’। কোর্ট অবমাননার জন্য না আবার- কি হয়ে যায়!এ সমস্ত কোর্টের বিরুদ্ধে মামলা করার কোন আইন আছে কি?
বিচারক এই মামলাটি বিবেচনার অযোগ্য ঘোষনা করে বাতিল করে দেওয়া উচিত।
কারণ আদালত এই বিষয়ের পক্ষে বা বিপক্ষে রায় দেয়ার কোনো এখতিয়ার রাখেনা।
এর রায়ে যদি হযরত ইসমাঈল আলাইহিস্সালাম বলা হয় তাহলে বর্তমান সরকার ও তাদের তাবেদার আদালত বাংলাদেশের ৯০% মুসলমানকে এই মেসেজ দিবে যে তারা কোরআন-হাদিসের পক্ষে অবস্থান করছে, দেশের বেকুব জনগণকে খুশি করবার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হবে আদালত। ব্যাপারটা একই সময়ে ঘটবে যখন সরকার ইসলামী দলগুলোর জন্য রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষনা করবে, প্রকাশ্যে।
অন্যদিকে রায়ে যদি হযরত ইসহাক আলাইহিস্সালাম বলা হয় তবে দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদেরকে উস্কে দিয়ে রাজপথে নামানোর সব ব্যবস্থা সরকার পাকা করে ফেলবে। উম্মাদ জনতা কিংবা সরকারের স্পাই দু একটি গাড়ি পোড়ালেই কাল একিই আদালত/সরকার ইসলামের নামে মিছিল করাও বন্ধ করে দিতে পারবে।
এখন দেখাযাক, যে পঙ্গু আদালত ১৩ দুর্নীতি মামলার আসামীর সব কটি মামলাই আমলে না নিয়ে বাতিল করে দেয় সে আদালত এদেশের মানুষকে জঙ্গি উপাদি দেয়ার ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করে নাকি জনগণকে ইসলাম নিয়ে রাজনীতির করবার গণতান্ত্রিক অধিকার বণ্চিত করার হাতিয়ারে পরিণত হয়।
একজন বিধর্মী, যাকে মুসলমানেরা কাফের বলে থাকেন, তিনি কিভাবে ইসলাম ধর্ম নিয়ে রিট করা তো দূরের কথা, কথা বলার সাহস রাখে। নিজে কাফের হয়ে মুসলমানদেরকে কাফের বলার সাহস রাখে কিভাবে? মুসলমানদেশে কি মুসলমান মড়ে গেছে? কোর্টেই বা সে রিট কিভাবে গ্রহণ করা হলো? ধর্ম কখনও কোর্টের বিষয় হতে পারে না। সবাই কি পাগল হয়ে গেছে ? নাকি ভয়ংকর কিছু ঘঠিয়ে কারো ফায়দা লুটার অভিসন্ধি। আমাদের সাবধান হতে হবে। এটা নিশ্চিত যে, ইহা ইহুদী-মোশরেকের সম্মিলিত দূরভিসন্ধি। পিছনে আছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ক্ষমতালিপ্সু নামধারী মুসলমান দল। বছরে ১৪ বার বেড়াবার নামে ওমড়া করলে মুসলমান হয় না। আমাদেরকে শয়তান চিনতে হবে। মুসলমানদেরকে যারা কষ্ঠ দেয় তারা কি মুসলমান হতে পারে?
উপরের কথাগুলি আবেগে বলেছি- কিন্তু বাস্তবে কোন খারাপ কিছু ঘটুক আশা করি না- আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের সহায় হউন-আমীন।
‘কোর্টে শুনানীর আগে সবাই ওযু করে নিলেন’।–এটা ইসলামের প্রতি মারাত্বক সম্মানের কথা কিন্ত্ু হাস্যকর মনে হল। রিটকারী ননমুসলিলম- তার ওযু করা বা না করার কোন মুল্য আছে কি? বিষয়টা শুনে একটা পুরনো কথা মনে পড়ল।আমাদের গ্রাম্য ভাষায়, ‘সারো (সরে যান) ওস্তাজী মাও হাট যায়’। ছাত্র তার বাড়ীর লজিং মাষ্টারকে (আবাসিক গৃহশিক্ষক) বলছে, স্যার একটু সরে দাড়ান আমার মা হাটে যাবে। কারণ, উনি স্যারের সামনে বেপর্দা হতে লজ্জা পাচ্ছেন।এটা ইহুদীদের রীতি ।তারা মুখে ইসলামের রীতির প্রসুংসা করবে- রমজান মাসে ইফতার পার্টিতে অংশগ্রহন করবে আর পিছনে বোমারু বিমান পাঠিয়ে দিবে মুসলমানদের ‘সুখী’ করার জন্য।