প্রশ্ন: উচ্চস্বরে জিকির করা প্রসঙ্গে।
লিখেছেন: ' সাপোর্ট টিম [ পিস ইন ইসলাম ]' @ সোমবার, এপ্রিল ১১, ২০১১ (২:৫৭ অপরাহ্ণ)
প্রশ্ন: উচ্চস্বরে জিকির করা যাবে কি? “ইল্লাল্লাহ” জিকির কি জায়েয?
প্রশ্নকারী: মাহমুদ
উত্তর: উচ্চস্বরে জিকির করা যাবে। এবং তা অনেক আয়াত ও হাদীস দ্বারা প্রমানিত। তবে কিছু শর্ত সাপেক্ষে:-
এক: স্বর এত উচ্চ করা যাবেনা যাতে নিজের ও অন্যের কষ্ট হয়।
দুই: লৌকিকতা মুক্ত হতে হবে। (এমদাদুল আহকাম খ:১,পৃ:৩২০)
তিন: জিকিরের স্বর উচ্চ করাকে ইবাদত মনে করা যাবেনা। (ফয়যুল কালাম ১৩৯)
:দলীলে শরয়ী:
عن ابى هريرة رض قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول الله انا عند ظن عبدى بى و انا معه اذا ذكرنى. فان ذكرنى فى نفسه ذكرته فى نفسى. وان ذكرنى فى ملاء ذكرته فى ملاء خير منهم. وان تقرب الى شبرا تقربت اليه ذرعا. وان تقرب الى ذراعا تقربت اليه باعا وان اتانى يمشى اتينه هرولة
অনুবাদ: হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, নবী করীম (সাঃ) বলেন, আল্লাহ তায়ালা নিজেই ইরশাদ করেছেন। আমার বান্দা আমার প্রতি যেরুপ ধারণা করে আমি তার সাথে সেরুপ আচরণ করি। এবং বান্দা যখন আমাকে স্মরণ করে আমি তার সংগী হই। যদি সে একাকি স্মরণ করে আমিও তাকে একাকি স্মরণ করি। যদি সে জামাতে সম্মিলিত ভাবে স্মরণ করে, আমিও তাকে তার চেয়ে উত্তম জামাতে স্মরণ করি। যদি বান্দা আমার দিকে এক বিঘত অগ্রসর হয়, তাহলে আমি তার দিকে এক হাত অগ্রসর হই। আর যদি সে আমার দিকে এক হাত অগ্রসর হয়, আমি তার দিকে দুই হাত অগ্রসর হই। যদি সে আমার দিকে হেটে আসে আমি তার দিকে দৌড়ে যাই। (বোখারী শরীফ খ:৮,পৃ:৫২৮), (মুসলিম শরীফ খ:৪, পৃ:২০৬)
ইমাম সুয়ূতী রহ: বলেন, মজলিসে আল্লাহর জিকির বা আলোচনা উচ্চ আওয়াজ ব্যতিত হয়না। (সিবাহাতুল ফিকির ৪৫)
দ্বিতীয় দলীল:
عن ابى سعيد الخدرى رض قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: أكثروا ذكر الله حتى يقولوا انه مجنون
অনুবাদ: হযরত আবু সাইদ খুদুরী রা: হইতে বর্ণিত তিনি বলে নবী করীম (সা:) ইরশাদ করেন তোমরা বেশি বেশি আল্লাহর জিকির কর, যাতে মানুষ পাগল বলতে শুরু করে। (আল- মুসতাদরাক লিল হাকীম খ:১ পৃ:৬৭৭)
আল্লামা সুয়ূতি রহ: বলেন: উচ্চস্বরে বেশি বেশি জিকির বললে পাগল বলা হয়, নিম্ন আওয়াজে নয়। (সিবাহাতুল ফিকির ৫৫)
উল্লেখিত হাদীস দ্বারাও প্রমানিত হয় শর্ত সাপেক্ষে উচ্চ স্বরে জিকির করা যাবে। বিশেষ করে অন্যদের শিক্ষা দেয়ার উদ্দেশ্যে, তবে যে কোন দোয়া ও জিকির নিন্ম স্বরে করা উত্তম।
“ইল্লাল্লাহ” জিকির
ইল্লাল্লাহ জিকির বৈধ আছে। কেননা বিশুদ্ধ আরবী ভাষায় কখনো মুসতাসনা মিনহু তথা যা থেকে কিছু বাদ দেওয়া হয়েছে, এমন শব্দকে ঊহ্য রাখা হয়, আবার কখনো মুছতাছনা তথা যা বাদ দেওয়া হয়েছে এমন শব্দ ও ঊহ্য রাখা হয়। এখানেও মুসতাছনা মিনহু অর্থাৎ লা ইলাহা কে ঊহ্য রাখা হয়েছে।
উপরোক্ত আলোচনা সুস্পষ্ট ইঙ্গিত বহন করে যে “ইল্লাল্লাহ” এর পূর্বে লা ইলাহা বলা হয়েছে। পক্ষান্তরে অবস্থাও বুঝায় এখানে “ইল্লাল্লাহ” এর পূর্বে লা ইলাহা বলা হয়েছে। কেননা প্রত্যেক মুসলমানের বিশ্বাস হলো আল্লাহ ছাড়া দ্বিতীয় কোন মাবুদ নাই। (এমদাদুল ফতোয়া খ:৫ পৃ: ২২৩)।
তবে রাসূল (সাঃ) ও সাহাবায়ে কেরাম থেকে যে সমস্ত দোয়া ও জিকির বর্ণিত আছে, সে গুলির মাধ্যমে জিকির করা ভাল।
উত্তরদাতা
মোঃ আঃ রহীম
উচ্চতর হাদীস গবেষনা বিভাগ
২য় বর্ষ
ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার বাংলাদেশ।