নাবী- রাসুলগণের প্রকৃত উত্তরাধিকারী আ’লিম কারা? – ১
লিখেছেন: ' taalibul_ilm2011' @ মঙ্গলবার, নভেম্বর ৮, ২০১১ (২:০৭ অপরাহ্ণ)
প্রারম্ভকিাঃ
إن الحمد لله نحمده و نستعينه و نستهديه و نعوذبالله من شرور أنفسنا ومن سيئات أعمالنا من يهده الله فلا مضل له و من يضلل فلاهادي له ، و أشهد أن لاإله إلا الله وحده لاشريك له، وأشهد أن محمد عبده و رسوله صلى الله عليه و سلم ]قال الحافظ فى ” الفتح ” ৯ / ২০২ : أخرجه أصحاب السنن و صححه أبو عوانة و ابن حبان ، قال الترمذى : حسن [
১. সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য, আমরা তাঁরই প্রশংসা করি, আমরা তাঁর কাছে সাহায্য চাই, আমরা তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি, আমরা তাঁরই কাছে আমাদের অন-রের অনিষ্ট থেকে এবং আমাদের কর্মসমূহরে খারাপ প্রভাব থেকে আশ্রয় চাই। নিশ্চয় আল্লাহ যাকে সঠিক পথে পরিচালিত করেন, কেউ তাকে পথভ্রষ্ট করতে পারে না, আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট হতে দেন, কেউ তাকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে পারে না। আমরা এই সাক্ষ্য দেই যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং আমরা আরও সাক্ষ্য দেই যে, মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর বান্দাহ ও রসুল।
أما بعد فإن أصدق الحديث كتاب الله و إن أفضل الهدي هدي محمد و شر الأمور محدثاتها و كل محدثة بدعة و كل بدعة ضلالة و كل ضلالة في النار] .قال الشيخ الألباني : ( صحيح ) انظر حديث رقم : ১৩৫৩ في صحيح الجامع[
অতঃপর সবচেয়ে সত্য কথা হচ্ছে আল্লাহর কিতাব (আল কুরআন), উত্তম পথনির্দেশক হচ্ছেন মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। ইসলামে সবচেয়ে নিকৃষ্ট কাজ হচ্ছে এর মধ্যে নতুন আবিস্কার (ইবাদাত)। প্রত্যেক নতুন আবিস্কৃত বিষয়ই (ইবাদাতই) বিদয়াত, প্রতিটি বিদয়াতই হচ্ছে পথভ্রষ্টতা, আর প্রতিটি পথভ্রষ্টতার পরিণাম হচ্ছে জাহান্নাম।
২। প্রথমেই কিছু আয়াত ও হাদিস দ্বারা পুরো সিরিজের উপর একটু আইডিয়া দেয়ার চেষ্টা করছি।
إِنَّمَا يَخْشَى اللَّهَ مِنْ عِبَادِهِ الْعُلَمَاءُ إِنَّ اللَّهَ عَزِيزٌ غَفُورٌ - سورة فاطر 2835
আল্লাহ্র বান্দাহ্দের মধ্যে তারাই তাঁকে ভয় করে যারা জ্ঞানী। (সূরাহ্ ফাত্বির, ৩৫ : ২৮)
إن العلماء ورثة الانبياء
أخرجه أحمد (5/196 ، رقم 21763) ، وأبو داود (3/317 ، رقم 3641) ، والترمذى (5/48 ، رقم 2682) وابن ماجه (1/81 ، رقم 223) ، وابن حبان (1/289 ، رقم 88) ، والبيهقى فى شعب الإيمان (2/262 ، رقم 1696) [
'আলিমগণ নাবীদের উত্তরাধিকারী।’ (মুসনাদ আহমাদ - ২১৭৬৩, সুনান আবু দাউদ - ৩৬৪১, সুনান তরিমযিী - ২৬৮২, সুনান ইবনে মাজাহ - ২২৩, সহীহ ইবনে হিব্বান - ৮৮, শুয়াবুল ঈমান - ১৬৯৬, আলবানীর মতে সহীহ, দখেুনঃ সহীহ ও জয়ীফ সুনান ইবনে মাজাহ - ২২৩)
من يرد الله به خيرا يفقهه في الدين وإنما أنا قاسم والله يعطي أخرجه أحمد
(৪/৯৬ ، رقم ১৬৯২৪) ، والبخارى (১/৩৯ ، رقم ৭১) ، ومسلم (২/৭১৮ ، رقم ১০৩৭) ، وابن حبان (১/২৯১ ، رقم ৮৯) . وأخرجه أيضًا : الدارمى (১/৮৫ ، رقم ২২৪) [
হজরত মুয়াবিয়া (রা.) হতে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : ‘আল্লাহ যার কল্যাণ সাধনের ইচ্ছা করেন, তাকে দ্বীনের সঠিক উপলব্ধি দান করেন।’ (সহীহ বুখারী -৭১, সহীহ মুসলিম ১০৩৭, মুসনাদ আহমাদ - ১৬৯২৪, সহীহ ইবন হিব্বান - ৮৯, সুনান দারমেী - ২২৪)
আবু জ্বার (রা.) হতে বর্ণিত তিনি বলেছেন :
أَخْبَرَنِي أَبُو ذَرٍّ، قَالَ: كُنْتُ أَمْشِي مَعَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: "لَغَيْرُ الدَّجَّالِ أَخْوَفُنِي عَلَى أُمَّتِي " قَالَهَا ثَلَاثًا. قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ، مَا هَذَا الَّذِي غَيْرُ الدَّجَّالِ أَخْوَفُكَ عَلَى أُمَّتِكَ؟ قَالَ: "أَئِمَّةً مُضِلِّينَ ] أخرجه أحمد
৫/১৪৫(২১৬২১) وفي ৫/১৪৫(২১৬২২), صحيح لغيره; (الطبرانى (৮/১৪৯ ، رقم ৭৬৫৩)[
একদিন আমি রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে ছিলাম, আমি তাঁকে বলতে শুনেছি, ‘আমি আমার উম্মতের জন্য একটি বিষয়কে দাজ্জাল এর থেকেও বেশি ভয় করি।’ আমি ভয় পেয়ে জিজ্ঞেস করলাম, ‘হে আল্লাহর রসুল, সেটি কি?’ তিনি বললেন : ‘বিপথগামী এবং পথভ্রষ্ট আইম্মা।’ (মুসনাদে ইমাম আহমাদ - ২১৬২১ এবং ২১৬২২। শুয়াইব আল আরনাউত এর মতে ‘সহীহ লি গাইরিহী’, তাবরানী - ৭৬৫৩)
(আইম্মা বলতে আ’লিম সমাজ ও সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় নেতৃত্ব উভয়ই বুঝায়)
জাবির বিন আব্দুল্লাহ (রা.) বলেছেন :
রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কাব ইবনে উজরাহ্কে বললেন,
يا كعب بن عجرة من أمراء يكونون من بعدي فمن غشي أبوابهم فصدقهم في كذبهم وأعانهم على ظلمهم فليس مني ولست منه ولا يرد علي الحوض ومن غشي أبوابهم أو لم يغش فلم يصدقهم في كذبهم ولم يعنهم على ظلمهم فهو مني وأنا منه وسيرد علي الحوض] أخرجه الترمذى (২/৫১২ ، رقم ৬১৪) وقال : حسن غريب . وأخرجه أيضًا : الطبرانى (১৯/১০৫ ، رقم ২১২) [
‘হে কাব ইবনে উজরাহ্, আমি তোমার জন্য বোকাদের নেতৃত্ব হতে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই। অচিরেই তোমাদের মধ্যে শাসক হবে, যে কেউ তাদের কাছে যাবে, তাদের অত্যাচারে সাহায্য করবে, তাদের মিথ্যা কথাকে সত্যায়ন করবে, আমি তাদের নই, তারাও আমার নয়। সে ‘হাউজে কাউসারে’ প্রবেশ করতে পারবে না। যে কেউ তাদের কাছে যাবে না, তাদের অত্যাচারে সাহায্য করবে না, তাদের মিথ্যা দাবীসমূহের সত্যায়ন করবেনা, সে আমার, আমি তার। সে ‘হাউজে কাউসারে’ প্রবেশ করতে পারবে। (সুনান তরিমযিী -৬১৪, তাবরানী-২১২, আলবানীর মতে হাসান-সহীহ, দখেুন সহীহ তারগীব ওয়া তারহীব – ২২৪৩)
উস্ট্রের যুদ্ধে (জংগে জামাল), হারিস ইবনে হুত নামক এক ব্যক্তি আলী (রা.)কে জিজ্ঞেস করলো :
قال علي رضي الله عنه للحرث بن حوط وقد قال له أتظن أنا نظن أن طلحة والزبير كانا على باطل فقال له يا حارث إنه ملبوس عليك إن الحق لا يعرف بالرجال أعرف الحق تعرف أهله) تلبيس إبليس, ابن الجوزي ( ১/১০১-
‘আপনি কি মনে করেন, আপনি একাই সঠিক, আর তালহা (রা.), জুবায়ের (রা.) (যারা জান্নাতের সুসংবাদ পেয়েছেন) ভুল? আলী (রা.) তাকে বললেন, ‘হে হারিস! এই ব্যাপারটা তোমার কাছে সন্দেহজনক। অবশ্যই তুমি সত্যকে মানুষের মাধ্যমে যাচাই করবেনা, বরং সত্যকে (প্রথমে) চিনে নাও, তাহলে তুমি সত্যের মাধ্যমে মানুষকে চিনতে পারবে।’ (ইবনুল জাওযী (র.) ‘তালবিছুল ইবলিছ’ গ্রন্থে’ (১/১০১) সহীহ সনদে বর্ণনা করেছেন)
(ইনশাআল্লাহ চলবে)