পর্দা নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্যই প্রযোজ্য
লিখেছেন: ' তালহা তিতুমির' @ বৃহস্পতিবার, জানুয়ারি ২১, ২০১০ (৬:৪১ পূর্বাহ্ণ)
ইসলামে পর্দা হিসেবে হিজাবের বিধান রয়েছে। সাধারণত ইসলামী বক্তারা সবসময় মহিলাদের হিজাবের কথা বলে। কিন্তু আল্লাহ পবিত্র কোরআনে প্রথমে বলেছেন পুরুষের হিজাবের কথা, তারপর নারীদের হিজাব। সুরা নূরের ৩০ নম্বর আয়াতে আছে-
‘ মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং যৌনাংগের হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। ‘
এ সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ [স:] বলেছেন- ” প্রথম দৃষ্টির অনুমতি আছে, দ্বিতী্য দৃষ্টি নিষিদ্ধ।” এর মানে এই নয় যে আপনি একজন মহিলার দিকে তাকাবেন আর দশ মিনিট ধরে তাকিয়ে থাকবেন চোখের পলক না ফেলে। মহানবী [স:] যা বলেছেন তা হলো, যদি কোন মহিলার দিকে হঠাৎ নজর পড়ে যায় , তক্ষুনি দৃষ্টি সরিয়ে নেবেন এবং তার দিকে আর দ্বিতীয়বার স্বেচ্ছায় তাকাবেন না।
এর পরের আয়াত অর্থাৎ সুরা নূরের ৩১ নম্বর আয়াতে আছে-
” ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে অবনত রাখে এবং তাদের যৌনাংগের হেফাযত করে ও নিজেদের দেহ-সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে, কেবল সেসব অংশ ছাড়া যা আপনা হতে প্রকাশিত হয়ে পড়ে; আর যেন তারা তাদের মাথার কাপড় দিয়ে বুকের ওপরটা ঢেকে রাখে এবং তারা যেন তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে শুধুমাত্র তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভাই, ভ্রাতুষ্পুত্র, ভগ্নিপুত্র,নিজ অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ ও বালক যারা নারীদের গোপন অংগ সম্পর্কে অজ্ঞ তারা ব্যতীত; আর তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। হে মুমিন লোকেরা ! তোমরা সকলে মিলে আল্লাহর নিকট তওবা কর, আশাকরা যায় তোমরা কল্যাণ লাভ করবে। ”
হিজাবের নিয়ম-কানুন কোরআন ও সহীহ হাদীসে উল্লেখ আছে। প্রধানত: নিয়ম ৬ টি-
১) পুরুষের নাভী থেকে হাঁটু পর্যন্ত ঢাকতে হবে। মেয়েদের জন্য মুখ আর হাতের কব্জি ব্যতীত সমসস্ত শরীর ঢাকতে হবে। অন্য ৫ টি নিয়ম পুরুষ ও মহিলার জন্য একই।
২) তারা যে পোশাক পরবে সেটা এরকম আঁটসাঁট হবে না যে, তাদের দেহের গড়ন বোঝা যাবে।
৩) পোশাক এমন স্বচ্ছ হবে না, যাতে ভেতর দিকে দেখা যায়।
৪) পোশাক এরকম আকর্ষণীয় হবে না যা বিপরীত লিঙ্গকে আকর্ষণ করে।
৫) পোশাক এমন হবে না, যা অবিশ্বাসীদের মতো, যেমন: ক্রস পরা।
৬) আর এমন পোশাক পরা যাবে না যা বিপরীত লিঙ্গের পোশাকের মতো।
হিজাব বলতে শুধু পোশাক বোঝায় না। মানুষের আচরণ,ব্যবহার,দৃষ্টিভঙ্গি এমনকি অভিপ্রায়কেও বোঝায়। পোশাকের পাশাপাশি চোখ, মন, চিন্তা এমনকি হৃদয়েরও হিজাব থাকতে হবে।
সুরা আহযাবের ৫৯ নম্বর আয়াতে মেয়েদের হিজাবের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরা হয়েছে-
” হে নবী ! আপনি আপনার স্ত্রীগণ ও কন্যাদেরকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের ওপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। “
তাই আসুন আমরা নারী-পুরুষ প্রত্যেকে হিজাব মেনে চলি এবং একটি সুন্দর সমাজ গড়ে তুলি।
চমৎকার বলেছেন ভাই, ধন্যবাদ।
আল্লাহ তা’লা আমাদের নিজের দৃষ্টিকে হিফাযত করার তৌফিক দিন।