মুহাম্মদ ( স: ) এর বহুবিবাহ প্রসংগে ধর্ম বিষয়ে বর্তমান বিশ্বের অন্যতম সেরা ভাষ্যকার ক্যারেন আর্মস্ট্রং
লিখেছেন: ' তালহা তিতুমির' @ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৯, ২০১০ (১:৫৪ অপরাহ্ণ)
পড়ার আগে সবাইকে একটি কথা মনে রাখতে বলবো- তা হলো লেখাটা বিখ্যাত ধর্মীয় ভাষ্যকার ক্যারেন আর্মস্ট্রং এর । অনুবাদ করেছেন শওকত হোসেন। তথ্যসূত্র নিচে দেয়া আছে। ক্যারেন আর্মস্ট্রং সম্বন্ধে জানতে চাইলে ক্লিক করুন – http://en.wikipedia.org/wiki/Karen_Armstrong
এই লেখাটা সামুতেও দিয়েছিলাম, সেখানে পাওয়া মন্তব্যগুলোর জবাব আমি দেয়ার চেষ্টা করেছি। যদি আপনাদের কাছে আরো উপযুক্ত উত্তর জানা থাকে তবে মন্তব্য আকারে লিখে দিতে পারেন। মন্তব্যগুলো পড়তে ক্লিক করুন-
http://www.somewhereinblog.net/blog/talhatitumir/29117342
মুহাম্মদের অসংখ্য স্ত্রী পাশ্চাত্যে যথেষ্ট বিকৃত কৌতুহলের জন্ম দিয়েছে, কিন্তু পয়গম্বর ইন্দ্রিয় সুখে নিমজ্জিত ছিলেন কল্পনা করা ভূল হবে, যেমনটি পরবর্তীকালের কিছু ইসলামী শাসক হয়েছিলেন। মক্কায় একগামী ছিলেন মুহাম্মদ, কেবল খাদিজাকে বিয়ে করেছিলেন, যদিও বহুগামিতা আরবে খুব সাধারণ ব্যাপার ছিল। খাদিজা বয়সে তাঁর চেয়ে অনেক বড় ছিলেন, কিন্তু তাঁকে অন্তত ছ’টি সন্তান উপহার দিয়েছেন তিনি, যাদের মধ্যে মাত্র চারজন কন্যা জীবিত ছিলেন। মদীনায় মুহাম্মদ একজন মহান সায়ীদ (প্রধান) এ পরিণত হন, তাঁর একটা বিশাল হারেম থাকবে বলে প্রত্যাশিত ছিল সবার, কিন্তু এসব বিয়ের অধিকাংশই ছিল রাজনৈতিকভাবে অনুপ্রাণিত। নিজস্ব অতিগোত্র গঠন করার সময় তিনি তাঁর কয়েকজন ঘনিষ্ঠ সহচরের সংগে বৈবাহিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে আগ্রহী ছিলেন, যাতে তাঁদের আরো কাছে আনা যায়। তাঁর প্রিয়তমা স্ত্রী আয়েশা ছিলেন আবুবকরের মেয়ে; তিনি উমার ইবনে আল খাত্তাবের মেয়ে হাফসাকেও বিয়ে করেছিলেন। নিজের দুই মেয়েকে তিনি উসমান ইবনে আফফান এবং আলী ইবনে আবি তালিবের সাথে বিয়ে দেন। তাঁর অপরাপর স্ত্রীদের বেশিরভাগই ছিলেন বয়স্কা নারী, যাদের আশ্রয়দাতা ছিল না বা যারা সেইসব গোত্রের প্রধানদের সাথে সম্পর্কিত ছিলেন যে গোত্রগুলো উম্মাহর মিত্রে পরিণত হয়েছিল। তাঁদের কেউই পয়গম্বরের সন্তান ধারণ করেননি। তাঁর স্ত্রীগণ মাঝে মাঝে আনন্দের চেয়ে বরং সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন। একবার যখন তাঁরা হামলার পর লুন্ঠিত মাল বন্টন নিয়ে ঝগড়ায় লিপ্ত হয়েছিলেন, পয়গম্বর তাঁদের সবাইকে ত্যাগ করার হুমকি দিয়েছিলেন, যদি না তাঁরা কঠোরভাবে ইসলামী মূল্যবোধ অনুযায়ী জীবনযাপন করেন। কিন্তু তারপরও একথা সত্য যে মুহাম্মদ ছিলেন সেইসব বিরল মানুষদের একজন যাঁরা প্রকৃতই নারীসঙ্গ উপভোগ করেন। তাঁর পুরুষ সহচরদের কেউ কেউ স্ত্রীদের প্রতি তাঁর কোমল আচরণ আর যেভাবে তাঁরা তাঁর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে পাল্টা জবাব দিতেন, দেখে বিস্মিত হয়েছেন। মুহাম্মদ সুবিবেচকের মতো তাঁদের কাজকর্মে সাহায্য করতেন, নিজের কাপড় নিজেই সেলাই করতেন তিনি এবং স্ত্রীদের সঙ্গ খুঁজে বেড়াতেন। প্রায়ই স্ত্রীদের কাউকে না কাউকে নিয়ে তিনি অভিযানে বের হতেন তনি, তাঁদের সঙ্গে পরামর্শ করতেন, তাঁদের পরামর্শ গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করতেন। একবার তাঁর সবচেয়ে বুদ্ধিমতী স্ত্রী উম্ম সালামাহ এক বিদ্রোহ ঠেকাতে সাহায্য করেছিলেন।
তথ্যসূত্র:- ক্যারেন আর্মস্ট্রং এর ইসলাম: আ শর্ট হিস্ট্রি। অনুবাদ: সন্দেশ প্রকাশনী।
** নিজ দায়িত্বে মুহাম্মদ নামের পর [স:] পড়ে নেবেন।