লগইন রেজিস্ট্রেশন

প্রকৃত আলেমের পরিচয়। (হাদিস ও সাহাবাগণের জীবনের পরিচালনার ভিত্তিতে)- ২

লিখেছেন: ' দ্য মুসলিম' @ সোমবার, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১০ (৫:২৮ অপরাহ্ণ)

সুত্রঃ এহইয়াউ উলুমুদ্দিন।
মুলঃ ইমাম গাজ্জালী রঃ

প্রকৃত আলেমের পরিচয়। (হাদিস ও সাহাবাগণের জীবনের পরিচালনার ভিত্তিতে)- ১

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু।
(মুল বই থেকে হুবহু না তুলে দিয়ে, কিছু অংশের উদৃতি দেয়া হলো।)

হাদিস শরীফে আছেঃ এক ব্যক্তি হযরত মুসা আঃ এর খেদমত করত। সে মানুষের মধ্যে প্রচার করতে থাকে যে, আমাকে মুসা সফিউল্লাহ বলেছেন, মুসা নাজিউল্লাহ এরূপ বলেছেন এবং মুসা কলীমুল্লাহ এমন বলেছেন। অবশেষে তার কাছে অনেক ধন-সম্পদ হয়ে যায়। সেব্যক্তি চলে যাওয়ার পর হযরত মুসা আঃ তার খোঁজ নিতে শুরু করলেন; কিন্তু কোথাও সন্ধান পাওয়া গেল না। অবশেষে এক ব্যক্তি একটি শুকরের গলায় কালো রশি বেঁধে উপস্হিত হল এবং আরজ করলোঃ আপনি অমুক ব্যক্তিকে চেনেন? মুসা আঃ বললেনঃ হাঁ। লোকটি বললঃ এ শূকরটিই সেব্যক্তি। মুসা আঃ আল্লাহ তায়ালার দরবারে আরজ করলেন, ইলাহী! একে আসল আকৃতিতে ফিরিয়ে দিন, যাতে তাকে এরূপ দশা হওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করতে পারি। আল্লাহ তায়ালা ওহী পাঠালেন। আদম থেকে নিয়ে আজ পর্যন্ত পয়গাম্বরগণ ও ওলীগণ আমাকে যেসব গুণে ডেকেছে, যদি তুমি সেসব গুণে আমাকে আহবান কর, তবুও আমি তোমার আবেদন মন্জুর করবোনা, কিন্তু যে কারণে আমি তার আকৃতি বিকৃত করে দিয়েছি, তা বলে দিচ্ছি। এ ব্যক্তি দ্বীনের বদলে দুনিয়া অন্বেষন করত।

হযরত মুআয ইবনে যাবাল রাঃ থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ আলেমের কাছে বলা যদি শ্রবণের চেয়ে উত্তম হয়, তবে এটা তার জন্য একটা বিপদ। অথচ বলাম মধ্যে সাজানো গুছানো ও বাড়াবাড়ি হয়ে যায়। বক্তা ভুল-ভ্রান্তি থেকে নিরাপদ থাকে না। চুপ থাকার মধ্যে নিরাপত্তা ও বুদ্ধিমত্তা নিহিত।
- কোন কোন আলেম তাদের এলেম কুক্ষিত করে রাখে; অন্যের কাছেও এলেম থাকুক এটা তারা চায় না। এরূপ আলেম দোযখের প্রথম স্তরে থাকবে।
- কোন কোন আলেম এলেমের ব্যাপারে বাদশাহর মত হয়ে থাকে। কোন আপত্তি তোলা অথবা শৈথিল্য প্রদর্শন করা হলে, তারা রেগে-মেগে আগুন হয়ে যায়। এরূপ আলেম দোযখের দ্বিতীয় স্তরে স্তরে থাকব।
- কোন কোন আলেম তাদের এলেম ও উত্তম হাদীসগুলো বিশেষভাবে ধনীদের জন্যে উৎসর্গ করে, যাদের প্রয়োজন আছে তাদেরকে এই এলেমের যোগ্য মনে করে না। এরূপ আলেম দোযখের তৃতীয় স্তরে থাকবে।
- কোন কোন আলেম মুফতী হিসাবে আখ্যায়িত করে এবং ভ্রান্ত ফতোয়া দেয়। অথচ আল্লাহ তায়ালা পদ গ্রহণকারীদেরকে পছন্দ করেন না। এরূপ আলেম দোযখের চতুর্খ স্তরে থাকবে।
- কোন কোন আলেম মানুষের মধ্যে মর্যাদা লাভের উপায় সাব্যস্ত। কোন কোন আলেম দোযখের পঞ্চম স্তরে থাকবে। কোন কোন আলেম নিজের এলেমকে মানুষের মধ্যে লাভের উপায় সাব্যস্ত করে। এরূপ আলেম দোযখের ষষ্ঠ স্তরে থাকবে।
- কোন কোন আলেম অহংকার ও আত্মম্ভরিতাকে নগণ্য বলে মনে করে, রূঢ় ভাষায় ওয়ায করে এবং কেউ উপদেশ দিলে নাক সিঁটকায়। এরূপ আলেম দোযখের সপ্তম স্তরে থাকবে।

তোমার উচিত এলেমে চুপ থাকা, যাতে শয়তানের উপর প্রবল হতে পার। কোন হাসির কথা ছাড়া কখনো হাসবেনা এবং প্রয়োজন ছাড়া স্বস্হান ত্যাগ করবেনা।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ যে কোন আলেমের নিকট বসো না। বরং এমন আলেমের কাছে বসো, যে পাঁচটি বিষয় থেকে পাঁচটি বিষয়ের দিকে আহবান করে- ১) সন্দেহ থেকে দৃঢ় বিশ্বাসের দিকে, ২) রিয়া থেকে এখলাসের দিকে, ৩) সংসারাসক্তি থেকে সংসার ত্যাগের দিকে।, ৪) অহংকার থেকে বিনয়ের দিকে, ৫) শত্রুতা থেকে শুভেচ্ছার দিকে।
তিনি আরও বলেনঃ পাপাচারী আলেম ও মুর্খ আবেদের কারণে আমার উম্মত বরবাদ হবে। সকল মন্দের মন্দ হচ্ছে মন্দ আলেম এবং সকল ভালোর ভালো হচ্ছে ভালো আলেম।

আবদুর রহমান ইবনে গনম বলেনঃ আমার কাছে দশজন সাহাবী এই হাদীস বর্ণনা করেছেন যে, তাঁরা মসজিদে কোবায় জ্ঞানচর্চায় রত ছিলেন, এমন সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেখানে তশরীফ আনলেন এবং বললেনঃ যে পরিমান ইচ্ছা শিখে নাও, কিন্তু আমল না করা পর্যন্ত আল্লাহ তায়ালা তোমাদের সওয়াব দিবেন না।

চলবে।

Processing your request, Please wait....
  • Print this article!
  • Digg
  • Sphinn
  • del.icio.us
  • Facebook
  • Mixx
  • Google Bookmarks
  • LinkaGoGo
  • MSN Reporter
  • Twitter
১৮৩ বার পঠিত
1 Star2 Stars3 Stars4 Stars5 Stars (ভোট, গড়: ৫.০০)

৩ টি মন্তব্য

  1. (*) (*) (Y) (Y) (Y)

    দ্য মুসলিম

    @হাফিজ,

    ধন্যবাদ। আমাদের আসলে আগে প্রকৃত আলিম খুজে বের করা দরকার। যাদের মধ্যে উপরের প্রোপার্টিজ গুলো পাওয়া যাবে।

  2. তিনি আরও বলেনঃ পাপাচারী আলেম ও মুর্খ আবেদের কারণে আমার উম্মত বরবাদ হবে। সকল মন্দের মন্দ হচ্ছে মন্দ আলেম এবং সকল ভালোর ভালো হচ্ছে ভালো আলেম।

    সহমত ।