***বিধর্মীদের শব্দ বিভ্রান্তি ও ষড়যন্ত্র***
লিখেছেন: ' তুষার (ﭡﺸر)' @ শনিবার, ডিসেম্বর ১২, ২০০৯ (৪:০৮ পূর্বাহ্ণ)
শব্দ ব্যবহারের কুচিন্তায় যোগসাধনের ষড়যন্ত্র ইহুদী-নাছারাদের ঐতিহ্যগত প্রবৃত্তি। স্বয়ং রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সময়ও ইহুদী-নাছারাদের এরূপ ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার ছিল।
কুরআন শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “হে ঈমানদারগণ! তোমরা রঈনা বলোনা, উনজুরনা বল এবং শ্রবণ কর। আর কাফিরদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি।” (সূরা বাক্বারা ১০৪)
এই আয়াত শরীফ-এর শানে নূযুলে বলা হয়েছে, ইহুদীরা রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কষ্ট দেবার জন্য “রঈনা” শব্দ ব্যবহার করত যার একাধিক অর্থ রয়েছ। একটি অর্থ হল “আমাদের দিকে লক্ষ্য করুন” যা ভাল অর্থে ব্যবহার হয় আর খারাপ অর্থ হল “হে মূর্খ, হে মেষ শাবক” এবং হিব্রু ভাষায় একটি বদ দু’য়া।
ইহুদীরা রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে রঈনা বলে সম্বোধন করত, প্রকৃতপক্ষে তাদের উদ্দেশ্য ছিল খারাপ অর্থের প্রতি ইঙ্গিত করা। আর ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ রঈনা শব্দের ভাল অর্থের প্রতি ইঙ্গিত করে রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সম্বোধন করলে ইহুদীরা খারাপ অর্থ চিন্তা করে হাসাহাসি করত। এতে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কষ্ট পেতেন তবুও কিছু বলতেন না। কেননা, আল্লাহু পাক-এর রসূল, হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওহী ছাড়া কোন কথা বলতেন না। যেমন- কুরআন শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “তিনি (হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ওহী ব্যতীত নিজের থেকে মনগড়া কোন কথা বলেন না।” (সূরা নজম ৩-৪)
এর ফলশ্রুতিতে আল্লাহ্ পাক কুরআন শরীফ-এর আয়াত শরীফ নাযিল করে “রঈনা” শব্দের বদলে “উনজুরনা” শব্দ ব্যবহার করতে বললেন। কারণ রঈনা শব্দ ভাল-খারাপ উভয় অর্থে ব্যবহার হলেও উনজুরনা শব্দ শুধুমাত্র ভাল অর্থে ব্যবহার হয়। তাই যে সকল শব্দের ভাল-খারাপ উভয় অর্থে ব্যবহার হয়, সে সকল শব্দের পরিবর্তে উপরোক্ত আয়াত শরীফ মুতাবিক ওটার সমার্থক অর্থবোধক শব্দ ব্যবহার করতে হবে, যা শুধুমাত্র ভাল অর্থেই ব্যবহার হয়। শব্দ নিয়ে ইহুদী-নাছারাদের এরূপ ষড়যন্ত্র এখন আগের চেয়ে কমেনি বরং বেড়েছে। অথচ মুসলমান তাদের গাফলতি, অজ্ঞতার কারণে ইহুদী-নাছারাদের সে বিভ্রান্তি ও ষড়যন্ত্রমূলক শব্দের বেড়াজালে নিজেদেরকে বিলীন করে দিচ্ছে।
ইহুদী-খৃষ্টানদের কাছে ইংরেজী ৭ সংখ্যাটি বিশেষ আদরণীয় ও মূল্যায়নযোগ্য সংখ্যা। এর বহুবিধ কারণ রয়েছে।
ইহুদীদের কাছে ৭ সংখ্যা সমাদৃত হওয়ার কারণঃ
১। তাদের কথিত GOD ৭ম দিনকে পবিত্র করে সেদিনে বিশ্রাম গ্রহণ করেন।
২। তাদের দৃষ্টিতে পবিত্রতা অর্জনের জন্য ৭ দিনের প্রয়োজন।
৩। তাদের স্যাবাটিকেল প্রতি ৭ বছরে একবার আগমন করে।
৪। তাদের জুবিলী বছর ৭ বার ৭০ বছর পূর্ণ হওয়ার পর আগমন করে।
৫। তাদের তাওরাত শরীফে ৭ বার ও ৭ সপ্তাহের কথা বলা হয়েছে।
৬। ইহুদীদের বিয়ে অনুষ্ঠানে ৭টি শ্লোত্ববাক্য পাঠ করা হয়ে থাকে।
৭। তাদের বিয়ের পর ৭ দিন উৎসব পালিত হতো।
৮। তাদের কাছে ৭ জন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্বঃ
(১) Abraham (হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম)
(২) Isaac (হযরত ইসহাক আলাইহিস সালাম)
(৩) Jcob (হযরত ইয়াকুব আলাইহিস সালাম)
(৪) Moses (হযরত মূসা আলাইহিস সালাম)
(৫) Jesus (হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম)
(৬) David (হযরত দাউদ আলাইহিস সালাম)
(৭) Joseph (হযরত ইউসুফ আলাইহিস সালাম)
৯। তাদের কথিত GOD ইহুদীদেরকে বলেন যে, “তোমরা যখন ইসরাঈলে প্রবেশ করবে তখন ৭টি জাতিকে স্থানচ্যূত করবেঃ (১) হিট্টি, (২) গিরগেসাইট, (৩) অ্যামোরাইট, (৪) ক্যানানাইট, (৫) পেরিজাইট, (৬) হিভাইট ও (৭) জেবুসাইট।”
১০। তাদের প্রথানুযায়ী মুখমন্ডলে ৭টি গহ্ববরঃ দু’চোখ, দু’নাসারন্ধ্র, দু’কান এবং মুখ।
১১। তাদের ধর্মীয় দৃষ্টিতে ৭ শাখা বিশিষ্ট ঝাড়বাতি জ্বালানো হয়।
১২। ১৯৪৭ সালের ৭ম মাসের ৭ম দিনে ইউরোপের ইহুদীরা এক্সোডাস জাহাজে ফ্রান্স হতে ইসরাঈলের উদ্দেশ্যে পাড়ী জমিয়েছিলো।
খৃষ্টানদের কাছে ৭ সংখ্যা সমাদৃত হওয়ার কারণঃ
১। খৃষ্টানদের কাছে ৭ সংখ্যা সপ্ত মানবগুন সংখ্যা নিদর্শক। যথাঃ (১) সতীত্ব, (২) সংযম, (৩) বদান্যতা, (৪) পরহিতকরণ, (৫) ধৈর্য্যশীলতা, (৬) উদ্দীপনা, (৭) নম্রতা।
২। তাদের দৃষ্টিতে ভয়াবহ পাপের সংখ্যা ৭।
৩। প্রতিটি পাপের জন্য পারগ্যাটোরী পর্বতে রয়েছে ৭টি বেদী।
৪। নিউ টেস্টামেন্ট “ম্যাথিউ অব গসপেল” (১৮:২১) অধ্যায়ে পিটারের প্রতি কথিত যিশুর নির্দেশ ছিলো, ৭ বার করে ৭০ বার ক্ষমা করার।
৫। তাদের মতে, Mary (হযরত মরিয়ম আলাইহিস সালাম)-এর জন্য ৭টি আনন্দ ছিল। যথাঃ (১) পুর্নজন্ম, (২) পাদ্রি কতৃক দর্শন, (৩) যিশুর জন্ম যিশুর জন্য নৈবদ্য আনয়নকারী, (৪) পূর্বদেশের তিন জ্ঞানী ব্যক্তি, (৫) জেরুজালেমের মন্দিরে যিশুপ্রাপ্তি, (৬) খৃস্টের পুনরুত্থান ও (৭) মেরীর জান্নাতে প্রবেশ।
৬। রোমান ক্যাথলিজমে মেরীর ৭টি শোকগাঁথা ছিলো। যথাঃ (১) সাইমনের ভবিষ্যত কথন, (২) মিশরাভ্যন্তরে উড্ডয়ন, (৩) যিশুখৃষ্টের জেরুজালেম মন্দিরে হারানো তিন দিন, (৪) যিশুর ক্রুশ বহন, (৫) ক্রুশে যিশুকে বিদ্ধকরণ, (৬) মৃত যিশুর কোলে মেরীর মূর্তি ও (৭) যিশুর তথাকথিত পূণ্য সমাধির যবনিকা পাতন।
৭। লিউক অব গসপেল অনুযায়ী যিশুর পথ ৭৭তম সরল পথ।
অতএব, মুসলমানদের এখন সময় এসেছে নিজের ঈমান ও ধর্মীয় বিশ্বাস সম্পর্কে সচেতন হওয়ার। নিজেদের ঐতিহ্য এবং বিধর্মীদের ফাঁক সম্পর্কে সচেতন হওয়ার। কেননা ইহুদী-খৃষ্টানরা বলে থাকে LUCKY SEVEN UNLUCKY THIRTEEN। মূলতঃ সংখ্যা হিসেবে মুসলমানদের নিকট ৭-এর প্রতি কোন অসুবিধা নেই। কিন্তু ইহুদী-নাছারারা যে অর্থে ৭ কে Lucky বলে, সেদিক হতে ৭ই Unlucky এবং ১৩ই Lucky। কারণ ৭ হলো তাদের (ইহুদী-নাছারাদের) GOD-এর G-এর সাথে সম্পৃক্ত, যা ইংরেজী বর্ণমালার ৭ম বর্ণ।
উল্লেখ্য, GOD বিশ্বাস করার অর্থ হলো শিরক করা। কারণ GOD-এর রয়েছে GODDESS। এতে আল্লাহ্ পাক-এর সাথে শরিক করা হয়। যে শিরক করবে সে জাহান্নামী আর জাহান্নামী হওয়াটাই আনলাকি বা বদ নছীবের বিষয়।
[বিঃ দ্রঃ আল্লাহ্ পাক কুরআন শরীফ-এ ইরশাদ করেন, “তিনি (আল্লাহ্ পাক) মানবজাতিকে সৃষ্টি করেছেন। মনোহর বাচন ভঙ্গিতে ভাষা শিক্ষা দিয়েছেন।” (সূরা আর-রহ্মান ৩-৪)]
এই আয়াত শরীফ-এর অর্থ দ্বারা সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, আল্লাহ্ পাক মানবজাতিকে সৃষ্টি করেছেন এবং ভাষা শিক্ষা দিয়েছেন।
সত্যিই অত্যন্ত বিষ্ময়কর একটি বিষয় আবিষ্কৃত হয়েছে যে, প্রতিটি ভাষায় প্রথম অক্ষর (বা ধ্বনী) দ্বারাই একজন ব্যক্তি “আল্লাহ্” শব্দটি লিখতে বা পড়তে পারবে। হয়তো উচ্চারণের ধরণে কিছুটা পার্থক্য হতে পারে, কিন্তু প্রতিটি ভাষার প্রথম দ্বারাই আল্লাহ্ পাক-এর নাম মুবারক লেখা সম্ভব, যেভাবে কুরআন শরীফ-এ বর্ণিত রয়েছে।]
অন্যদিকে ১৩ হলো সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে সম্পৃক্ত সংখ্যা। কেননা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নাম মুবারক হচ্ছে “মুহম্মদ” (ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), আর ইংরেজীতে “Muhammad” (ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লিখতে ইংরেজী বর্ণমালার ১৩তম বর্ণ M-এর প্রয়োজন পড়ে। ফলশ্রুতিতে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শনার্থেই ইহুদী-নাছারাদের প্লেনে, রেলে, জাহাজে, হোটেলে ১৩ নং কোন সিট বা রুম থাকে না। এর মূল কারণ হলো ইংরেজী M তথা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি বিদ্বেষ। ইহুদী-নাছারারা খুব সূক্ষভাবে মুসলমানদের দ্বারাই ইসলামী বিষয়গুলোর অবমাননা করিয়ে নিচ্ছে, মুসলমানরা গাফিল ও অজ্ঞ থাকায় তা বুঝছে না।
অথচ সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সম্মান করা আল্লাহ্ পাক-এর নির্দেশ। হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে যে সম্মান করবে সে জান্নাতী। আর জান্নাতী হওয়া হলো সৌভাগ্যের লক্ষণ। সে হিসেবে ১৩তম সংখ্যাকে (M) সম্মান ও মুহব্বত করা সৌভাগ্যের বা লাকী হওয়ার বিষয়। কেননা কুরআন শরীফ-এ আল্লাহ্ পাক সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রেরণ সম্পর্কে ইরশাদ করেন, “নিশ্চয়ই আমি আপনাকে রহমত ব্যতিরেকে প্রেরণ করি নাই।” (সূরা আম্বিয়া ১০৭)
তাই সকল মুসলমানদের LUCKY SEVEN UNLUCKY THIRTEEN নয় বরং UNLUCKY SEVEN LUCKY THIRTEEN এই ধারণা পোষণ করা উচিত।
সাত সংশ্লিষ্ট ইহুদী-নাছারাদের আরেকটি বিভ্রান্তি ও ষড়যন্ত্র হলো কোল্ড ড্রিংকস 7up যার অর্থ দাঁড়ায় ৭ ঊর্ধ্বে অর্থাৎ লাকি ৭ এর পক্ষে প্রচারণা। যেখানে GOD শব্দটাকে গ্রহণ করা মুসলমানদের জন্য শিরকের শামিল। অর্থাৎ কোল্ড ড্রিংকস কোম্পানিগুলোর লোগোর মধ্যেই ঈমান বিধ্বংসী ফাঁদ পেতে রাখা হয়েছে।
ইহুদীদের মালিকাধীন অন্য দু’টি কোল্ড ড্রিংকস হচ্ছে কোকাকোলা ও পেপসি। এই দু’টি পণ্যের মধ্যে, এদের লোগোর মধ্যেও ঈমান ব্বিংসী ফাঁদ পেতে রাখবে, এটাই স্বাভাবিক।
কোকাকোলা বাংলাদেশে সবচেয়ে প্রচলিত কার্বনেটেড পানীয়। এর ফর্মুলায় ৭টি (আবারও সেই ৭) উপাদান রয়েছে, তন্মধ্যে একটি গোপনীয় উপাদান। এই উপাদানটি যে কি তা কোম্পানির মালিকেরা আর নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তি, যাদের সাথে কোক কোম্পানির চুক্তি রয়েছে না বলার জন্য এরা ব্যতীত কেউই জানে না। সুতরাং এটি সন্দেহজনক বস্তুর অন্তর্ভুক্ত। যা কোন পরহেযগার ব্যক্তির পক্ষে গ্রহণ করা সম্ভব নয়। কিন্তু কোকের মূল ঈমানবিধ্বংসী অস্ত্র হচ্ছে এর লোগো। কোকের লোগো আয়নার সামনে ধরলে কোকের লোগোর আসল বক্তব্য ফুটে উঠবে।
ইহুদীরা ইসলামের প্রাথমিক যুগে, তাদের নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালামগণকে শহীদ করার স্বভাবজাত খাছলতের মতোই হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকেও শহীদ করতে চেয়েছিল (নাঊযুবিল্লাহ মিন যালিক)। কিন্তু তারা সক্ষম হয়নি। কোকের গায়ে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিষেদগার করে তারা এখনও তাদের ব্যর্থতার জ্বালা মেটানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে।
অন্যদিকে, PEPSI শব্দটি ভাঙলে এর অর্থ দাঁড়ায়- Pay Each Penny to Save Israel অর্থাৎ পেপসি কোম্পানির প্রতিটি পেনি বা পয়সা ইসরাইলের জন্য উৎসর্গিত। ইহুদী শাসিত কোল্ড ড্রিংকস কোম্পানিগুলো উপার্জনের একটা বড় অংশ ইসরাইলের জন্য ব্যয় করে থাকে।
এছাড়া, সাধারণ মুসলমান তো দূরের কথা, কোল্ড ড্রিংকসে যে অ্যালকোহল রয়েছে, এ সম্পর্কে আলিমরাও ওয়াকিফহাল নয়। সউদী আরবে পানির চেয়ে কোকের দাম কম। এ জন্য প্রায় সবাই পানির বদলে কোক খেয়ে থাকে। (নাঊযুবিল্লাহ) ইহুদীরা মুসলমানদের আমলগুলো নষ্টের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় সব দেশেই পানির চেয়ে অ্যালকোহল সহজলভ্য করে রেখেছে। আমাদের দেশে ইতফতারিতে সবাই ঠাণ্ডা শরবত বা পানীয় আশা করে। এ মাসে কোকের প্রচারণা বেড়ে যায়, তাদের ব্যবসায়িক স্লোগান হয়, “ইফতারিতে কোক খান।” রোযাদাররা না বুঝে তাদের রোযা ভঙ্গ করছেন অ্যালকোহল দিয়ে। (নাঊযুবিল্লাহ) আমাদের দেশে বিয়ে বা পারিবারিক অনুষ্ঠানে পোলাও বিরিয়ানির পর কোক পরিবেশন অলিখিত নিয়মে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে ঈদে কোকের বিক্রি সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে। অধিকাংশ মুসলিম এসব জানে না, জানলেও পালন করে না।
আবার, কোকে কার্বন ডাই অক্সাইডের উপস্থিতির কথা যে কোন শিক্ষিত মানুষই জানে। কিন্তু এ কথা কয়জন জানে যে, কার্বন ডাই অক্সাইডের কারণেই তরলটি পরিণত হয় শক্তিশালী এসিডে। সাধারণভাবে মানুষের হাড়, দাঁত খোলা পরিবেশে হাজার হাজার বছর টিকে থাকতে পারে। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, কোকের গ্লাসে যদি একটি দাঁত রাখা হয় তা ত্রিশ দিনের মধ্যে গলে কোকের মধ্যে মিশে যাবে। এর কারণ কোকের এসিড দাঁতের পদার্থের সাথে বিক্রিয়া করে। শরীরের হাঁড় ও দাঁত মূলতঃ চুন জাতীয় পদার্থের তৈরি, যা কোকের সাথে বিক্রিয়া করে লবণে পরিণত হয়ে কোকের সাথে মিশে যায়। এসব কারণে যে কোন কোল্ড ড্রিংকস শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর সাব্যস্ত হয়েছে।
সুতরাং ইহুদীরা এই কোল্ড ড্রিংকসের লোগোগুলোর মাধ্যমে একদিকে যেমন ঈমান ব্বিংসী ফাঁদ পেতে রেখেছে, অন্যদিকে এর মাধ্যমে মুসলমানদের শারীরিক ক্ষতি সাধনেও তৎপর। অথচ মুসলমানেরা এ ব্যাপারে অত্যন্ত গাফিল ও অজ্ঞ।
ইহুদী-নাছারাদের শব্দ ব্যবহারে ষড়যন্ত্রের আরো কিছু নমুনা নিম্নে উপস্থাপন করা হলোঃ-
মুসলমানেরা সাধারণত তাদের নাম লিখার সময় নামের পূর্বে মুহম্মদ শব্দটিকে সংক্ষিপ্তাকারে Md অথবা Mohd লিখে থাকে। আর এই সংক্ষিপ্তকরণের মাধ্যমে একদিকে মুসলমানেরা নিজেরাই হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নাম মুবারককে ইহানত বা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করছে, আবার এর ফলে ইহুদী-নাছারারাও এটি নিয়ে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের সুযোগ পাচ্ছে। যেমন- সংক্ষিপ্তাকারে লিখিত Md অথবা Mohd কে তারা প্রচার করছে Mouth of Dog বলে। এমনিভাবে মুসলমানেরা মক্কা ও মসজিদ শব্দ দু’টি ইংরেজীতে Mecca ও Mosque লিখে থাকে। অথচ এই শব্দ দু’টি দ্বারা ইহুদী-নাছারারা (Bar) শরাবখানা ও (House of Mosquito) মশার ঘর বুঝিয়ে থাকে। তাই মুসলমানদের উচিত Mecca ও Mosque না লিখে Makkah ও Masjid লিখা।
সপ্তাহের বারগুলোর নামকরণ সম্পর্কে বিভিন্ন ইতিহাসগ্রন্থ ও বাংলা অভিধান থেকে যা জানা যায়, এশিয়ায় প্রাচীনকালে গ্রহের প্রভাবের ধারণা হতে গ্রহসপ্তাহ হিসাবে সাতদিনের সপ্তাহের প্রচলন হয়েছে বলে অনুমান করা হয়। ঐ সময় ভ্রমাত্মকভাবে সূর্য, চন্দ্র, মঙ্গল, বুধ, বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিগ্রহ পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করতেছে বলে বিশ্বাস করা হতো। দেবতাদের নামানুসারেই গ্রহের নাম এবং কুন্সুট্যান্টাইন কর্তৃক খৃষ্টান সপ্তাহ প্রবর্তনের পরও পূর্বের নামগুলি রয়ে যায়। অধিকাংশ ভাষায়ই ল্যাটিন কিম্বা তার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ দেবদেবীর নামের অনুবাদ হতে দিবসসমূহের নাম গৃহীত।
ইংরেজী দিনগুলি (অধিকাংশই প্রাচীন জার্মান দেবদেবীর নামানুযায়ী) হলো- ডিয়েস্ সলিস (সান্স ডে) সানএড, ডিয়েস্ লুনা (মুন্স ডে) মান ডে, ডিয়েস্ মার্টিস (মার্স ডে), টিউমুডি (টিউস ডে), ডিয়েস্ মারকিউরি (মারকিউরিস ডে), ওয়েনেস ডে (উডান্স ডে), ডিয়েস্ জ্যেডিস (জোডস বা জুপিটাস ডে), থার্সডে (থরস ডে), ডিয়েস্ ভেনারিস (ভেনাস এস ডে), ফ্রাই ডে (ফ্রিগস ডে), ডিয়েস্ স্যাটার্নি, স্যাটার্ডে (স্যাডার্ন্স ডে)।
বাংলা দিবসসমূহের নাম হলো- রবি, সোম, মঙ্গল, বুধ, বৃহস্পতি, শুক্র ও শনি। অভিধানগুলোতে বারগুলোর বর্ণনায় যা আছে সে তথ্যসূত্র হতে প্রতিভাত হয় যে, আসলে দিবসগুলোর নাম হিন্দুদের ধ্যান-ধারণা হতে উৎপত্তি। হিন্দুরা তাদের পৌত্তলিক ধারণায় গ্রহের নামকরণ করত এবং উল্লিখিত দিনগুলোকে উক্ত গ্রহগুলোর জন্য পূঁজার বা ভোগদানের জন্য নির্দিষ্ট করে নিয়েছিল। বলা বাহুল্য মুসলমান হিসেবে এসব নামকরণের সাথে সম্পৃক্ত হওয়া মুসলমানিত্বের খিলাফ, ইসলামী অনুভূতি ও উপলব্ধির খিলাফ।
আর তাই মুসলমান হিসেবে সাপ্তাহিক বারের নামগুলো আরবীতে উচ্চারণ করাই যুক্তিযুক্ত। কেননা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ করেছেন, “তোমরা তিনটি কারণে আরবীকে মুহব্বত করো। আমি আরবী ভাষী, পবিত্র কুরআন শরীফ-এর ভাষা আরবী এবং জান্নাতীদের ভাষা হবে আরবী।”
তাছাড়া হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ হিজরী সন অনুযায়ী বছর, মাস ও বার গণনা করেছেন। যা আল্লাহ্ পাক-এর নিয়ামতের অন্তর্ভূক্ত। তাই হিজরী সন অনুযায়ী বছর, মাস ও বার গণনা করাই সুন্নত-এর অন্তর্ভূক্ত।
সপ্তাহের দিনগুলোর আরবী নাম উল্লেখ করা হলো-
ইয়াওমুল ইছনাইনিল আ’যীম (সোমবার)
ইয়াওমুছ ছুলাছায়ি (মঙ্গলবার)
ইয়াওমুল আরবিয়ারি (বুধবার)
ইয়াওমুল খামীস (বৃহস্পতিবার)
ইয়াওমুল জুমুয়াতি (শুক্রবার)
ইয়াওমুল সাবতি (শনিবার)
ইয়াওমুল আহাদি (রবিবার)
মহান আল্লাহ্ পাক ইরশাদ করেন, “হে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি (আমার বান্দা আপনার উম্মতদেরকে) জানিয়ে দিন যে, যদি তোমরা আল্লাহ্ পাককে মুহব্বত করতে চাও, তাহলে আমি রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পূর্ণ অনুসরণ-অনুকরণ তথা ইতায়াত করো।” (সূরা আল ইমরান ৩১)
উপরোক্ত আয়াত শরীফ-এর মাধ্যমে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ইতায়াত তথা অনুসরণ-অনুকরণ করার মাধ্যমেই বা সুন্নত পালনের দ্বারাই মহান আল্লাহ্ পাক-এর মুহব্বত-মা’রিফাত ও মাগফিরাত হাছিল করা সম্ভব।
এছাড়াও সাধারণভাবে আমরা বলে থাকি “বিসমিল্লায় গলদ”, “বিশ্ব ব্রহ্মান্ড”, “কষ্ট করলে কেষ্ট মিলে” ইত্যাদি। কিন্তু কখনও আমরা ভেবে দেখেছি কি এর মধ্যেই রয়েছে ঈমান হানীর কারণ। যেমন- আমরা শুরুতেই ভুল এই কথাটি প্রকাশ করতে গিয়ে বলে থাকি, “বিসমিল্লায় গলদ”। কিন্তু সূক্ষভাবে বিচার করলে এর অর্থ দাঁড়ায় “বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম-এ ভুল” অর্থাৎ কুরআন শরীফ-এ ভুল। (নাঊযুবিল্লাহ মিন যালিক) একইভাবে “বিশ্ব ব্রহ্মান্ড” শব্দটির মধ্যেও ঈমান হানীর ফাঁদ লুকায়িত রয়েছে। কেননা ব্রহ্মান্ড শব্দটি এসেছে ব্রহ্মার আন্ডা থেকে আর ব্রহ্মা বলতে হিন্দুদের একটি দেবতাকে বুঝায়। যেমন ব্রহ্মা সম্পর্কে বাংলা একাডেমী বিশ্বকোষে বলা হয়েছে,
ব্রহ্মা তিনজন প্রধান হিন্দু পৌরাণিক দেবতার অন্যতম “ইতি চতুর্ভূজ, চতুরানন ও রক্তবর্ণ।” তার প্রথমে ৫টি মস্তক ছিল। কিন্তু শিবের ৩য় নয়নের অগ্নিতে তার একটি মস্তক দগ্ধ হয়। তার বাহন হংস। সরস্বতী তার স্ত্রী। দেবসেনা ও দৈত্যসেনা তার দুই কন্যা। মরীচি, অত্রি, অঙ্গিরা, পলস্তা, পুলহ, ক্রত, বৈশিষ্ঠ, ভৃগু, দক্ষ ও নারদ, এই ১০জন প্রজাপতিকে ব্রহ্মা মন হতে সৃষ্টি করেন এবং এই প্রজাপতিগণ হতেই সকল প্রাণীর উদ্ভব হয়। অপরাপর নাম বিধাতা, পিতামহ, স্বয়ম্ভু, চতুর্মূখ, হিরণ্যগর্ভ। আর হিন্দুদের এই বিধাতার আন্ডা রূপে এই ভূমি তথা পৃথিবীকে কল্পনা করে ওরা বলে থাকে বিশ্ব ব্রহ্মান্ড।
“কষ্ট করলে কেষ্ট মিলে” এই প্রবাদটি মুসলমানরা হরহামেশাই ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু কোন মুসলমানই জানে না এই কেষ্ট হচ্ছে হিন্দুদের একটি দেবতার নাম।
বস্তুতঃ বিধর্মীদের এই বিভ্রান্তি ও ষড়যন্ত্র সম্পর্কে মহান আল্লাহ্ পাক প্রায় ১৫০০ বছর আগেই কুরআন শরীফ-এ জানিয়ে দিয়েছেন। যেমন মহান আল্লাহ্ পাক বলেন, “ইসলামের সবচেয়ে বড় শত্রু হচ্ছে ইহুদী ও মুশরিক।” (সূরা মায়িদা ৮২)
আল্লাহ্ পাক সকল মুসলমানদেরকে ইহুদী-মুশরিক তথা সকল বিধর্মীদের সকল প্রকার ফাঁদ হতে ঈমান হিফাজত করুণ এবং সকল মুসলমানদেরকে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্ নবিয়্যীন, হাবীবুল্লাহ্, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পুঙ্খানুপুঙ্খ-সূক্ষাতিসূক্ষ অনুসরণ-অনুকরণ করার তওফিক দান করুণ। (আমিন)
ধন্যবাদ তুষার ভাই। প্রথমত ধন্যবাদ এই জন্য যে এইবার এই পোষ্টে আপনি আপনার পীর সাহেবের পক্ষে সাফাই গাইতে আসেন নাই। আর দ্বিতীয়ত এই পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ। এ বিষয়ে আগেই আমার কিছু কিছু জানা ছিলো। এ সম্পর্কে একটি বই পড়েছিলাম “শব্দ সংস্কৃতির ছোবল” নামক একটি বইতে প্রায় ৯ বছর আগে। আমাদের আসলে এসকল বিষয়ে সতর্ক থাকা উচিৎ।
এ বিষয়ে আরো জানার জন্য কোন লিংক থাকলে দিতে পারেন। আর সুত্র গুলোও উল্লেখ করলে ভালো হয়।
তুষার ভাই, ধন্যবাদ, আপনাকে এই ব্লগে কেউ কেউ আপনার পীর সাহেব নিয়ে কিছু কিছু প্রশ্ন করেছেন , আপনি সেগুলোর উত্তর দিলে ভালো হতো ।